মাত্রই ইংলিশ পেসার ক্রিস ওকসের ফুলটসটাকে চার বানিয়ে নিউজিল্যান্ড দলকে তাদের প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনালে নিয়ে গিয়েছেন ড্যারেল মিশেল, যিনি কিনা এই বিশ্বকাপের আগে কখনও ওপেনিংই করেন নি! তিনি ছিলেন ‘দ্য অ্যাক্সিডেন্টাল ওপেনার’। হুট করেই টিম ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্তে দায়িত্ব নিয়েছেন।
আরো পড়ুন
- ঝড়ের ‘মিশেলে’ ফাইনালে নিউজিল্যান্ড
- দ্য ফাইনালিস্ট
- দ্য অ্যাক্সিডেন্টাল ওপেনার
- হার না মানা আগ্রাসী সৈনিক
- এক অন্য ‘পুরু’র গল্প
উদযাপনটা খুব স্বাভাবিক। বোলিং কোচ শেন বন্ড, প্রধান কোচ গ্যারি স্টিড, দীর্ঘদেহী স্পিডস্টার কাইল জেমিসনদের আজ উন্মত্ত উল্লাস করারই কথা।
অথচ, জিমি নিশামকে দেখুন। সেই জিমি নিশাম, যিনি ২০১৯ বিশ্বকাপ ফাইনালে সুপার ওভারে জোফরা আর্চারকে ছয় মেরেছিলেন বটে, কিন্তু জেতা হয়নি, অথবা অদ্ভুত এক নিয়ম তাদের জিততে দেয়নি, মূল ম্যাচে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক বাউন্ডারি নিয়ে প্রথমবারের শিরোপা জিতে ইংল্যান্ড, টানা দ্বিতীয়বারের মত ফাইনাল থেকে খালি হাতে ফেরে নিউজিল্যান্ড।
সেই ফাইনালের পর নিশাম উপদেশ দিয়েছিলেন, ‘Kids, don’t take up sport. Take up baking or something. Die at 60 really fat and happy.’ কতটা যন্ত্রনার আগুনে পুড়লে কেউ এমন বলেন!
সেই নিশাম যন্ত্রনার আগুনে পুড়ে আরো বেশি জ্বলে ওঠার শক্তি পেয়েছেন। তিনি মাত্র ম্যাচ ঘুরিয়ে দেয়া ১১ বলে ২৭ রানের ইনিংস খেলে ফিরেছেন। শেষ করতে পারেননি, তবে এতটুকু নিশ্চিত, তিনি না থাকলে নিউজিল্যান্ড জেতে না। নিশাম তাই ম্যাচ জিতে এক ফোটাও নড়েন না। মূর্তির মতো স্থির বসে থাকেন, যেন কিছুই হয়নি।
আর ওদিকে অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনকে দেখুন। উন্মত্ত উল্লাস নেই, এমনকি সিট থেকে উঠে সতীর্থদের জড়িয়ে ধরবেন, সেটুকুও নেই। আছে স্রেফ স্মিত এক টুকরো হাসি, শান্ত, ধীর, স্থির, যেন এ লোকের জন্মই ঋষি হবার জন্য!
অথচ, তার ম্যাজিকেই গত বিশ্বকাপের ফাইনালে নিউজিল্যান্ড, বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়ন এখন তারা এবং প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনালে। পৃথিবীর আর কোনো দলের এমন অর্জন নেই, যে তিন ফরম্যাটেই সেরা দুইয়ের এক দল!
অথচ ৫০ লক্ষ লোকের নিউজিল্যান্ডের আছে। ইয়ান স্মিথ নিশ্চয়ই আজ আনন্দে আছেন, তিনি অবশ্য ঠিক উইলিয়ামসনের উল্টোটা, চিৎকারে চিৎকারে গলা ভেঙে ফেলেননি, সেই নিশ্চয়তাও আমি দিতে পারছি না।