৯০ কোটি রুপি। ঠিক এত বড় অংকের অর্থের ঝনঝনানি নিয়ে আগামী বছরের জানুয়ারিতে বসতে চলেছে এক বিরাট বড় নিলাম। খেলোয়াড়দের নিলাম। জগদ্বিখ্যাত ফ্রাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট লিগ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) মেগা নিলাম বসতে চলেছে নতুন বছরের শুরুতেই। প্রায় ৯০০ কোটি রুপির লেনদেনের একটা জমজমাট নিলামের আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
তবে ইতোমধ্যেই বেশ সোড়গোল পড়ে গিয়েছে ভারতের ক্রিকেট অঙ্গনে। মেগা নিলামকে সামনে রেখে দলগুলো চারটি করে খেলোয়াড় রিটেইন বা ধরে রাখার অনুমতি পেয়েছিল। এতেই যেন সরগরম হয়েছে ভারতের আইপিএল সংশ্লিষ্ট সকল মহলে। কেননা বেশকিছু অপ্রত্যাশিত খেলোয়াড়দের ছেড়ে দিয়েছে ফ্রাঞ্চাইজিগুলো। তাঁদের মধ্যে লোকেশ রাহুল, যুজবেন্দ্র চাহাল, রশিদ খানের মতো খেলোয়াড়দের নামও রয়েছে।
তবে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে বর্তমানে অবস্থান করছেন গত মৌসুমে পাঞ্জাব কিংসের অধিনায়ক লোকেশ রাহুল। পাঞ্জাব কিংস কর্তৃপক্ষের মতে তাঁরা রাখতে চেয়েছিলেন লোকেশ রাহুলকে কিন্তু তিনি তাতে অস্বীকৃতি জানান। এ নিয়ে পাঞ্জাব কিংসের অন্যতম সত্ত্বাধিকারী নেস ওয়াদিয়া বলেন,‘আমরা রাহুলকে দলে রাখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সে বলেছে সে নিলামে যেতে চায়।’
স্বাভাবিকভাবেই রাহুলের মতো খেলোয়াড়রা চাইতেই পারেন নিলামে যেতে। কেননা তাঁদের মান অনুযায়ী তাঁরা বেশখানিকটা টাকা বেশি পেতেও পারেন নিজেদের বর্তমান পারিশ্রমিক থেকে। সেই প্রত্যাশায় নতুন দলে যাবার ইচ্ছে ততটা গুরুতর কোন অপরাধ না। তাছাড়া নতুন রোমাঞ্চের উদ্দেশ্যে কে না পাড়ি জমাতে চায় বলুন।
কিন্তু সমস্যা বাঁধে অন্য এক জায়গায়। আইপিএলে এবার যুক্ত হচ্ছে আরো দুই নতুন দল। যেহেতু খেলোয়াড় ধরে রাখার নিয়ম সকল দলের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য সেহেতু সেই নতুন দুই দল পূর্ববর্তী দলগুলোর ছেড়ে দেওয়া খেলোয়াড়দের নিজেদের দলে ভেড়ানোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। এমতবস্থায় লোকেশ রাহুলের সাথে নবাগত ফ্রাঞ্চাইজি লখনৌ কর্তৃপক্ষদের গোপন আলোচনার একটা গুঞ্জন উঠেছে। তাতেই খানিক চটেছেন কিংবা মনোক্ষুন্ন হয়েছেন পাঞ্জাব কিংস কর্তৃপক্ষ।
নেস ওয়াদিয়া মতে যদি লোকেশ রাহুল এমন কোন কাজ করে থাকেন তবে তা হবে নীতি বিরোধী। ওয়াদিয়া আরো বলেন, ‘আমি মনে করি এমন কিছু হবার কথা না, কেননা এটা বিসিসিআই-এর নীতিমালা বিরোধী।’
২০১০ সালে রবীন্দ্র জাদেজা একবছরের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছিলেন এমন নীতি বিরোধী কার্যকলাপের জন্যে। তিন তাঁর তৎকালীন দলের সাথে চুক্তিবদ্ধ অবস্থায় আরেক দলের সাথে আলাপচারিতা অব্যাহত রাখায় তিনি সেই নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন হয়েছিলেন। লোকেশ রাহুলের ক্ষেত্রেও হয়ত এমন কিছু একটা ঘটতে পারে যদি নিলামের আগেই তিনি লখনৌ ফ্রাঞ্চাইজির সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে যান।
পাঞ্জাব ফ্রাঞ্চাইজি এবার মাত্র দুইটি খেলোয়াড়কে রেখে দিতে পেরেছেন। ভারতের টেস্ট ওপেনার মায়াঙ্ক আগারওয়ালের সাথে আর্শদ্বীপ সিং-কে রেখে দিয়েছেন নেস ওয়াদিয়ার দল। এ নিয়ে উচ্ছ্বসিত ওয়াদিয়া বলেন, ‘আমরা মায়াঙ্ক এবং আর্শদ্বীপকে রেখে দিতে পেরে বেশ খুশি। মায়াঙ্ক আমাদের জন্য একজন খুবই গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় এবং সে দলের প্রতি অনুগত। তাছাড়া আর্শদ্বীপ আমাদের সাথে বিগত কয়েক বছর ধরেই রয়েছেন এবং আমাদের মনে হয় তিনি আরো উন্নতি করতে চলেছেন সময়ের সাথে। অদূর ভবিষ্যতে সে ভারত দলেও খেলবে আমি মনে করি।’
তবে সব জল্পনা-কল্পনা শেষে রাহুলের ভাগ্যে কি রয়েছে তা এখন এক অপেক্ষার বিষয়। ডিসেম্বরের ২৫ তারিখ অবধি অপেক্ষা করতে হবে তিনি কোন নতুন দলের সাথে চুক্তিবদ্ধ হচ্ছেন নাকি নিলাম অবধি সময় নেবেন নতুন দলে যাবার কিংবা পুরোনো দলে ফিরে আসার।