দেশের মাটিতে আরো একটি সিরিজ জিতল ভারত। ব্যবধান ১-০’র, দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে। প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড, যাদের বিপক্ষে হেরে টেস্ট চ্যাাম্পিয়নশিপের স্বপ্ন খোয়া গিয়েছিল ভারতের। তবে, দেশের মাটিতে তো ভারত বরাবরই বাঘ। ভারতের মাটিতে ১২ টি টেস্ট সিরিজ খেলে কখনোই জয়ের মুখ দেখেনি নিউজিল্যান্ড। এমনকি দেশটিতে সর্বশেষ টেস্ট জয়ের মুখ তাঁরা দেখেছে সেই ১৯৮৮ সালে।
ফলে, এমন ফলাফলটা যেন নিয়তিই ছিল। মুম্বাই টেস্টে ভারতের জয়টা ছিলো সময়ের ব্যাপার মাত্র। চতুর্থ দিনে লাঞ্চ বিরতির আগেই গুড়িয়ে যায় নিউজিল্যান্ডের শেষ ৫ উইকেট। আর নিউজিল্যান্ডকে ৩৭২ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়ে ১-০ তে সিরিজ জিতে নিলো স্বাগতিক ভারত। দেশের মাটিতে এটা রানের দিক থেকে ভারতের সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জয়। এখানেই শেষ নয় – এই নিয়ে দেশের মাটিতে টানা ১৪ টি টেস্ট সিরিজ জিতল ভারত।
আগের দিনের ৫ উইকেটে ১৪০ রান নিয়ে খেলতে নেমে চতুর্থ দিনে জয়ন্ত যাদবের ঘূর্নিতে মাত্র ২৭ রানেই শেষ নিউজিল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংস। চতুর্থ দিনে অশ্বিন ১ ও জয়ন্ত একাই শিকার করেন তিন উইকেট। হেনরি নিকোলসের ৪৪ রানের পর কেউ আর ভীত গড়তে পারেননি।
আগের টেস্টের নায়ক রাচিন রবীন্দ্র ১৮ রান করলেও খুব বেশি সময় থিতু হতে পারেননি তিনিও। শেষ পর্যন্ত মাত্র ১৬৭ রানেই থামে নিউজিল্যান্ডের ইনিংস। ৩৭২ রানের বড় জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ভারত।
এর আগে টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে মায়াঙ্ক আগারওয়ালের দেড়শোতে প্রথম ইনিংসে ৩২৫ রান সংগ্রহ করে ভারত। নিউজিল্যান্ডের পক্ষে আজাজ প্যাটেল একাই শিকার করেন ১০ উইকেট। জিম লেকার, অনিল কুম্বলের পর তৃতীয় বোলার হিসেবে এই কীর্তি গড়েন আজাজ।
এরপর নিজেদের প্রথম ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও মোহাম্মদ সিরাজের দাপুটে বোলিংয়ে মাত্র ৬২ রানেই গুড়িয়ে যায় সফরকারীরা। ভারতের মাটিতে এবং ভারতের বিপক্ষে এটি ছিলো টেস্টে যেকোনো দলের সর্বনিম্ন স্কোর।
২৬৩ রানে এগিয়ে থেকে ব্যাট করতে নেমে দ্বিতীয় ইনিংসেও আগারওয়ালের ফিফটিতে ৭ উইকেটে ২৭৬ রানে ইনিংস ঘোষণা করে ভারত। দ্বিতীয় ইনিংসেও আজাজ শিকার করেন ৪ উইকেট। ৫৪০ রানের বিশাল লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে নেমে অশ্বিনের ম্যাজিকেল ঘূর্ণিতে মাত্র ১৬৭ রানেই গুড়িয়ে যায় সফরকারীরা। মুম্বাই টেস্টে জয়ে ১-০ তে সিরিজ জিতে নেয় ভারত।
ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন মায়াঙ্ক আগারওয়াল। সিরিজ সেরা নির্বাচিত হন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। দুই ইনিংস মিলে ১৪ উইকেট নেওয়া আজাজ প্যাটেল বল হাতে স্মরণীয় সময় কাটালেও ছিলেন পুরস্কারশূন্য।
- সংক্ষিপ্ত স্কোর
টস: ভারত
ভারত (প্রথম ইনিংস) – ৩২৫/১০ (১০৯.৫ ওভার); আগারওয়াল ১৫০(৩১১), অক্ষর ৫২(১২৮), গিল ৪৪(৭১); আজাজ ৪৭.৫-১২-১১৯-১০।
ও দ্বিতীয় ইনিংস – ২৭৬/৭ (৭০ ওভার); আগারওয়াল ১০৮(৬২), পুজারা ৪৭(৫১), গিল ৪৭(৭৫), অক্ষর ৪১(২৬); আজাজ ২৬-৩-১০৬-৪, রাচিন ১৩-২-৫৬-৩।
নিউজিল্যান্ড (প্রথম ইনিংস) – ৬২/১০ (২৮.১ ওভার); জেমিসন ১৭(৩৬), ল্যাথাম ১০(১৪); অশ্বিন ৮-২-৮-৪, সিরাজ ৪-০-১৯-৩, অক্ষর ৯.১-৩-১৪-২, জয়ন্ত যাদব ২-০-১৩-১।
ও দ্বিতীয় ইনিংস – ১৬৭/১০ (৫৬.৩ ওভার); মিশেল ৬০(৯৬), নিকোলস ৪৪(১১১), রাচিন ১৮ (৫০); অশ্বিন ২২.৩-৯-৩৪-৪, জয়ন্ত ১৪-৪-৪৯-৪, প্যাটেল ১০-০-৪২-১।
ফলাফল: ভারত ৩৭২ রানে জয়ী।
ম্যাচ সেরা: মায়াঙ্ক আগারওয়াল (ভারত)।
সিরিজ সেরা: রবীন্দ্র জাদেজা (ভারত)।