বন্ধুত্ব তখনও ছিল, এখনও আছে

বিরাট কোহলি ও রোহিত শর্মা – শুধু ভারতীয় ক্রিকেটের নয়, বিশ্ব ক্রিকেটের সেরা দুই ব্যাটার। বিরাটকে সরিয়ে রোহিতকে ওয়ানডে অধিনায়ক করা হয়েছে। আমি নিজে বিরাটের পাগল ফ্যান। তবে তাই বলে কোনওদিন রোহিতের ক্ষমতাকে অস্বীকার করিনি এবং মানিও যে নিজের দিনে ক্রিজে রোহিতের চেয়ে ভয়ঙ্কর কেউ নয়।

আমি নিজে কিছু বলছি না। বিভিন্ন সময়ে বিরাট -রোহিতই বলেছে। ২০০৭ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সময় রোহিত তখন ভারতীয় দলে। বিরাট তখনও চান্সই পায়নি। অথচ একবারও বলতে দ্বিধাবোধ করেনা যে সেই সময়েও রোহিতের ব্যাটিং সে এক জায়গাতে বসে দেখতো, বল ফেস করার সময় রোহিতের কাছে অন্যদের তুলনায় কিছু সময় বেশি থাকে (যদিও এটা আমারও ব্যক্তিগত মতামত, না হলে ওরকম ফ্রন্টফুটে পুলে ছয় মারা যায় না)। রোহিত কিছুদিন আগেও বলেছে, টিমে বিরাটের অবদান অনস্বীকার্য, ওর অ্যাগ্রেসিভ অ্যাটিটিউড টিমে আলাদাই মাত্রা এনে দেয়।

বিশ্বাস করুন, ওদের দুজনের মধ্যে সত্যিই কোনো শত্রুতা নেই। হ্যাঁ এটা ঠিক রোহিত পাঁচটি ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) ট্রফি জিতিয়েছে আর বিরাটের ট্রফি ক্যাবিনেট তো ফাঁকা। বিরাটের অতি বড়ো হেটার্সও কোনওদিন টেস্টে ওর অস্বাভাবিক ক্যাপ্টেন্সি রেকর্ডকে ভুলতে পারবে না।

আমি বিরাট ফ্যান হয়ে তো আজ বলতেই পারি যে যদি পরের ২ বছরের ২টো বিশ্বকাপে ভারত না যেতে তাহলে আর কি লাভ হলো রোহিতকে ক্যাপ্টেন করে, রোহিত শুধু আইপিএলই জেতাতে পারে। ব্যাপারটা আসলে কিছুই নয়, দুজনের অগুনিত ভক্তের মধ্যে রেষারেষি; কে বেশি ভালো, কে কম খারাপ। আমার পরিচিত যে কজন বন্ধু সত্যি খেলাটা বোঝে তাদের মধ্যে রোহিত-বিরাট ফ্যান সবাই আছে।

আমাদের মধ্যে কিন্তু এই নিয়ে ঝামেলাটা হয় না। যারা শুধুমাত্র ক্রিকেটবাজে রিফ্রেশ করে করে স্কোরবোর্ডে পরিবর্তন দেখে তারা আর যাই হোক টেস্ট ক্রিকেট ধৈর্য ধরে দেখে প্রতিটা বলে রানের জন্য পরিশ্রমটা বুঝবে না। তবে এতেই শেষ নয়, আগুনে ঘৃতাহুতি দেওয়ার কাজটা করে মিডিয়া। যাদের কাজই হলো একটু চটকদার খবর ফলাও করে প্রচার করে নিজেদের রেটিং বাড়ানো।

বিরাট-রোহিতদের এসব দেখার সময়ও থাকে না আর ওরা পাত্তাও দেয় না এসবের| সাদা বলের প্রথম উইকেটটা পড়ার পর ওদের দুজনের পার্টনারশিপ দেখার আলাদাই উত্তেজনা থাকে। পরিসংখ্যানই বলে দেয়, ওয়ানডেতে বিরাট-রোহিত জুটি মাত্র ৮১ ইনিংসে ৬৪.৫ গড়ে ৪৯০৬ রান করেছে যার মধ্যে পাঁচটি ২০০+ রানের পার্টনারশিপ যা সবচেয়ে বেশি। দুজনের মধ্যে সবসময়ই একটা সুস্থ প্রতিযোগিতা চলে যা আসলে ভারতীয় ক্রিকেটের জন্য ভালো।

সবশেষে বলি, ওরা দুজন সেদিন যেমন বন্ধু ছিল, আজও আছে। ওরা দুজনেই ভারতীয় ক্রিকেটকে অন্যমাত্রায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে প্রতিনিয়ত। আমাদের মতো ক্রিকেটপাগলদের উচিৎ তো সমালোচনা না করে ওদেরকে আরো বেশি করে সমর্থন করা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link