ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ, অন্যতম জাঁকজমকপূর্ণ একটি ফ্রাঞ্চাইজ ভিত্তিক টি-টোয়েন্টি লিগ। ২০০৮ সাল থেকে ধারাবাহিকতা বজায় রাখায় ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ পেয়েছে বিশ্বব্যাপী মর্যাদা, আকর্ষণ এবং গুরুত্ব৷ তাইতো আইপিএল চলাকালীন সময়ে বিশ্বক্রিকেটের বড় দলগুলো দ্বিপাক্ষিক সিরিজ আয়োজন থেকে দূরে সড়ে আসে। যাতে করে তাদের খেলোয়াড়দের দ্বিধাদ্বন্দে না ভুগতে হয়। তাছাড়া ক্রিকেট দুনিয়ার নানন্দিক সব খেলোয়াড়দের মিলনমেলা আইপিএল।
বিশাল রান তাড়া করে জিততে পারার উত্তেজনা, উৎকন্ঠা এবং বিনোদনের কথা মাথায় রেখে আইপিএল কর্তৃপক্ষ সর্বদা চেষ্টা করে একটি স্পোর্টিং উইকেট তৈরি করতে। যাতে করে দেখা যায়। বোলারদের তুলনায় ব্যাটাররা অধিক সুবিধা পায় পিচ থেকে এবং নিজেদের ব্যাটিং সামর্থ্যের প্রমাণস্বরূপ রান তোলে পাহাড়সমান৷ বোলারদের নিজেদের স্কিল, মানসিক দৃঢ়তা বাড়িয়েই তবে আসতে হয় আইপিএলের মঞ্চে।
তবে ব্যাটারদের এত সুবিধার পরও মাঝেসাঝেই ব্যাটাররা দৃষ্টিকটুভাবে আউট হয়ে যান। তাছাড়া শূন্য রানে ফেরার দৃষ্টান্তও নেহাৎ কম নয়। বোলারদের অবদান তো নিশ্চয়ই থাকে। কিন্তু কোনকোন সময় দেখা যায় ব্যাটাররা দ্রুত রান তোলার তাগিদে শূন্যে রানে সাঁজঘরে ফেরেন। আইপিএলের আরো একটি আসর বসতে চলেছে আগামী বছরে৷ আইপিএলের এ এযাবৎকালের ইতিহাসে সর্বাধিকবার শূন্যরানে ফেরা ব্যাটারদের রেকর্ড নিয়ে আলোচনা হতে পারে মুখরোচক। বলাই বাহুল্য, তাঁরা সবাই ভারতীয়।
- আম্বাতি রাইডু
নিজের আইপিএল ক্যারিয়ারে আম্বাতি রাইডু খেলেছেন দুইটি দলের হয়ে। একটি মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স, অন্যটি চেন্নাই সুপার কিংস। দুই দলের হয়েই পারফর্মেন্সের ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছিলেন রাইডু। সচারাচর তাঁকে দেখা যেতো একজন ফিনিশার রুপেই।
সুতরাং দ্রুত রান তোলার একটা তাড়া তাঁর মধ্যে সবসময়ই কাজ করতো। কেননা দল তাঁর কাছ থেকে বিশেষ মুহূর্তে তেমন পারফর্মেন্সই প্রত্যাশা করতো। সুতরাং দলের প্রয়োজনে দ্রুত ব্যাট চালাতে গিয়ে নিজের ক্যারিয়ারে ১৩ বার ফিরেছিলেন শূন্যহাতে। তবে ধারাবাহিক এই ব্যাটার দীর্ঘ একযুগের আইপিএল ক্যারিয়ারে ২৯.৪৪ গড়ে রান করেছেন ৩৯১৬।
- আজিঙ্কা রাহানে
শুরুর বছর গুলোতে আলো ছড়ালেও, আজিঙ্কা রাহানের সেই আলো ধীরেধীরে ফিঁকে হতে শুরু করে। রাজস্থান রয়েলসের হয়ে নিজের আইপিএল ক্যারিয়ার শুরু করা রাহানে গত মৌসুমে ছিলেন দিল্লি ক্যাপিটালসে।
নিজের খারাপ পারফর্মেন্সের জন্যে ঠিকঠাক একাদশেও জায়গা না পাওয়া রাহানের ঝুলিতে রয়েছে ১৩ খানা ডাকের রেকর্ড। আইপিএলে ১৪১টি ইনিংস খেলা রাহানে বর্তমানে বেশ দুশ্চিন্তায় রয়েছেন জাতীয় টেস্ট দলে নিজের জায়গা নিয়ে। সম্ভাবনা রয়েছে সাদা জার্সি তুলে রাখার।
- পার্থিব প্যাটেল
ভারত জাতীয় দলের সাবেক উইকেট-কিপার ব্যাটার পার্দিব প্যাটেল আইপিএলের ১২টি মৌসুমে অংশ নিয়ে খেলেছেন ছয়টি ভিন্ন ফ্রাঞ্চাইজির হয়ে। নিজের আইপিএল ক্যারিয়ারে ১৩৯ ম্যাচ খেলেছেন পার্দিব। ব্যাট হাতে যখনই সুযোগ পেয়েছেন তখনি দলের প্রয়োজনে অবদান রাখতে সচেষ্ট ছিলেন পার্দিব।
তাছাড়া ২২.৬০ গড়ে ১২০ এর ঘরের স্ট্রাইকরেটে ব্যাট করতে পারতেন পার্দিব এবং পাওয়ারপ্লেতে বেশ কার্যকরী ব্যাটার স্রোতের বিপরীতে শূন্যরানে সাঁজঘরের পথ ধরেছিলেন ১৩ বার। বর্তমান খেলোয়াড়ী পাট চুকিয়ে তিনি মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স ফ্রাঞ্চাইজির সাথে যুক্ত আছেন।
- হরভজন সিং
প্রায়সই শোনা যাচ্ছে খেলোয়াড় জীবনের ইতি টেনে হরভজন সিং মনোযোগ দিবেন কোচিং ক্যারিয়ারে। সে ক্যারিয়ারের সূত্রপাতও ঘটতে পারে আইপিএল থেকে। সেক্ষেত্রে তাঁর সম্ভাব্য ফ্রাঞ্চাইজি হতে পারে কোলকাতা নাইট রাইডার্স, মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স কিংবা চেন্নাই সুপার কিংস। কিন্তু ভারতীয় অভিজ্ঞ এই স্পিনারকে বল হাতে আরো একবার দেখা যেতে পারে আইপিএলে।
কেননা তাঁর বোলিং সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন করবার সুযোগ বেশ কম। তাছাড়া ব্যাটটাও ঠিকঠাক করে নিতে পারেন তিনি। তবে তাঁর ব্যাটিং ক্যারিয়ার খুব বেশি সমৃদ্ধ নয় টেল এন্ডার ছিলেন বলে৷ তার পাশপাশি ৯০ ইনিংসে ১৩টি ডাক মারার রেকর্ডও রয়েছে। সুতরাং তাঁকে আরো একটি মৌসুম খেলোয়াড় হিসেবে খেলতে দেখার সম্ভাবনা অত্যন্ত ক্ষীণ।