দীর্ঘ বিরতির পর আবার ক্রিকেটের ময়দানে ফিরেছেন ইংল্যান্ডের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার বেন স্টোকস। যার হাত ধরে ইংল্যান্ড পেয়েছিলো প্রথম ওয়ানডে বিশ্বকাপের স্বাদ সেই স্টোকস সুদীর্ঘ ছয় মাসের বিরতি কাটিয়ে ফিরেছেন সবচেয়ে মর্যাদার টেস্ট সিরিজ অ্যাশেজ দিয়ে। ২০১৯ সালের নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ইংল্যান্ডের নাটকীয় জয়ের নায়ক স্টোকস আঙুলের ইনজুরি ও মানসিক স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে ছিলেন ক্রিকেট থেকে দূরে।
অ্যাশেজ সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে প্রত্যাবর্তন হয়েছে তাঁর। সেখানে নিজের ফিটনেসের প্রমাণ রেখেছেন স্টোকস। ইংল্যান্ড বোলিং আক্রমণের ১৫০ ওভারের মধ্যে তাঁর ছিলো ২৫টি ওভার। তার মধ্যে ১১৩ রান দিয়ে স্টোকস তুলে নিয়েছেন তিনটি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট। প্রথম দুই দিনেও অস্ট্রেলিয়াকে অলআউট করতে ব্যর্থ হয়েছে ইংল্যান্ড। পক্ষান্তরে অস্ট্রেলিয়া মার্নাস লাবুশেন, ডেভিড ওয়ার্নারদের ব্যাটে ভর করে পাহাড়সম ৪৭৩ রান। এরপর অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ ইনিংস ডিক্লেয়ার করেন।
ইংল্যান্ড তাঁদের প্রথম ইনিংসে মাত্র ৮৪ ওভার ব্যাট করে অলআউট হয় ২৩৬ রানে। যেখানে ব্যাট হাতে স্টোকস করেছিলেন ৩৪ রান। নিজেদের বোলিং আক্রমণের প্রথম দুইদিনে ব্যর্থতা সম্পর্কে স্টোকস বলেন, ‘প্রথম দুইদিন বেশ কঠিন ছিলো আমাদের জন্যে। তবে এটা কখনো একটা আদর্শ পরিস্থিতি ছিল না। তবুও যত ম্যাচ গড়াতে থাকবে এবং আপনি বুঝতে শুরু করবেন আপনি কিসের জন্যে খেলছেন তখন আপনি আপনার গায়ে লেগে থাকা ধুলাকে ভালবাসতে বাধ্য।’
যদিও নিজেদের ব্যাটিং এও ব্যর্থ হয়েছ ইংল্যান্ডের ব্যাটিং ইউনিট। তবুও স্টোকস দীর্ঘ বিরতির পর তাঁর প্রত্যাবর্তনের প্রতিটি মুহূর্তই নাকি উপভোগ করেছেন। এমনটাই জানিয়েছেন এই অলরাউন্ডার। তিনি আরো বলেন, ‘ আমি প্রায় প্রতিটা মুহূর্ত উপভোগ করেছি। একজন ক্রিকেটার হিসেবে ইংল্যান্ড ক্রিকেটের জার্সি গায়ে জড়িয়ে ক্রিকেট ময়দানে নামা এক অদ্ভুত অনুভূতি।’ নিজের অনুভূতি প্রকাশ করা ছাড়াও নিজেদের প্রথম ইনিংসের বোলিং আক্রমণের স্বপক্ষেও যুক্তি দাঁড় করিয়েছেন স্টোকস।
তিনি মনে করেন প্রথম ইনিংসে দেওয়া ইংলিশ বোলারদের অতিরিক্ত বাউন্স তাঁদের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বেশ কিছু উইকেট শিকারের সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে। তিনি বলেন, ‘ব্যাটারদের জন্যে একটা আলাদা পরিবেশ সৃষ্টিই উদ্দেশ্যে ছিল আমাদের।’ পরিকল্পনা মাফিক ইনিংসের শুরুতেই বেশকিছু উইকেট তুলে নেওয়ার পরিকল্পনা থেকেই ইংল্যান্ড ওমন শর্ট বলের মহরা দিয়েছিল।
স্টোকস ইনিংসের শুরুতে করা শর্ট বল সম্পর্কে আরো বলেন, ‘এটা একটু দেখতে দৃষ্টিকটু লাগে যখন আপনি দৌড়ে যাচ্ছেন আর ১১ ওভার যাবৎ শর্ট বল করে যাচ্ছেন। কিন্তু শুরুর দিকের স্পেলে বেশ কয়েকবার উইকেট শিকারের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল।’
যদিও শুরু দিকে খুব বেশি সাফল্যের দেখা পায়নি ইংল্যান্ড। অস্ট্রেলিয়ার প্রথম উইকেটের পতনের পর ওয়ার্নার আর লাবুশেনের জুঁটিতে ভর করে অস্ট্রেলিয়া ছোটে বিশাল রানের দিকে।
অ্যাশেজের বর্তমান শিরোপা দখলে রয়েছে অস্ট্রেলিয়ার। পাঁচ ম্যাচ সিরিজের প্রথম ম্যাচও অস্ট্রেলিয়া জিতেছে বেশ বড় ব্যবধানেই। দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে পাঁচশত ছোঁয়া রানের পর মাত্র ২৩৬ রানে ইংল্যান্ডকে আটকে ফেলার সুবাদে। দ্বিতীয় টেস্টেও চালকের আসনে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া। দ্বিতীয় ইনিংসে ৪৫ রানে এক উইকেট হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। যার ফলে তাঁদের লিড গিয়ে দাঁড়িয়েছে ২৮২ রানে। পরিস্থিতি অনুযায়ী এই টেস্টেও ইংল্যান্ডের হেরে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। তবে নিজের দীর্ঘ বিরতির পর প্রত্যাবর্তনের ম্যাচে বেন স্টোকস নিশ্চয়ই কিছু একটা করে দেখাতে চাইবে।