টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে একসময় তাঁকে বড় সম্পদ ভাবা হতো। স্পিন বোলিং আক্রমণের বড় ভরসা হয়ে উঠেছিলেন নাজমুল হোসেন অপু। জনপ্রিয় হয়েছিল তাঁর নাগিন সেলিব্রেশনও। তবে এরপর ধীরে ধীরে হারিয়ে যেতে শুরু করলেন এই স্পিনার। নাসুম আহমেদ, শেখ মেহেদী হাসানদের কাছে নিজের জায়গা হারিয়েছেন। নিজের ক্যারিয়ারটাকে একটা ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছিলেন।
বাংলাদেশের হয়ে যতটুকু আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেছেন, তাতে যতটা না খ্যাতি ছিল বোলিংয়ের জন্য, তার চেয়ে বেশি আলোচিত ছিলেন নিজের বিচিত্র উদযাপনের জন্য। তবে আজ অপুকে দেখা গেল ভিন্ন এক উদযাপন করতে। নাগিন ডান্সকে সরিয়ে অপু হয়ে উঠলেন ভারতীয় চলচ্চিত্র ‘পুষ্পা’র আল্লু অর্জুন। দেখা গেল নিজের দাড়িতে হাত বুলিয়ে এই নায়কের মত ভঙ্গি করতে। যেনো নাগিন থেকে পুষ্পার আল্লু অর্জুন হয়ে উঠলেন নাজমুল হোসেন অপু।
পুষ্পা: দ্য রাইজ সিনেমাতে আল্লু আর্জুনও এক ধ্বংসস্তূপ থেকে উঠে এসে হিরো বনেছেন। অপুর ক্যারিয়ারও এখনো তেমনই এক ধ্বংসস্তুপে দাঁড়িয়ে। এখান থেকে তিনিও কি আল্লু অর্জুনের মত হিরো হয়ে উঠতে পারেন কিনা সেটা সময়ই বলে দিবে। আজ অবশ্য তিন উইকেট নিয়ে সেই ইঙ্গিতই দিয়েছে এই স্পিনার।
আজ তাঁর দল হারলেও অপুর ঘুর্ণিতে বেশ ভুগতে হয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে। ৯৬ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমেও জমে উঠেছিল ম্যাচ। ওদিকে মিরপুরের উইকেটে স্পিনাররা সবসময়ই বাড়তি সুবিধা পেয়ে থাকেন। এবারের বিপিএলেও দেখা যাচ্ছে একই চিত্র। স্পিনারদের ঘূর্নিতে দিশেহারা ব্যাটসম্যানরা। ফাফ ডু প্লেসিসের মত ব্যাটসম্যানরাও মিরপুরের উইকেটে থিতু হতে হিমসিম খাচ্ছেন। এবার বিপিএলে অবশ্য এখন পর্যন্ত লোকার বোলারদেরই জয়জয়কার।
বাংলাদেশের স্পিনাররা মিরপুরের উইকেটে ভালো করবেন এটাই স্বাভাবিক। তবে এখন পর্যন্ত বিপিএলে দেখা গেছে খানিক ভিন্ন চিত্রও। বাংলাদেশের পেসাররাও ভোগাচ্ছেন ব্যাটসম্যানদের। সবমিলিয়ে বিপিএলে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে সফল বাংলাদেশের লোকার বোলাররাই।
আজ দিনের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ও সিলেট সানরাইজার্সের। এই ম্যাচেও দেখা গেল একইরকম চিত্র। বাংলাদেশের সব স্পিনাররাই মোটামুটি সফল হয়েছেন। আগে ব্যাট করতে নাম সিলেটকে মাত্র ৯৬ রানেই অল আউট করে দিয়েছিল কুমিল্লা। সেখানে কুমিল্লা তাঁদের সাতজন বোলারকে ব্যবহার করেছে। আর লোকাল বোলাররাই নিয়েছেন আট উইকেট।
শুধু স্পিনাররা উইকেট নিচ্ছেন তাই নয়। বাংলাদেশের বাঁ-হাতি পেসার মুস্তাফিজুর রহমানও নিয়েছেন ২ উইকেট। এছাড়া পার্ট টাইম বোলার মুমিনুল হকও নিয়েছেন ১ টি উইকেট। ওদিকে পরে কুমিল্লা ব্যাট করতে নামলেও দাপট দেখায় লোকাল বোলররা।
অনেকদিন ধরে জাতীয় দলের বাইরে থাকা সোহাগ গাজী ফিরিয়েছেন ফাফ ডু প্লেসিসকে। এক সময়ের জাতীয় দলের তারকা এই স্পিনারও নিয়েছেন দু’টি উইকেট। এছাড়া সিলেটের অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেনও নিয়েছেন ২ টি উইকেট। ওদিকে বাংলাদেশের পেসার তাসকিন আহমেদও দারুণ বোলিং করেছেন। তাঁর ঝুলিতেও আছে এক উইকেট।
শুধু এই ম্যাচেই নয়, এর আগে বিপিএলের প্রথম ম্যাচে চট্টগ্রামের অধিনায়ক মিরাজও নিয়েছেন চার উইকেট। এছাড়া রাতের ম্যাচে স্পিনারদের পাশাপাশি পেসাররাও দারুণ বোলিং করেছেন। নিউজিল্যান্ডে বাংলাদেশকে টেস্ট জয় এনে দেয়া এবাদত হোসেনও নিয়েছিলেন দুই উইকেট।