ছোট্ট একটা স্বপ্নপূরণ

সেটা ২০০০ সালের কথা। ইতিহাসের প্রথম টেস্ট খেলতে নেমেছে বাংলাদেশ। পদে পদে তৈরি হচ্ছে ইতিহাস। কিংবদন্তীদের পাশে লড়াই করছে বাংলাদেশ।

শচীন টেন্ডুলকার ও মুরালি কার্তিকের একটা জুটি জমে উঠেছে। নাঈমুর রহমান দূর্জয় ফেরালেন দু জনকেই। সেটা ব্যাপার না। ব্যাপার হলো, সেই দুটি বলে ক্যাচ ধরলেন বাংলাদেশের একাদশেই না থাকা এক কিশোর। সকলের প্রশ্ন-কে এই কিশোর ফিল্ডার।

হ্যাঁ, সেদিনের সেই কিশোর হলেন রাজিন সালেহ।

এরপর রাজিন বড় হয়েছে, জাতীয় দলে খেলেছেন। অল্প সময়ের জন্য অধিনায়কত্বও করেছেন। একটা আফসোস নিয়েই ক্রিকেট ক্যারিয়ার শেষ করেছেন। কিন্তু একটা ব্যাপার এখনও সত্যি রয়ে গেছে, আজও মনে হয় দেশের ইতিহাসের সেরা ফিল্ডার ছিলেন রাজিন। আর সেই রাজিনকেই এবার দেখা যাবে জাতীয় দলের সাফে।

আফগানিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের জন্য জাতীয় দলের ফিল্ডিং কোচ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে রাজিনকে। এই খবরটা বিসিবি আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও জানায়নি। তবে রাজিন খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে বললেন, এটা তার জন্য অনেকটা স্বপ্নপূরণের মত ব্যাপার।

রাজিনের কাছে ফিল্ডিং সবসময়ই আলাদা একটা ব্যাপার। তাই জাতীয় দলের ফিল্ডিং কোচ হওয়ার আকাঙ্খা আগেই জানিয়েছিলেন, ‘কোচ হওয়ার পর থেকে তো বাচ্চাদের ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং; সব নিয়েই কাজ করি। তবে আলাদা একটা লক্ষ্য ছিলো জাতীয় দলের ফিল্ডিং নিয়ে কাজ করতে পারলে সেটা একটা স্বপ্নপূরণের মত ব্যাপার হবে। জাতীয় দলের সাথে আবার ফিরতে পারাটা দারুন ব্যাপার।’

ফিল্ডার হিসেবে রাজিনের যে সুনাম ছিলো, সেটা তিনি তার এই সময়ের সতীর্থদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে চান। এ জন্য কৌশলটা সহজ বলেই মনে করেন রাজিন, ‘আমি ফিল্ডিংটা খু্ উপভোগ করতাম। আসলে ফিল্ডিং এমন একটা ব্যাপার, আপনি যত উপভোগ করবেন, ততই ভালো করবেন। কাজটা আপনাকে এনজয় করাতে হবে। আমি তো সবাইকে রাতারাতি ভালো ফিল্ডার বানিয়ে ফেলতে পারবো না। আমি এই উপভোগ করার ব্যাপারটা ছড়িয়ে দিতে পারি। যাতে সবাই মজা নিয়ে ফিল্ডিং করে।’

রাজিনের একটা চ্যালেঞ্জও আছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ দল বিভিন্ন খেলায় ক্যাচিংয়ে খুব খারাপ করছে। প্রায় প্রত্যেক ম্যাচেই দৃষ্টিকটূ ক্যাচ পড়ছে ফিল্ডারদের হাতে। রাজিন দায়িত্ব নিলে এই দিকটা নিয়েও তাকে কাজ করতে হবে। তবে রাজিন এটা নিয়ে চাপ নিচ্ছেন না, এটাকে তিনি চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন।

তিনি বলছিলেন, ‘দেখেন, আমার হাতে তো সময় বেশি না। দুটো সিরিজে কাজ করবো। আর সিরিজ চলা অবস্থায়, স্কিল নিয়ে খুব একটা কাজ করার সুযোগ থাকে না। তারপরও আমার মনে হয়, আমি যদি ওদের সাথে আলাদা করে একটু কথা বলতে পারি, ওরা কাজটা আরও ভালোবাসা নিয়ে করবে। এটা আসলে আমার জন্য একটা চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছি আমি।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link