রণে ফেরা রানা

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গেল বছর জুলাইতে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি অভিষেক। জাতীয় দলের জার্সি গায়ে তিন ম্যাচেই ব্যাট হাতে ছিলেন ব্যর্থ এরপর অবশ্য আর সুযোগ পাননি নিতিশ রানা। তবে উঠে এসেছিলেন ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) অসাধারণ পারফরম্যান্স দেখিয়ে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে জাতীয় দলে নিয়মিত মুখ হবার সম্ভাবনাও ছিল কিন্তু হঠাৎ ছন্দপতন। আইপিএলে টানা ১৯ ম্যাচে দেখা নেই ফিফটির। কলকাতা নাইট রাইডার্সের টপ অর্ডারে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছন ধারাবাহিকভাবে।

তবে আবার যেন আশা হয়ে দেখা দিয়েছেন রানা। সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের বিপক্ষে গেল ম্যাচে দেখা পেয়েছেন ফিফটির। ১৯ ম্যাচ পর আইপিএলে ফিফটির দেখা পেলেন কলকাতার এই তারকা।

৩১ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে তখন কলকাতা। ব্যাট হাতে বাজে বেশ সময় পার করছিলেন রানা। কিন্তু দলের চরম বিপর্যয়ে আবার হাসলো তাঁর ব্যাট। ৩৬ বলে ২ ছক্কা ও ৬ চারে ৫৪ রানের ঝড়ো ইনিংসে দিলেন ফর্মে ফেরার ইঙ্গিত। রানার ৫৪ ও আন্দ্রে রাসেলের ২৫ বলে ৪৯ রানের ক্যামিওতে ৮ উইকেটে ১৭৫ রান সংগ্রহ করে কলকাতা। কিন্তু রাহুল ত্রিপাঠি ও মার্করাম ঝড়ে পরাজয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে নিতিশ রানার কলকাতা।

চলতি আসরের প্রথম পাঁচ ম্যাচে মাত্র ১৪ গড়ে করেছিলেন ৬৯ রান! এমন হতশ্রী পারফরম্যান্সে রানার দলে থাকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেন সমর্থকরা। গেল আসরের প্রথম চার ম্যাচে দেখা পেয়েছিলেন দুই ফিফটির। এরপর থেকে ফিফটির দেখা নেই, বিশ-ত্রিশের ঘরে যেতে পারলেও ইনিংস বড় করতে পারছিলেন না। আবার প্রায় ম্যাচেই ফিরেছেন এক অঙ্কের ঘরে। সব মিলিয়ে ব্যাট হাতে রানা ছিলেন চরম ব্যর্থ।

এবারের আসরে প্রথম ম্যাচে চেন্নাই সুপার কিংসের বিপক্ষে খেলেন ১৭ বলে ২১ রানের ইনিংস। এরপর ব্যাঙ্গালুরুর বিপক্ষে ৫ বলে ১০ এবং পাঞ্জাব কিংসের বিপক্ষে ফেরেন শূন্য রানেই! মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের বিপক্ষে ৭ বলে ৮ রানের পর দিল্লি ক্যাপিটালসের বিপক্ষে খেলেন ২০ বলে ৩০ রানের ইনিংস। সমালোচনা আর ট্রলের মাঝে অবশেষে আলোর দেখে পেয়েছেন হায়দ্রাবাদের বিপক্ষে। এই ফিফটিতে আপাতত চাপের বোঝাটা অনেকটাই হালকা করলেন রানা।

২০১৮ সালে আইপিএল অভিষেকের পর থেকে টানা চার আসর কলকাতার হয়ে খেলেন এই বাঁ হাতি ব্যাটার। এরপর চলতি আসরের মেগা নিলামে ৮ কোটি রুপিতে নিলাম থেকে আবারও রানাকে দলে ভেড়ায় কলকাতা। গেল আসরে শেষ ম্যাচগুলোতে রান খরায় কাটলেও ঘরোয়া ক্রিকেটের পারফরম্যান্স আর সামর্থ্যে বিচারে এবার চড়ামূল্যেই বিক্রি হন রানা। কিন্তু দাম অনুযায়ী পারফরম্যান্স ছিল একেবারেই হতশ্রী।

রানার ব্যাটিং ব্যর্থতায় মিডল অর্ডারে কলকাতার দূর্বলতা স্পষ্ট ছিল। সাবেক ক্রিকেটার ও ক্রিকেট বিশ্লেষকরাও রানার পারফরম্যান্স নিয়ে সমালোচনা করেন। যদিও রানার উপর ভরসা দেখান কলকাতার টিম ম্যানেজমেন্ট। খানিকটা দেরীতে হলেও সেই ভরসার প্রতিদান দিয়েছেন রানা।

এখন পর্যন্ত টুর্নামেন্টে ৬ ম্যাচের মধ্যে ৩ জয়ে পয়েন্টস টেবিলের চারে অবস্থান করছে কলকাতা নাইট রাইডার্স। টুর্নামেন্টে এখনও লম্বা পথ বাকি। তবে প্লে অফে দৌড়ে সেরা চারে থাকতে হলে জয়ের ধারায় ফিরতে হবে কলকাতাকে। আর মিডল অর্ডারে রানা ধারাবাহিক রানে ফিরতে পারলে কলকাতার জন্য হবে তা স্বস্তির নিঃশ্বাস।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link