রোড টু কাম ব্যাক

বাংলাদেশের ক্রিকেটের পাইপলাইন ঠিক করতে বেশ নড়েচড়ে বসেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। সেজন্যই গড়ে তোলা হয়েছিল বাংলাদেশ টাইগার্স ও হাই পারফর্মেন্স ইউনিট। আর এই দুই জায়গাতে প্রমাণ করতে পারা ক্রিকেটারদের নিয়েই তৈরি করা হয়েছে বাংলাদেশ ‘এ’ দল। লম্বা একটা সময় পর আবার মাঠে নামতে যাচ্ছে দলটি।

অভিজ্ঞ ও তরুণ ক্রিকেটারদের মিশেলে গড়ে তোলা হয়েছে এই ‘এ’ দল। এই দলে যেমন আছেন বাংলাদেশ দল থেকে বাদ পড়া সৌম্য সরকার, মোহাম্মদ মিঠুন ও সাব্বির রহমান রুম্মনদের মত ক্রিকেটার। আবার আছে শাহাদাত হোসেন দিপু কিংবা মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরীর মত ক্রিকেটাররা।

মোহাম্মদ মিঠুনের নেতৃত্বে বাংলাদেশ ‘এ’ দল ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে যাচ্ছে দুটি চারদিনের ম্যাচ ও তিনটি একদিনের ম্যাচ খেলতে। আর এই ম্যাচ গুলোর উপর খুব স্বাভাবিক ভাবেই বিশের নজর রাখবেন দলের সাথে যাওয়া নির্বাচক আব্দুর রাজ্জাক। কেননা বাংলাদেশ জাতীয় দলে কোন ক্রিকেটার প্রয়োজন হলে এখান থেকে ডাক পড়বে।

এমনিতে জাতীয় দলের বাইরে থাকা ক্রিকেটারদের সেভাবে প্রস্তুত রাখা যেত না। এছাড়া কে কেমন ফর্মে আছেন সেটা বোঝাও ছিল মুশকিল। কেননা বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের মান নিয়ে প্রশ্ন আছে সবার মধ্যেই। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে গেলে এই ক্রিকেটারদের একটা কঠিন পরীক্ষাই দিতে হবে। ক্যারিবীয় কন্ডিশনে ব্যাটসম্যান, বোলার সবার জন্যই কাজটা কঠিন হবে। এছাড়া আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের মত না হলেও অন্তত কাছাকাছি মানের ক্রিকেট খেলতে পারবেন এই ক্রিকেটাররা। ফলে এখানে পারফর্ম করা ক্রিকেটারদের উপর ভরসা করতে পারবেন নির্বাচকরা।

অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুনও মনে করেন ওয়েস্ট ইন্ডিজে অন্তত আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের কাছাকাছি মানের ক্রিকেট খেলতে পারবেন তাঁরা। সংবাদ সম্মেলনে মিঠুন বলেন, ‘যদি কম্পিটিটিভ ক্রিকেটের কথা বলি তাহলে অবশ্যই আমাদের ঘরোয়া ক্রিকেটের থেকে ‘এ’ দলের সিরিজগুলো অনেক বেশি কম্পিটিটিভ। কারণ এটা তো বাংলাদেশেরই একটা দল। আর আমরা খেলব ওয়েস্ট ইন্ডিজ ‘এ’ দলের সাথে। আর ওদের ‘এ’ দল বেশ শক্তিশালী হয়। ফলে ওখানে ভালো করতে হলে আন্তর্জাতিক না হলেও কাছাকাছি মানের ক্রিকেট খেলতে হবে।’

ওদিকে দল হিসেবে ‘এ’ দলে পারফর্মেন্স যেমন গুরুত্বপূর্ন ততটাই জরুরি ব্যাক্তিগত পারফর্মেন্স। কেননা জাতীয় দলে ফেরার একটা বড় মঞ্চ এটি মিঠুনদের জন্য। এছাড়া টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এখনো বেশ কয়েকটি জায়গা ফাকা আছে। ফলে সেসব জায়গায় অবশ্যই নিজেদের নিয়ে আসতে চাইবেন এই দলের সদস্যরা।

যেমন টেস্ট ক্রিকেটে তিন ও চার নাম্বার পজিশন নিয়ে এখন বেশ সমস্যাতেই পড়েছে বাংলাদেশ। মুমিনুল হক ও নাজমুল হোসেন শান্ত দুজনের টানা ব্যার্থতার পর এখন এই জায়গা গুলোতে কে খেলবেন এমন প্রশ্ন আসে। সেজন্য হয়তো বিশেষ নজর থাকবে মোহাম্মদ মিঠুনের উপরই। ওয়েস্ট ইন্ডিজে পারফর্ম করতে পারলে হয়তো জাতীয় দলে ফেরা লড়াইয়ে অনেকটাই এগিয়ে যাবেন তিনি।

আবার টি-টোয়েন্টি দলের জন্য বাংলাদেশের প্রয়োজন কিছু ক্রিকেটার। সেজন্যই সাব্বির রহমানকে আবার ফিরিয়ে আনা হয়েছে। আবার পেস বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবে মোহাম্মদ মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরীও নিজেকে প্রমাণ করে চলেছেন। ফলে এই দলের ক্রিকেটারদের নিজেদের মধ্যে একটা অলিখিত লড়াই থাকবেই।

তবে অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুন অবশ্য এমনটা মনে করেন না। তিনি বলেন, ‘নিজেদের মধ্যে কোন লড়াই নেই আসলে। আমরা কেউ কারো কম্পিটিটর না। আমরা বরং আমাদের নিজেদের পারফর্মেন্সে বেশি নজর দিই। অন্য কে কী করলো সেটা নিয়ে খুব একটা ভাবতে চাই না।’

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link