দিন-তারিখ বদলেছে, দলে পরিবর্তন এসেছে তবে ম্যাচের চিত্রনাট্য বদলায়নি একটুও। প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে বাংলাদেশকে হারিয়ে চমকে দিয়েছিল জিম্বাবুয়ে। তবুও প্রিয় ফরম্যাটে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়াবে এমন প্রত্যাশাই ছিল। তবে আরেকটা নতুন ম্যাচ হলেও ম্যাচের চিত্রনাট্যে খুব একটা বদল হাসেনি। জিম্বাবুয়ে বাংলাদেশকে হারিয়ে এবার সিরিজ জিতলো এবং সেটা প্রায় একইরকম ভাবে।
প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে বাংলাদেশের যে সমস্যা ছিল এই ম্যাচেও তাঁর হুবুহুই হয়েছে। সেদিন তামিম, মুশফিকদের ধীরগতির ইনিংসে হারারের ব্যাটিং উইকেটের পুরো ফায়দা তুলতে পারেনি বাংলাদেশ। শেষদিকে দ্রুত রান তুলতে না পারার খেসারত দিতে হয়েছিল সেদিন। আজই একই চিত্র, শুধু চরিত্র গুলো বদলেছে।
বাংলাদেশের ব্যাটিং ইনিংসে আজ সর্বোচ্চ রান এসেছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ব্যাট থেকে। ৮৪ বলে ৮০ রানের ইনিংস এসেছে এই ব্যাটারের কাছ থেকে। শুধু সংখ্যা গুলোর দিকে তাকালে আপনার হয়তো ইনিংসটাকে খুব একটা খারাপ মনে হবেনা। তবে হারারের উইকেটে এই ইনিংস দলের ক্ষতিই করে বেশি। এই যেমন জিম্বাবুয়ের রেগিস চাকাভা ১০২ রান করেছেন মাত্র ৭৫ বলে। ব্যাটিং করেছেন ১৩৬.০০ স্ট্রাইকরেটে। আর এখানেই আসলে ম্যাচের পার্থক্য গড়ে দেয়।
ফলে ২৯১ রানের টার্গেট জিম্বাবুয়ের ব্যাটসম্যানদের কাছে মামুলি হয়ে উঠেছে। জিম্বাবুয়ের হয়ে সেদিন ম্যাচের জয়ের দুই নায়ক ছিলেন সিকান্দার রাজা এবং ইনোসেন্ট কাইয়া। দুজনেই সেদিন সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে দলকে জয়ের বন্দরে নিতে গিয়েছিলেন। আজও ব্যাট হাতে একই রূপ ধারণ করেছিলেন সিকান্দার রাজা।
বাংলাদেশেরভ বোলারদের নিয়ে রীতিমত ছেলেখেলা করছেন এই ব্যাটার। আজ দ্বিতীয় ম্যাচেও তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে ১১৭ রানের ইনিংস। ফলে মাত্র ৪৯ রানে ৪ উইকেট পড়ে যাওয়ার পরেও ২৯১ রানের টার্গেট হেসে খেলেই পার করেছেন সিকান্দার রাজারা। বাংলাদেশের কাছে টানা ১৯ ম্যাচ হারের যন্ত্রণা ভুলছেন সিরিজ হারিয়েই।
তবে আজ সিকান্দার রাজার সঙ্গী বদলেছিল। রাজার সাথে আজ হাতে হাত মিলিয়েছিলেন রেগিস চাকাভা। এই ব্যাটারের বিধ্বংসী সেঞ্চুরিতে ম্যাচ হারে বাংলাদেশ। ৪৯ রানে চার উইকেট হারানোর পর দুজনে মিলে করেন ২০১ রানের বিশাল জুটি। চাকাভা ১০২ রান করে আউট হলেও ম্যাচ জিতিয়ে তবেই মাঠ ছেড়েছেন সিকান্দার রাজা।
ব্যাট হাতে যেন ক্যারিয়ারের সেরা ফর্মেই আছেন এই ব্যাটার। টি-টোয়েন্টি সিরিজের পর ওয়ানডে সিরিজও বলতে গেলে বাংলাদেশকে একাই হারিয়ে দিলেন তিনি। এছাড়া বল হাতেও এখন পর্যন্ত সিরিজের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি তিনি। ওদিকে বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে গত এক বছরে অসংখ্য ম্যাচ খেলেছেন তিনি। বাংলাদেশের বিপক্ষে সিকান্দার রাজার এমন পারফর্মেন্সের বড় কারণও এটিই।
তবে সবকিছুর পরেও জিম্বাবুয়ের কাছে বাংলাদেশের এমন অসহায় আত্মসমর্পণ হতাশার। অন্তত ওয়ানডে ফরম্যাটে তো বাংলাদেশই পরিষ্কার ফেবারিট ছিল। শেষ দুটি সিরিজেও দক্ষিণ আফ্রিকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে এসেছে বাংলাদেশ। তবে এবার বাংলাদেশের ব্যাটারদের ডট বল খেলার মানসিকতায় বাংলাদেশকে ডুবিয়েছে।
ব্যাটসম্যানদের পাশাপাশি বোলারদেরও দায় কম না এই সিরিজ হারের পিছনে। বিশেষ করে এই ব্যাটিং উইকেটে পেসাররা নিজেদের বৈচিত্র দেখাতে পারেননি। সেদিক থেকে হাসান মাহমুদ খানিকটা ভালো করতে পেরেছেন। এছাড়া তামিমের অধিনায়কত্ব নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে এই দুই ম্যাচে। বোলারদের ব্যবহারের ব্যাপারে কোন প্ল্যান বি ছিল না এই অধিনায়কের কাছে।