এশিয়া কাপ থেকে ছিটকে যাওয়ার দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে ভারত। টুর্নামেন্টের সবচেয়ে সফলতম দল ভারত। সাতটি শিরোপা রয়েছে ভারতের দখলে। গেল দুই আসরের চ্যাম্পিয়ন দল এবার রয়েছে শঙ্কায়। ফাইনালের ওঠার পথটা খানিকটা সংকীর্ণই হয়ে গেল রোহিত শর্মাদের। ফাইনালে যাওয়ার পথে ‘সুপার ফোর’ রাউন্ডের নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচ জিততেই হবে ভারতকে।
এর আগে অবশ্য ভারত শিবিরে পড়েছে চিন্তার ভাঁজ। নিজেদের বোলিং আক্রমণটা ঠিক মনের মত হচ্ছে না। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচেই যেন নিষ্প্রভ হয়ে যাচ্ছে বোলিং লাইনআপ। ইনজুরির থাবায় এশিয়া কাপের আগেই ছিটকে গিয়েছিলেন জাসপ্রিত বুমরাহ। দলের অন্যতম সেরা বোলারকে ছাড়াই টুর্নামেন্ট শুরু করে টিম ইন্ডিয়া। এর মাশুলও তাঁদের দিতে হয়েছে হংকংয়ের বিপক্ষে প্রথম রাউন্ডের ম্যাচে।
আর বোলিং আক্রমণের করুণ দশার চিত্রটা আরও খানিকটা স্পষ্ট হয় পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে। ইনজুরির কারণে ম্যাচটি খেলতে পারেননি রবীন্দ্র জাদেজা ও হার্শাল প্যাটেল। তাতে করে বরাবর পাঁচজন বোলারকে নিয়েই মাঠে নামতে হয়েছে ভারতকে। কেননা আবেশ খানও ছিলেন না পুরোপুরি সুস্থ। এর ফলে খানিকটা চাপে পড়ে যান হার্দিক পান্ডিয়া। তাঁর ওভারগুলো ছিল বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ব্যাটে-বলে পারফরম করে ম্যাচ সেরা হওয়া হার্দিক বল হাতে তেমন কিছুই করতে পারেনি।
অন্যদিকে রবীন্দ্র জাদেজার ইনজুরিতে দলের ভারসাম্য রক্ষা করাই যেন এখন বেশ কঠিন হয়ে যাচ্ছে। তাঁর পরিবর্তে হয়ত অক্ষর প্যাটেলকে দলে অন্তর্ভুক্ত করতে চাইবে ভারত। সেক্ষেত্রে অন্তত বোলিং আক্রমণে একটা বিকল্প বাড়বে। অন্যদিকে আবেশ খান যদি অসুস্থতা কাটিয়ে উঠতে পারেন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচের আগে তবে নিশ্চয়ই তাকেও দেখা যেতে পারে দলে। সেক্ষেত্রে ভুবেনেশ্বর কুমারের সাথে আবেশ খান হতে পারেন পেস আক্রমণের প্রধান কাণ্ডারি।
অন্যদিকে যুজবেন্দ্র চাহালও নেই নিজের সেরা ছন্দে। সেদিকটাও ভাবাচ্ছে ভারত কোচ রাহুল দ্রাবিড়কে। তাছাড়া ঋষাভ পান্ত নাকি দীনেশ কার্তিক কে থাকবেন এমন এক তর্কতেও জড়িয়ে রয়েছেন তিনি। দীনেশ কার্তিকের পরিবর্তে তিনি পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলিয়েছিলেন দীপক হুদাকে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচের আগে দলের মিডল অর্ডারটাও ঠিক করে ফেলতে হবে রাহুল দ্রাবিড়কে।
তবে ভারতের সবচেয়ে স্বস্তির জায়গাটা সম্ভবত তাঁদের টপ অর্ডার ফর্মে ফেরা। পাকিস্তানের বিপক্ষে রোহিত শর্মা থেকে শুরু করে লোকেশ রাহুল ও বিরাট কোহলি সবাই ছিলেন বেশ মারকুটে মেজাজে। কোহলির ফর্মে ফেরা। তাঁর নিজস্ব ছন্দে ফেরার আক্ষেপটা হয়ত ঘুচেছে দর্শকদের। কেননা বহুদিন বাদের ঠিক কোহলির মতই এক ইনিংসের উপহারই যেন দিয়েছেন ভারতের সাবেক এই অধিনায়ক।
তবে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ভারতের লড়াইটা হবে বেশ জমজমাট। শ্রীলঙ্কার টুর্নামেন্টের শুরুটা ভাল না হলেও ক্রমশ দলটি গুছিয়ে নিয়েছে। বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে বেশ হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করেই জয় ছিনিয়ে এনেছে দাসুন শানাকা ও তাঁর সতীর্থরা। এই দুই জয়ে নিশ্চয়ই দারুণভাবে উজ্জীবিত গোটা লংকান দল। তাঁরা নিশ্চয়ই মুখিয়ে থাকবেন ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ জিতে ফাইনালের পথে এগিয়ে থাকতে।
এখন শেষমেশ ভারত ঠিক কোন একাদশ নিয়ে মাঠে নামে সেটা সময়ের হাতে ছেড়ে দেওয়াই উত্তম অথবা রাহুল দ্রাবিড়ের। কেননা তিনি বলেই দিয়েছেন ভারত নিজেদের সেরা একাদশটা নিয়েই মাঠে নামবে। যেমন একাদশ নিয়েই খেলতে নামুক দুই দল, একটা জম্পেশ লড়াইয়ের আভাস অন্তত পাওয়াই যাচ্ছে। একদলের বাঁচা-মরার লড়াই তো আরেক দলের ফাইনালে যাওয়ার পথ সুগম করবার। শেষ হাসিটা প্রাপ্য দলের কপোল বর্ধিত করুক।