অস্ট্রেলিয়ার ওয়ানডে অধিনায়ক হবেন কে!

চলতি বছর এক দিনের ক্রিকেটে অ্যারন ফিঞ্চের পারফরম্যান্স মোটেই ভাল ছিল না। সর্বশেষ ১৩টি ওয়ানডে ম্যাচে মাত্র ১৬৯ রান করেছিলেন তিনি। তার মধ্যে আবার শেষ সাত ইনিংসে মাত্র ২৬ রান করেছেন অস্ট্রেলিয়ার এই ডান হাতি ওপেনার। এছাড়া শেষ ১২টি ইনিংসের মধ্যে পাঁচ বার রানের খাতা খোলার আগেই আউট হয়েছেন তিনি।

অফ ফর্মের কারণে তাই নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন অ্যারন ফিঞ্চ। সদ্য সমাপ্ত নিউজিল্যান্ড সিরিজের শেষ ম্যাচের পর ওয়ানডে দলের জার্সি তুলে রেখেছেন এই ব্যাটসম্যান। অ্যারন ফিঞ্চ শুধু একজন ওপেনার নন বরং অজি দলের অধিনায়কও ছিলেন। তাই তাঁর অনুপস্থিতিতে নতুন ওপেনারের পাশাপাশি নতুন অধিনায়ক খুঁজে বের করতে হবে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়াকে।

অবশ্য আগামী মাস দুয়েক ওয়ানডে ম্যাচ নেই অস্ট্রেলিয়ার। তাই অধিনায়ক নির্বাচনে তাড়াহুড়ো করতে হবে না তাদের। তবে সম্ভাব্য অধিনায়কের খসড়া তালিকা নিশ্চয়ই তৈরি করা যায়। দেখে নেয়া যাক, এমনই কয়েকজন ক্রিকেটারকে যারা হতে পারে অস্ট্রেলিয়ার নতুন ওয়ানডে ক্যাপ্টেন।

  • স্টিভেন স্মিথ

অ্যারন ফিঞ্চের উত্তরসূরী হিসেবে প্রজন্মের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান স্টিভ স্মিথের নাম সবচেয়ে বেশি শোনা যাচ্ছে। স্টিভ স্মিথের অধিনায়কত্বের সামর্থ্য নিয়ে কোন প্রশ্ন থাকার কথা নয়, এছাড়া অতীতেও তাঁর ক্যাপ্টেন্সি করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। বর্তমান ওয়ানডে দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য তিনি। তিন নম্বর পজিশনে ব্যাট করা স্মিথ অজি লাইনআপের মেরুদণ্ডের মতই। ব্যাটিং বিপর্যয়ে তিনি যেমন ত্রাতা হয়ে উঠতে পারেন তেমনি আক্রমণাত্বক ব্যাটিং-ও আয়ত্তে আছে তাঁর।

  • প্যাট কামিন্স

অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট অধিনায়ক প্যাট কামিন্স পঞ্চাশ ওভারের ফরম্যাটে অধিনায়কত্ব পাওয়ার দৌঁড়ে বেশ এগিয়ে আছেন। যদিও ক্রিকেটের ব্যস্ত সূচির এই সময়ে দুই বা ততোধিক ফরম্যাটে নেতৃত্ব দেয়া তাঁর জন্য কঠিন কাজ বটে।

তবে, অ্যারন ফিঞ্চ মনে করেন এই কঠিন কাজ যদি কেউ করতে পারে সেটা প্যাট কামিন্স-ই। সাদা পোশাকে এরই মাঝে নিজের নেতৃত্ব গুণে ভক্ত-সমর্থকদের মুগ্ধ করেছেন এই পেসার, রঙ্গিন পোশাকেও তাই তাঁর উপর ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া ভরসা করলে অবাক হওয়ার কারণ থাকবে না।

  • ডেভিড ওয়ার্নার

অস্ট্রেলিয়ার ওয়ানডে দলের নিয়মিত সদস্য এবং সাবেক অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চের ওপেনিং পার্টনার ডেভিড ওয়ার্নারও আছেন সম্ভাব্য অধিনায়কের তালিকায়। অবশ্য বল টেম্পারিং কাণ্ডে অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটে অধিনায়কত্ব করা ডেভিড ওয়ার্নারের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছিল, তবে প্রয়োজন হলে সেই নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নিতে প্রস্তুত আছে অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

আবার এই বামহাতি ব্যাটারের বয়স এরই মাঝে ৩৫ পেরিয়ে গিয়েছে, তাই ভবিষ্যতের কথা ভেবে ওয়ার্নারকে দীর্ঘ সময়ের জন্য ক্যাপ্টেন্সি দেয়া হবে না। কিন্তু আসন্ন ওয়ানডে বিশ্বকাপ পর্যন্ত এই অভিজ্ঞ তারকাকে অধিনায়ক হিসেবে দেখা যেতেও পারে।

  • অ্যালেক্স ক্যারি

অ্যারন ফিঞ্চ বিশ্রামে থাকাকালীন গত বছর ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে অস্ট্রেলিয়া দলের হয়ে টস করেছিলেন অ্যালেক্স ক্যারি। ক্যারির নেতৃত্বে সেবার স্বাগতিকদের হারিয়ে সিরিজ জিতে নিয়েছিল টিম অস্ট্রেলিয়া। লম্বা সময় ধরেই অ্যালেক্স ক্যারিকে ভবিষ্যৎ ক্যাপ্টেন হিসেবে বিবেচনা করছে পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। তাই দীর্ঘ মেয়াদে তরুণ এই উইকেট কিপার ব্যাটসম্যান অস্ট্রেলিয়ার ওয়ানডে অধিনায়ক হতে পারেন।

  • মিশেল মার্শ

একেবারে নতুন কাউকে অধিনায়ক বানাতে চাইলে মিশেল মার্শ ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার প্রথম পছন্দ। সাদা বলে তাঁর সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স দুর্দান্ত, বিশেষ করে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে তিন নম্বরে ব্যাট করা এই ক্রিকেটার আছেন দারুণ ছন্দে।

ওয়ানডেতে ইনজুরির কারণে আপাতত দলে জায়গা হারালেও তাঁর সামর্থ্য নিয়ে মোটেই সংশয় নেই। ঘরোয়া ক্রিকেটে ক্যাপ্টেন্সি করার অভিজ্ঞতা সম্পন্ন মিশেল মার্শকে পঞ্চাশ ওভারের ফরম্যাটে অধিনায়ক করা হলে, পরবর্তীতে টি-টোয়েন্টিতেও একই দায়িত্ব দেয়া হতে পারে।

এছাড়া রঙিন পোশাকে গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, জস হ্যাজলউড, অ্যাডাম জাম্পার মত পারফর্মাররা অস্ট্রেলিয়া দলের নিয়মিত সদস্য। চাইলে অধিনায়ক হিসেবে এদের মধ্য থেকেও কাউকে বেছে নিতে পারে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার। বিশেষ করে মেলবোর্ন স্টার্সের বর্তমান অধিনায়ক গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে ক্যাপ্টেন হিসেবে ঘোষণা করাটা অযৌক্তিক হবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link