প্রায় সাড়ে সাত কেজি ওজনের একটা শিরোপা। সে শিরোপার জন্যে লড়বে এবার দশটি ক্রিকেট খেলুড়ে দেশ। সবার নজর তাই এখন সেদিকেই। সুদূর তাসমান পারে এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আয়োজন বসতে চলেছে। ক্রমান্বয়ে দলগুলো তাদের স্কোয়াড ঘোষণা করে ফেলছে। উন্মোচিত হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন এক একটি জার্সি। ভারত দল সেদিক থেকে নেই পিছিয়ে। ক্রিকেট বিশ্বের শক্তিশালী এক দেশের পিছিয়ে থাকা মানায় না।
নানাবিধও গুঞ্জন আর সমালোচনার মাঝেই দল ঘোষণা করে ফেলেছে টিম ইন্ডিয়া। সে দলে নানান সমালোচনা উপেক্ষা করে ওপেনিংয়ের দায়িত্বটা পেয়ে গেছেন লোকেশ রাহুল। ভারত জাতীয় ক্রিকেট দলে তিনি বেশ নিয়মিত মুখ। তবে সাম্প্রতিক সময়ে তাঁকে সইতে হচ্ছে নিন্দা। এর কারণ অবশ্য তাঁর অফফর্ম।
ব্যাট হাতে আইপিএলে দুর্দান্ত সময় পার করেছেন রাহুল। লখনৌ সুপার জায়ান্টসের হয়ে ধুন্ধুমার ব্যাটিং উপহার দিয়েছেন দর্শকদের। তবে জাতীয় দলের জার্সি গায়ে বড্ড বেশি মলিন এই তারকা ব্যাটার। ঠিকঠাক রান যেন করতেই পারছেন না তিনি। তাঁর বিকল্পও যেন ভেবে ফেলেন বিশ্লেষকরা। তবে টিম ম্যানেজমেন্ট আস্থা রেখেছেন তাদের এই পরীক্ষিত সেনানীর উপর। আস্থার প্রতিদান তো নিশ্চয়ই দিতে চাইবেন রাহুল।
তাইতো এখন তাঁর মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে নিজের ব্যাটিং স্টাইল এবং অ্যাপ্রোচে পরিবর্তন। বলকে ক্লিন হিট করতে পারেন। সুযোগ বুঝে ফিল্ডিং পজিশনের ফায়দাও হাসিল করতে পারেন। কিন্তু সে কাজটার শুরুটা খানিক ধীর গতিতেই করেন লোকেশ রাহুল। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের বর্তমান সময়ে মাথা ব্যথার কারণ ব্যাটারের স্ট্রাইকরেট। সে দিক বিবেচনায় যথেষ্ট ভাল তিনি।
তবে সাম্প্রতিক ফর্মটাই যেন সঙ্গ দিচ্ছে না তাঁর। আর তাইতো নিজের স্ট্রাইকরেট বৃদ্ধির জন্যে কাজ করে চলেছেন লোকেশ রাহুল। তিনি বলেন, ‘হ্যা সেদিকেও (স্ট্রাইকরেট) আমি বিশেষ নজর দিচ্ছি।’ নিজের স্ট্রাইকরেটের দিকে নজর দিচ্ছেন তিনি। তবে সেই সাথে এটাও স্বীকার করলেন যে দলের প্রয়োজনে তিনি খানিকটা ধীরগতিতে ইনিংসের শুরু করে থাকেন।
রাহুল বলেন, ‘কেউ নিখুঁত নয়। ড্রেসিং রুমে থাকা কেউই সয়ংসম্পূর্ণ নয়। সবাই কিছু না কিছু নিয়ে কাজ করছে। সবারই আলাদা আলাদা রোল থাকে। হ্যা স্ট্রাইকরেটও খেলোয়াড়দের পারফরমেন্স পরিমাপের একটা অংশ। তবে সময়ের প্রয়োজনীয়তাও মেটাতে হয়। খেলোয়াড়দের বুঝতে হয় কখন ২০০ স্ট্রাইকরেটে খেলার পরিবর্তে ১০০/১২০ স্ট্রাইকরেট খেলতে হবে। খালি চোখে তা ধীর গতির মনে হতে পারে। তবে সেটার কার্য্যকারিতা নিশ্চয়ই বিনষ্ট হয় না।’
খেলোয়াড়দের প্রতিটা ম্যাচেই ভিন্ন কিছু রোল থাকে সেটাই আরও একবার মনে করিয়ে দিলেন রাহুল। তাছাড়া একজন ওপেনারকে ম্যাচের শুরুতে পিচ বুঝে খেলতে হয়। নিদেনপক্ষে তিন-চার বল প্রয়োজন হয়। একটা ভাল শুরুর জন্যে সে বল খরচা করা মানেই যে ধীর গতির শুরু, তেমনটা ভাবাও ঠিক না বলে অভিমত দেন লোকেশ রাহুল।
চারিপাশে নিন্দার ঝড় বয়ে যাচ্ছে। তবুও অনড় লোকেশ রাহুল। আর সেটা সম্ভব হচ্ছে তাঁর দলের কাছ থেকে পাওয়া আশ্বাস থেকে। কোচ, অধিনায়ক থেকে শুরু করে দলের সবাই তাঁকে সমর্থন জুগিয়ে যাচ্ছেন। এই বিশ্বকাপটা রাহুলকে খেলতে হবে ভীষণ চাপ মাথায় নিয়ে। তবে সেসব ঝেড়ে ফেলে তিনি নিশ্চয়ই উড়তে চাইবেন নীল আকাশে। তিনি উড়লে ভারতের শিরোপা জয়ের পথটা তো হয়ে যাবে মসৃণ।
ফেরার আভাসটা লোকেশ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচেই দিয়ে রেখেছেন। খেলেছেন ৩৫ বলে ৫৫ রানের এক ইনিংস, যেখানে ছিল চারটি চার ও তিনটি ছক্কা।