টি –টোয়েন্টি বিশ্বকাপকে সামনে রেখে ভারতের প্রধান উদ্বেগ ছিল পেস বোলিং বিভাগ। অস্ট্রেলিয়া সিরিজ শেষেও সেই উদ্বেগটা রয়ে গেছে। অস্ট্রেলিয়া- ডিফেন্ডিং টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হিসাবে, একটি কঠিন পরীক্ষায় ফেলে গেছে ভারতকে। ভারতের পেস ব্যাটারিদের টপকে সিরিজের তৃতীয় টি- টোয়েন্টি ম্যাচেও অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটাররা ১৮৬ রান করতে সক্ষম হয়েছে। ভারতের পেস আক্রমণ নিয়ে ভাবার একটা বার্তাই যেন দিয়ে গেল তাঁরা। এই পেস আক্রমণ নিয়ে বিশ্বকাপের মঞ্চে নাম্বার আগে যেন একটু শঙ্কায় পড়ে গেল ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট।
ভারতের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ স্কোয়াডে মাত্র চার জন পেসারকে নেওয়া হয়েছে। ভুবনেশ্বর কুমার ও হার্শাল প্যাটেল ছাড়া জাশপ্রীত বুমরাহ ও আর্শদ্বীপ সিং দলে রয়েছেন। মোহম্মদ শামি ও দীপক চাহারকে স্ট্যান্ড-বাই হিসাবে রাখা হয়েছে। কিন্তু এই পেস আক্রমণ যথেষ্ট কিনা অস্ট্রেলিয়া সিরিজের পর তা বেশ দ্বিধায় ফেলে দিচ্ছে সবাইকে। এদিকে ভারতীয় দলের অধিনায়ক রোহিত শর্মাও স্বীকার করেছেন যে ভারত এখনও কাঙ্খিত পর্যায়ে নেই। অর্থাৎ ভারতীয় দল টি- টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য তৈরি কিনা সেটা একটা বিশাল প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
গত কয়েকটি ম্যাচে ভূবনেশ্বরকে পাওয়ার প্লে-র পাশাপাশি ডেথ ওভারে ব্যবহার করা হয়েছে। অন্য দিকে হার্শালকে ধরা হতো দলের ডেথ ওভার বিশেষজ্ঞ। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে দু’জনই নামের সুবিচার করতে পারেননি। প্রচুর রান খরচ করেছেন। দুই বোলারের সমালোচনা করতে ছাড় দেননি সাবেক ক্রিকেটাররা। এতসব কিছুর পরেও দলের অধিনায়ক রোহিত শর্মা তাঁদের উপর ভরসা রাখছেন।
টি–টোয়েন্টি ক্রিকেটে ভুলের সুযোগ নেই। এখানে প্রতিটা বল, প্রতিটা ওভার দারুণ গুরুত্বপূর্ণ। ব্যাপারটা এমন নয় যে শুধু দুইটা ভালো ওভার করলেই হলো। এখানে বোলারদের সর্বোচ্চ চারটা ওভার করতে হয় এবং সেখানে দলকে জেতাতে হলে প্রতিটা বল নিখুঁত হতে হয়। এই মুহুর্তে ভারতের প্রধান উদ্বেগ ভুবনেশ্বর কুমারকে ঘিরে। হায়দ্রাবাদ ফ্র্যাঞ্চাইজির হয়ে তিনি আইপিএলে অনেকবার খেলেছেন উৎপল স্টেডিয়ামে, পিচ আর কন্ডিশন তাই তাঁর যে কারোর চেয়ে ভাল জানার কথা। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সেই পরিচিত কন্ডিশনে তিনি ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। এই সিরিজে তিনি সাত এভার বোলিং করে ৯১ রান দিয়েছেন এবং কেবল একটিমাত্র উইকেট পেয়েছেন।
ভুবনেশ্বরের ব্যাপারে অধিনায়ক রোহিত বলেন, ‘ভূবনেশ্বরকে একটু সময় দিতে হবে। এমনিতেই ও দলে থাকলে বোলিংয়ে বৈচিত্র বাড়ে। বিশ্বকাপের জন্য আমরা একটা পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছি। সেই পরিকল্পনায় ভুবি আছে। তাই ডেথ ওভারে ওকে আরও সুযোগ দেওয়া হবে।’ রোহিত আরও জানিয়েছেন রান দিলেও ভুবনেশ্বরের আত্মবিশ্বাস দেখে তিনি খুশি। টি- টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের জন্য ভুবনেশ্বর কুমারের অভিজ্ঞতাটা বড় অস্ত্র হতে পারে বলেও মনে করছেন তিনি। ভূবনেশ্বরকে আরও কার্য্যকরভাবে ব্যবহার করবার পন্থা খুঁজতে হবে সেদিকে নজর দেয়া হবে বলেও জানান।
রোহিত আরও বলেন, ‘আমরা চাই সে (ভুবি) যত দ্রুত সম্ভব ফিরে আসুক। দল হিসেবে আমরা তাঁর সামর্থ্যে বিশ্বাস করি। আমাদের জন্য সময় এসেছে তাঁর প্রতি বিশ্বাস দেখানোর এবং তার দক্ষতাকে সমর্থন করা।’ রোহিত শর্মার এরূপ ভরসার প্রতিদান মাঠে বল হাতে নিশ্চয়ই ভুবনেশ্বর কুমার দিতে চাইবেন। আর ভারতীয় দলের অধিনায়কও চাইবেন ভবি আপন রূপে ফিরে আসুক, যাতে নিজেদের শক্তিশালী দল নিয়েই মাঠের লড়াইয়ে নামতে পারে ভারত।