এই দলগুলো নেই বিশ্বকাপে

সময় ঘনিয়ে এসেছে কাতার বিশ্বকাপের। বিশ্ববাসী ফুটবলপ্রেমীরা অপেক্ষায় রয়েছেন বিশ্বকাপের আনন্দে মেতে উঠার। বিশ্বকাপে দেশকে প্রতিনিধিত্ব করা প্রতিটি ফুটবলারেরই স্বপ্ন। কিন্তু বাছাইপর্বে বাজে খেলার কারণে বেশ কয়েকটি শক্তিশালী দল এবার সুযোগ পায়নি বিশ্বকাপের মূল আসরে খেলার। আসুন দেখে নেয়া যাক পাঁচটি দেশকে যাদেরকে বিশ্বকাপে মিস করবে ফুটবলপ্রেমিরা।

  • নাইজেরিয়া

আফ্রিকার ফুটবলের অন্যতম পরাশক্তি সুপার ঈগল খ্যাত নাইজেরিয়া। ২০০৬ সাল থেকে নিয়মিত ফুটবল বিশ্বকাপে অংশ নিলেও, এবারের কাতার বিশ্বকাপে দেখা যাবে না আহমেদ মূসাদের। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে দুই লেগ মিলিয়েও ঘানাকেও হারাতে পারেনি নাইজেরিয়া। দুই লেগই যথাক্রমে ০-০ এবং ১-১ গোলে ড্র হলেও অ্যাওয়ে গোলের সুবাদে বিশ্বকাপের টিকিট কাটে ঘানা।

অথচ বর্তমানে ফিফা রাংকিংয়ে ৩০ নম্বরে রয়েছে নাইজেরিয়া। বিশ্বকাপের বড় মঞ্চে ভিক্টর ওসিমহেন, আদেমোলা লুকম্যান, কেলেচি ইহিয়ানাচোর মতো ফুটবলারদের নিশ্চিতভাবেই মিস করবে বিশ্ববাসী।

  • চিলি

২০২২ বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে লাতিন আমেরিকার সবচেয়ে বড় অঘটন সম্ভবত চিলির মূলপর্বে জায়গা করে না নেয়া। অথচ দুবারের কোপা আমেরিকা বিজয়ী দলটার সোনালি প্রজন্মের এটাই ছিল শেষ বিশ্বকাপ। কিন্তু শেষটা রঙিনভাবে করতে পারলেন না ভিদাল-ব্রাভোরা। 

লাতিন আমেরিকার বিশ্বকাপ বাছাইয়ের পুরোটা সময় জুড়েই বাজে ফুটবল খেলেছেন চিলিয়ানরা। ১৮ ম্যাচে তাঁদের জয় মোটে পাঁচ ম্যাচে, ফলশ্রুতিতে পয়েন্ট টেবিলে তাঁদের অবস্থান ছিল সেরা পাঁচের বাইরে। ক্যারিয়ারের শেষ বিশ্বকাপে মাঠে না নামতে পারার আক্ষেপ নিশ্চিতভাবে পুড়াবে অ্যালেক্সিস সানচেজ, ভিদাল, বেরেনটনদের। 

  • কলম্বিয়া

২০১৪ বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে চমকে দেয়া লাতিন আমেরিকার আরেক দেশ কলম্বিয়াও থাকছে না এবারের বিশ্বকাপে। পুরো বাছাইপর্বে ভালো খেললেও ধারাবাহিকতার অভাবে পেরুর থেকে মাত্র এক পয়েন্ট পেছনে থেকে বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ হারায় তাঁরা। ২০০১ সালের কোপা আমেরিকা জয়ী দেশটাকে তাই বিশ্বকাপ দেখতে হবে ঘরে বসেই।

বর্তমান বিশ্ব র‍্যাংকিংয়ের ১৭ নম্বরে রয়েছে কলম্বিয়া। অন্যদিকে লাতিন দলগুলোর মাঝে তাঁদের অবস্থান চারে। কিন্তু র‍্যাংকিং আর মাঠের খেলায় যেন বিস্তর ফারাক কলম্বিয়ানদের, বাছাইপর্বের মাঝেই কয়েকবার কোচ পরিবর্তন করেও কাজ হয়নি। দলে বেশ কয়েকজন তরুণ প্রতিভাবান ফুটবলারও থাকলেও তাঁদের মাঝে সমন্বয় গড়ে উঠেনি, তারই প্রভাব পড়েছে খেলায়। লুইজ ডিয়াজ, হুয়ান কুয়াদ্রাদো, জেমস রদ্রিগেজদের অনুপস্থিতিতি তাই নিশ্চিতভাবেই অনুভূত হবে বিশ্বকাপে।

  • সুইডেন

ইউরোপের বড় দলগুলোর মাঝে বিশ্বকাপ মিস করা দলগুলোর মাঝে রয়েছে সুইডেনও। নিজেদের গ্রুপে দ্বিতীয় হওয়ায় তাঁদেরকে খেলতে হয় কোয়ালিফিকেশন রাউন্ড। সেখানে প্রথম ম্যাচে চেক রিপাবলিকদের হারালেও, পোল্যান্ডের কাছে ২-০ গোলে হারায় বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ হারায় ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালিস্টরা।

বর্তমানে ফিফা বিশ্ব র‍্যাংকিংয়ে ১৯ নম্বরে অবস্থান করছে সুইডেন। ভিক্টর লিন্ডলফ, এলিল ফোর্সবার্গ, দেজান কুলুসেভস্কিদের ছাড়াই তাই পর্দা উঠবে এবারের বিশ্বকাপ ফুটবলের। জলাতান ইব্রাহিমোভিচ পরবর্তী যুগের সূচনাটা তাই বাজেই হলো সুইডেনের জন্য।

  • ইতালি  

এবারের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের সবচেয়ে বড় অঘটন সম্ভবত ইতালির বাদ পড়ে যাওয়া। ২০১৪ বিশ্বকাপে সুযোগ না পেলেও রবার্তো মানচিনির অধীনে নিজেদের গুছিয়ে নিয়েছিল চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। টানা ৩৭ ম্যাচ অপরাজিত থাকার পাশাপাশি জিতে নিয়েছিল ইউরোর শিরোপাও।

কোয়ালিফিকেশন রাউন্ডের শেষম্যাচে পর্তুগালের মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও তাঁর আগেই বিদায় ঘণ্টা বেজে যায় ইতালিয়ানদের। নর্থ মেসিডোনিয়ার কাছে ইনজুরি সময়ের গোলে হেরে আরো স্বপ্নভঙ্গের শিকার হয় ইতালিয়ানরা। চিরো ইম্মোবিলে, মার্কো ভেরাত্তি, লরেঞ্জো ইনসিনিয়ে, ফেদেরিকো কিয়েসাদের তাই আরো একবার বিশ্বকাপ কাটাতে হবে দর্শক হয়েই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link