গোল করলেন। তবে, উদযাপন করলেন না ব্রিল এমবোলো। করবেন কি করে, যেদেশের বিরুদ্ধে গোল করেছেন, সেটা যে তাঁর জন্মভূমি। তাঁর গোলেই হারল ক্যামেরুন। বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে ১-০ গোলে হারল ক্যামেরুন।
এই বিশ্বকাপে শুধু ১৩৭ জন ফুটবলার আছেন, যারা জন্মভূমির হয়ে না খেলে খেলছেন অন্য দেশের হয়ে। এদের একজন ব্রিল এমবোলো। আর এই বিশ্বকাপের প্রথম ফুটবলার হিসেবে গোল করলেন জন্মভূমির বিপক্ষে।
ম্যাচের ৪৭ মিনিটে সাবেক লিভারপুল তারকা জারডান শাকিরির অ্যাসিস্টে ম্যাচের অচলায়তন ভাঙেন তিনি। অথচ, গোলের পরিবর্তি উচ্ছ্বাস ছিল না তাঁর চেহারায়। মুখ ঢেকে বিস্ময় প্রকাশ করেন। সতীর্থদের সাথে হাত মেলান। তবে, উদযাপন থেকে নিজেকে সংযত রাখেন।
এমবোলোর জন্ম ক্যামেরুনের ইয়াউন্ডিতে। তার বাবা মা ক্যামেরুনের নাগরিক। এমবোলো পাঁচ বছর পর্যন্ত ক্যামেরুনেই ছিরেন। এরপর ভাগ্যের অন্বেষণে পরিবারসহ ইউরোপ চলে আসেন। প্রথম যান ফ্রান্সে।
এর মধ্যে ব্যক্তিগত জীবনেও ঝড় নেমে আসে। বিচ্ছেদ হয় বাবা-মায়ের মধ্যে। মা আবার বিয়ে করেন এক সুইস নাগরিককে। সবাই চলে আসেন সুইজারল্যান্ডের বাসেলে। এরপর একটা সময় থিতু হন সুইজারল্যান্ডে।
২০১৪ সালে এমবোলো সুইস নাগরিকত্ব পান। পেশাদার ফুটবল ক্যারিয়ার শুরু করেন সুইস ক্লাব বাসেলের হয়ে। সুইজারল্যান্ডের বয়সভিত্তিক দলগুলি পেরিয়ে জায়গা পেয়ে যান জাতীয় দলে। অভিষেক হয় ২০১৫ সালে।
২০১৫ সালে অভিষেক হয় জাতীয় দলে। চার বছর আগে রাশিয়া বিশ্বকাপেও খেলেছিলেন এমবোলো। ২৫ বছর বয়সী ফুটবলার বিশ্ব মঞ্চে প্রথম গোলের দেখা পেলেন এবার।
জন্মভূমির হয়ে না খেললেও ক্যামেরুন ফুটবলের বড় ভক্ত তিনি। বরাবরই সংবাদ মাধ্যমে দাবি করেন, ক্যামেরুন দলের এক নম্বর ভক্ত তিনি।
তবে, এটাও বলেছিলেন যে, মাঠে নামার সময় সেই সম্পর্কের কথাটা ভুলে যাবেন তিনি। আর হলও তাই। ম্যাচে যে একটা গোল হল – সেটা তিনিই করলেন। আর তাতেই জিতে গেল সুইসরা। হ্যাঁ, জন্মভূমির প্রতি সম্মান দেখিয়ে উদযাপন করাটা থেকে বিরত ছিলেন।
ম্যাচের প্রথমার্ধে সুইসদের বিপক্ষে পাল্লা দিয়ে খেললেও দ্বিতীয়ার্ধে একদমই তাল রাখতে পারেনি ক্যামেরুন। শেষ অবধি তারই খেসারত দিতে হয়। তার ওপর ক্যামেরুনের রক্ষণভাগের দূর্বলতাগুলো দ্বিতীয়ার্ধে আরও বেশি স্পষ্ট হয়ে ওঠে। আর সেখান থেকেই গোলের দেখা পান এমবোলো।