বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে খেলতে নামার আগেই বড় ধাক্কা খেলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। দুই ম্যাচ নির্বাসিত করা হল তাঁকে। সঙ্গে ৫০ হাজার ইউরো জরিমানা। স্বাভাবিক ভাবেই বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করার আগেই চাপে পড়ে গেলেন পর্তুগিজ তারকা।
ক্যারিয়ারে একটা বাজে সময় যাচ্ছে সিআরসেভেনের। বিশেষ করে ক্লাব ফুটবলের জন্য কথাটি বেশি প্রযোজ্য। একদিকে দীর্ঘদিনের ক্লাব ম্যানচেষ্টার ইউনাইটেডের সাথে সম্পর্কের শেষ হয়েছে। তাঁর মধ্যেই আবার পেলেন শাস্তির ঘোষণা।
ঘটনা হলো চলতি বছরের এপ্রিলে প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচ ছিল এভারটনের বিপক্ষে। সেই ম্যাচটি ১-০ তে হেরে যায় রোনালদোর ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। ফলে মন-মেজাজ ভালো ছিল না রোনালদোর। মাঠ থেকে বের হওয়ার সময় এভারটনের এক কিশোর ভক্ত রোনালদোর সাথে ছবি তোলার আবদার করে।
তখনই চটে যান রোনালদো। নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে ভক্তের ফোনটি আঁচড়ে ভেঙে ফেলেন। ভক্তের মায়ের অভিযোগ ছিল এতে কিশোরের হাতেও আঘাত লাগে এবং ফোনটিও ভেঙে যায়। এই ঘটনার জেরে আগস্টে পুলিশ রোনালদোকে তাঁর অভিষ্যৎ আচরণ সম্পর্কে সতর্ক করেছিল। সেপ্টেম্বরে ইংল্যান্ডের ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (এফএ) দ্বারা তাঁর বিরুদ্ধে অনুপযুক্ত আচরণের অভিযোগ আনা হয়েছিল।
রোনালদো অবশ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষমা চেয়েছিলেন। এবং তাঁকে পঞ্চাশ হাজার পাউন্ড জরিমানাও করা হয়েছিল। এবার সেই ঘটনার শাস্তি স্বরূপ রোনালদোকে দুই ম্যাচ নিষিদ্ধ করা হয়।
এই প্রসঙ্গে এফএ এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘এভারটনের বিপক্ষে ম্যাচ শেষে রোনালদো যে আচরণ করেছিলেন, তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়ার মতো না। রোনালদো নিজেও ভুল স্বীকার করে নিয়েছেন। কিন্তু শাস্তি তাঁকে পেতেই হতো। ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা পুনরাবৃত্তি ঘটলে শাস্তি আরও বাড়তে পারে। সকল ফুটবলারদের জন্য এটি একটি শিক্ষা হয়ে থাকবে।’
এই শাস্তি অবশ্য কেবল ক্লাব ফুটবলের জন্যই প্রযোজ্য। জাতীয় দলের জন্য নয়। তাই পর্তুগালের হয়ে বিশ্বকাপের আসরে খেলতে বাঁধা নেই এই ফুটবলারের। আজ রাত দশটায় দেশের জার্সিতে ঘানার বিপক্ষে বিশ্বকাপের মঞ্চে দেখা যাবে এই তারকাকে। আর ক্লাব ফুটবলে রোনালদোর পরবর্তী গন্তব্য যেখানে হবে, সেই ক্লাবের হয়ে প্রথম দুই ম্যাচ তিনি খেলতে পারবেন না নিষেধাজ্ঞার জন্য।
তবে, রোনালদো এখন কোথায় যাবেন খেলতে সেটা নিয়ে আছে জল্পনা কল্পনা। গুঞ্জন আছে তিনি খোদ ডিয়েগো ম্যারাডোনার সাবেক ক্লাব ন্যাপোলিতে যাবেন। মানে ফের তিনি ফিরতে যাচ্ছেন সিরি ‘এ’-তে। তাঁকে পেতে আগ্রহী আরও বেশ কয়েকটি ক্লাব। আরব মালিকানাধীন নিউক্যাসল ইউনাইটেড তাদের মধ্যে অন্যতম। যদিও রোনালদো বরাবর বলে এসেছেন যে তিনি উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ খেলতে চান। কিন্তু, নিউক্যাসল চ্যাম্পিয়ন্স লিগ খেলছে না।
নিউক্যাসলের পাশাপাশি একই মালিকানাধীন সৌদি ক্লাব আল-নাসেরও আছে আলোচনায়। সৌদি আরবের সিংহাসনের উত্তরাধিকারী মোহাম্মাদ বিন সালমান দুটি ক্লাবেরই মালিক।
সামান্য হলেও গুঞ্জন আছে প্যারিস সেইন্ট জার্মেইনের ব্যাপারে। কেউ কেউ দাবি করছেন, রোনালদোকে নিয়ে নিতে পারে পিএসজি। সেক্ষেত্রে লিওনেল মেসি, নেইমার, কিলিয়ান এমবাপ্পের সাথে রোনালদো যোগ হয়ে নতুন একটা গ্যালাক্টিকোই তৈরি হয়ে উঠতে পারে।
এবার প্রশ্ন হল, রোনালদো এই তিনের মধ্যে কোনটাকে বেছে নেবেন? নাকি এই তিনের কোনটা রোনালদোকে বেছে নেবে? আসলে, রোনালদোর এখন যে অবস্থা তিনি নিজে থেকে ক্লাব বাছাই করার মত অবস্থাতে নেই।