অলিভার জিরুড, দ্য অলটাইম টপস্কোরার অফ ফ্রান্স

ম্যাচের তখন ৪৪তম মিনিট। কিলিয়ান এমবাপ্পে পোলিশ ডি-বক্সের বাইরে থেকে বল বাড়ালেন অলিভার জিরুডের কাছে। আর ঐ বাড়ানো বল থেকেই জিরুড নিলেন গোলমুখো এক শট। আর তাতেই ম্যাচের প্রথম গোলের দেখা পায় ফ্রান্স।

এ গোলেই ফ্রান্সের ইতিহাসে নতুন একটি রেকর্ড গড়েছেন জিরুড। ফ্রান্সের জার্সি গায়ে জিরুডের এটিই ছিল ৫২তম গোল। আর এতেই থিয়েরি অঁরিকে (৫১) টপকে ফ্রান্সের ইতিহাসের সর্বোচ্চ গোলদাতা বনে যান এসি মিলানের এ স্ট্রাইকার।

গতবার বিশ্বকাপ জেতার পরও আলো ছড়াতে পারেননি জিরুড। টুর্নামেন্টে ৭ ম্যাচে মাঠে নামলেও তিনি ছিলেন গোলশুন্য। এমনকি ফরোয়ার্ড হওয়া স্বত্ত্বেও সে বিশ্বকাপে তিনি ফ্রান্সকে একটি গোলেও সহায়তা করতে পারেননি। তবে এ বিশ্বকাপে এসে যেন শূন্য থেকে শিখরে উঠে এলেন ফ্রেঞ্চ এ ফরোয়ার্ড।

কাতার বিশ্বকাপে নিজেদের শুরুর ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পেয়েছিলেন দুই গোল। এরপর রাউন্ড অফ সিক্সটিনে এসে পেলেন আরেকটি গোল। এতে করে গত বিশ্বকাপে একটিও গোল না পাওয়া অলিভার জিরুড এবারের বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ গোলদাতাদের তালিকায় চলে দুইয়ে।

 

পোল্যান্ডের বিপক্ষে ফ্রান্সের সেই একটি গোল করেই থামেননি জিরুড। পরের অর্ধে আরো দুর্দান্ত রূপে ফিরে আসেন তিনি। সেই পরিপ্রেক্ষিতে ফ্রান্সের দ্বিতীয় গোলের যোগানদাতাও তিনিই ছিলেন। পোল্যান্ড ফ্রান্সের ডি বক্সে আক্রমণ করতে আসলে সেই বল কাউন্টার অ্যাটাকে লম্বা পাসের মাধ্যমে ক্লিয়ার করে পাঠিয়ে দেন উসমান দেম্বেলের কাছে। আর পরবর্তীতে উসমান দেম্বেলের কাছ থেকে পাওয়া বলেই গোল করেন এমবাপ্পে। ফ্রান্সও তাতে এগিয়ে যায় ২-০ গোলে।

এর আগে অবশ্য ম্যাচের ৫৮ মিনিটেই আরেকবার ঝলকানি দেখা গিয়েছিল জিরুডের কাছ থেকে। তবে সেটি পা থেকে নয়, দুর্দান্ত এক ওভারহেড কিকের মাধ্যমে বল বাড়িয়েছিলেন  পোলিশ গোলপোস্টের দিকে। ফাঁকা গোলপোস্টে সেটি গোলও হয়েছিল। তবে পোলিশ গোলরক্ষক আগেই এক ফ্রেঞ্চ ফুটবলারের ধাক্কায় পড়ে গেলে রেফারি সেটিকে ফাউল গণ্য করে গোলটিকে বাতিল করে দেন।

ম্যাচের ৭০ মিনিটে ফ্রান্স ২-০ গোলে এগিয়ে গেলে মিনিট ছয়েক পরেই জিরুডকে নামিয়ে নেন ফ্রেঞ্চ কোচ দিদিয়ের দেশম। যদিও জিরুড নামার পর আরো একটি গোল পেয়েছিল ফ্রান্স। এমবাপ্পের দ্বিতীয় গোলে ৩-০ গোলে এগিয়ে যায় ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা। তবে ম্যাচের প্রায় শেষ মুহূর্তে পেনাল্টি থেকে একটি গোল শোধ করেছিল পোলিশরা। রবার্ট লেওয়ান্ডস্কির ঐ গোলে অবশ্য বিশেষ একটা লাভ হয়নি। শেষ ১৬ থেকেই বিদায় নিতে হয় পোলিশদের। আর দুর্দান্ত এক জয়ের মাধ্যমে শেষ আটে উঠে অন্য দল গুলোকে একটা বার্তাই দিয়ে রাখলো ফ্রান্স।

কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রান্সের সম্ভাব্য প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড অথবা সেনেগাল। গতবারের মতো এবার ফ্রান্স স্কোয়াড যেভাবে দাপট দেখিয়ে যাচ্ছে তাতে ব্রাজিলের পর দ্বিতীয় দল হিসেবে ব্যাক টু ব্যাক বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন দেখতেই পারে ফ্রেঞ্চরা।

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link