মেসির রূপান্তর

ব্যক্তি এবং খেলোয়াড় লিওনেল মেসিকে যারা প্রথম থেকে ফলো করেছেন, তাঁরা জানেন যে মেসি সময়ের সাথে তার টেকনিক্যাল এবং ট্যাক্টিকাল অ্যাট্রিবিউট বেশ পরিবর্তন করেছে। সেই সাথে যে বিষয়গুলো নিয়ে সে সমালোচনার স্বীকার হতো প্রতিটা যায়গায়ই অসাধারণ রিডেম্পশন দেখাতে পেরেছে। ব্যাক্তিগতভাবে আমি মনে করি লিও মেসির এই রিডেম্পশনে সব থেকে ইনফ্লুয়েনশিয়াল ব্যাপার ছিল তাঁর বিশ্বকাপগুলোর ব্যর্থতার পেছনে।

২০১০ বিশ্বকাপের সময় লিওনেল মেসি ছিলেন ওই সময়ের সব থেকে লিথাল ফিনিশারদের একজন। বিশ্বকাপের আগে পুরো মৌসুমে ৪৭ গোল করে আসা লিও মেসি বিশ্বকাপ আসরে গোল পায়নি। ম্যারাডোনা দলে যথেস্ট ভালো মেকার দের বাদ দিয়ে তখন পুরোদস্তুর উইংগার মেসিকে প্লে মেকার খেলানোর চেষ্টা করে। যে ব্যাকফায়ার করে। যদিও এই ওয়ার্ল্ড কাপ একজন নতুন মেসির জন্ম দেয়। যেই মেসি আউটসাইড দা বক্স গোল এবং শট, এসিস্ট সব সকল প্লে মেকিং ক্রাইটেরিয়া ইম্প্রুভ করা শুরু করে।

২০০৯/১০ পর্যন্ত মেসির আউটসাইড দা বক্স গোল সংখ্যা ছিলো ৮ টা। ওয়ার্ল্ড কাপের পর মেসি এক সিজনেই আউট সাইড বক্স গোল করে ১০ টা। এরপর এই গ্রাফ সে সব সময় মেইনটেইন করেছে। অ্যাসিস্ট নাম্বার, কি পাস, প্লে মেকিং সহ সব ক্রাইটেরিয়ায় ঠিক এভাবেই ইম্প্রুভ হয়েছে ১০ এর পরেই।

২০১৪ এর ফাইনালের ঠিক শেষ মুহুর্তে মেসি ফ্রি-কিক পান, যেটা তিনি কাজে লাগাতে পারেননি। এবং এই বিশ্বকাপের পর দ্যা ফ্রিকিক মাস্টার মেসির জন্ম হয়। ২০১৪ পর্যন্ত মেসির ফ্রিকিক গোল ছিলো ১৮ টা। ২০১৪ থেকে ২২ এই ৮ বছরে মেসি ৪৪ টা ফ্রি কিক স্কোর করে। যার ভেতর কোপা সেমি, কোপা কোয়ার্টার, উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালের মত জায়গায় ফ্রি-কিক থেকে স্কোর ছিল।

২০১৮ তে সাম্পাওলির সেচ্ছাচারিতা এবং এলোমেলো টিম সিলেকশন সহ টিমের আন্সটেবল কন্ডিশনে আর্জেন্টিনা প্রচুর ভোগে। এবং এরপরেই দ্যা আল্টিমেট লিডার মেসির জন্ম হয়। মেসি ২০১৯ সালে যেভাবে ড্রেসিং রুম মোটিভেট করেছে, এই ব্যাচের প্লেয়ারদের অন এবং অফ দ্য ফিল্ড যেভাবে মোটিভেট করেছে এগুলো ১৮ এর ম্যাসাকার এর পর ই শুরু হয়েছিলো। এর আগে ও মেসি এগুলো করেনাই তা না। কিন্ত টিমের উপর আল্টিমেট কন্ট্রোল এরকম ১৮ এর ম্যাসাকার এর পর তৈরি হয়।

২২ এর ওয়ার্ল্ড কাপ এর পোল্যান্ড ম্যাচের পর মেসির পেনাল্টি স্কিল আনরিয়েল ইম্প্রুভ করছে। এরপর মেসি তিনটা পেনাল্টি এবং দুইটা টাইব্রেকার পেনাল্টি স্কোর করছে যেগুলো প্রতিটা নক আউটে। ইনক্লুডিং ফাইনাল ম্যাচ। মেসির ক্যারিয়ারের স্কিলে আসলে পুর্ণতার কিছু নাই-ই। কিন্ত এই বুড়ো বয়সে টুং টাং হচ্ছিলো পেনাল্টি নিয়ে এইটার সমাপ্তি আসা করি এই বিশ্বকাপ দিয়ে হয়ে যাবে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link