৩ দিন আগে শেষ হওয়া চট্টগ্রাম টেস্টে ছিলেন ম্যাচ সেরা খেলোয়াড়। ক্যারিয়ার সেরা ম্যাচ ফিগারে ৮ উইকেট শিকার করে বাংলাদেশকে ১৮৮ রানে হারানোয় বড় অবদান রেখেছিলেন কুলদীপ যাদব। কিন্তু সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টেই একাদশ থেকে বার পড়লেন এই ‘লেফট আর্ম চায়নাম্যান’। এমন অবিশ্বাস্য সিদ্ধান্তে বেশ চটেছেন হয়েছেন ভারতীয় কিংবদন্তি সুনীল গাভাস্কার।
চট্রগ্রামের ফ্ল্যাট উইকেটেও কুলদীপ যাদবকে খেলতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছিলো বাংলাদেশ ব্যাটারদের। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের ব্যাটিং ধ্বসের অন্যতম রূপকার এই কুলদীপ শিকার করেন ৫ উইকেট। এরপর দ্বিতীয় ইনিংসেও করেন দারুণ বোলিং করেন কুলদীপ। শিকার করেন ৩ উইকেট। চট্টগ্রামে ক্যারিয়ার সেরা ম্যাচ ফিগারে ১১৩ রানে পান ৮ উইকেট।
কিন্তু সিরিজের দ্বিতীয় এবং শেষ টেস্টেই কুলদীপকে বসিয়ে একাদশে নেয়া হয় বাঁহাতি পেসার জয়দেভ উনাদকাতকে। এমন সিদ্ধান্তে রীতিমতো অবাক সুনীল গাভাস্কার এবং ভারতের নারী দলের সাবেক অধিনায়ক এবং বর্তমান ধারাভাষ্যকার আঞ্জুম চোপরা।
ম্যাচ চলাকালীন ধারাভাষ্য কক্ষেই গাভাস্কার বলেন, ‘একজন ম্যাচসেরা খেলোয়াড়কে বাদ দেয়া অবিশ্বাস্য। এই শব্দটিই আমি ব্যবহার করতে পারে ভদ্রভাবে। আমি আরো কঠিন শব্দ ব্যবহার করতে চেয়েছিলাম কিন্তু এটি সত্যিই অবিশ্বাস্য যে আগের ম্যাচেই প্রতিপক্ষের ২০ টি উইকেটের মধ্যে ৮ টি উইকেট পাওয়া ম্যাচ সেরা খেলোয়াড়কে আপনি বাদ দিয়েছেন।’
টসের সময় ভারত অধিনায়ক লোকেশ রাহুল বলছিলেন, মিরপুরের ২২ গজ তার কাছে অনেকটাই বিভ্রান্তিকর। কিন্তু ভারতে ‘লিটল মাস্টার’ হিসেবে খ্যাত সুনীল অবশ্য এ কথার সাথেও একমত হতে পারেননি কুলদীপকে বাদ দেবার ক্ষেত্রে, ‘আপনার দলে দুইজন স্পিনার আছে। আপনি স্বাভাবিকভাবেই তাদের একজনকে বাদ দিতে পারতেন। কিন্তু এই ছেলেটা যে ৮ উইকেট পেয়েছে তাকে দলে খেলানো উচিত ছিলো পিচের অবস্থা যেমনই হোক।’
চট্রগ্রাম টেস্টে ব্যাট হাতেও অবদান রেখেছিলেন কুলদীপ যাদব। প্রথম ইনিংসে লোয়ার অর্ডারে নেমে ৪০ রান করেন তিনি। ভারতীয় ম্যানেজমেন্টের কুলদীপকে বাদ দেবার এমন সিদ্ধান্তকে অদ্ভুত বলছেন ভারতের নারী দলের সাবেক অধিনায়ক আঞ্জুম চোপড়া।
‘৩ আগেই ভারতের সর্বশেষ টেস্ট জয়ের ম্যাচ সেরা খেলোয়াড় কুলদীপকে বাদ দিয়ে ৩য় পেসার হিসেবেবজয়দেভ উনাদকাতকে নেয়া হলো। অদ্ভুত তবে কৌশলগত সিদ্ধান্ত।’ আগের টেস্ট জয়ের পর বোলিং এর কারণে ম্যাচ সেরা হলেও কুলদীপের ব্যাটিং এর প্রসংশা করেছিলেন আঞ্জুম।
ভারতের হয়ে চার টেস্ট খেলা দোদ্দা গণেশও বেশ সমালোচনা করেছেন টিম ম্যানেজমেন্টের এমন সিদ্ধান্তের, ‘সবসময় কুলদীপের সাথেই কেন এমনটা হয়? তার সাথে আপনি বারবার এমনটা করতে পারেন না। অনুগ্রহ করে তার কাঁধে কেউ হাত রেখে বলুন আশাহত না হতে। কুলদীপ যাদব হওয়া আসলেই খুব কঠিন।’
গত ম্যাচে কুলদীপকে খেলতে হিমশিম খাওয়া বাংলাদেশ ব্যাটারদের দেখে আরো আফসোসে পুড়ছেন গণেশ, ‘যেভাবে গত টেস্টে বাংলাদেশের ব্যাটাররা সংগ্রাম করেছে কুলদীপকে খেলতে, তা এই সিদ্ধান্তকে আরো নির্বোধ প্রমাণ করে। আপনি আপনার ম্যাচসেরা খেলোয়াড়কে বেঞ্চে বসিয়ে রাখবেন?’
গতকাল ভারতের একাদশ ঘোষণার পরেই সমস্ত আলোচনা কেন্দ্রীভূত হয়েছে কুলদীপ যাদবকে নিয়ে। ভারতের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে এ নিয়ে চলছে বিস্তর সমালোচনা। রাহুল দ্রাবিদ, লোকেশ রাহুলদের এমন সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেননি ভারতের সাবেক খেলোয়াড় এবং ক্রিকেট বিশ্লেষকরা।