ফিরছেন আমির, কিন্তু কবে?

দীর্ঘদিন পর পুনরায় পাকিস্তান জাতীয় দলের দরজা খুলতে যাচ্ছে বাঁ-হাতি পেসার মোহাম্মদ আমিরের জন্য। দুদিন আগে ন্যাশনাল হাই পারফরম্যান্স সেন্টারে দেখা যায় এই পেসারকে। ধারণা করা হচ্ছে খুব শীঘ্রই জাতীয় দলে ডাক পেতে যাচ্ছেন এই পেসার। 

ম্যাচ ফিক্সিং কান্ডে পাঁচ বছর নিষিদ্ধ থাকার পর জাতীয় দলে ফিরেছিলেন আমির। কিন্তু এহসান মানি ক্রিকেট বোর্ড সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করলে ২০১৮ সালে দল থেকে বাদ পড়েন এই তারকা পেসার। এরপর এহসান মানির আসনে রমিজ রাজা এলেও আমিরের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটেনি। 

কিন্তু গত সপ্তাহে আমূল পরিবর্তন আসে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডে। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সরাসরি হস্তক্ষেপে পদচ্যুত হন রমিজ, তাঁর স্থলাভিষিক্ত হন সাবেক সভাপতি নাজাম শেঠি। মূলত তিনি দায়িত্ব পাবার পরই আমিরের দলে ফেরার গুঞ্জন জোরালো হয়। আমির জানিয়েছেন তিনি বোর্ড সভাপতির সাথে কথা বলেই হাই পারফরম্যান্স সেন্টারে এসেছেন এবং জাতীয় দলে ফেরাকে পাখির চোখ করছেন। 

পাকিস্তানের ক্রিকেটে মোহাম্মদ আমিরের উত্থান হয়েছিল ধূমকেতুর মত। শোয়েব আকতার, ওয়াসিম আকরামদের উত্তরসূরি আমির আবির্ভাবেই জানান দিয়েছিলেন নিজের প্রতিভার। কিন্তু ২০১০ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে লর্ডস টেস্টে দুই সতীর্থ সালমান বাট এবং মোহাম্মদ আসিফের সাথে মিলে জড়িয়ে পড়েন ফিক্সিংয়ের সাথে। বাকি দুইজন জাতীয় দলে আর ফিরতে না পারলেও আমির ঠিকই ফিরেছিলেন পাঁচ বছরের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে। 

২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ের পেছনেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান ছিল আমিরের। বিশেষ করে ফাইনালে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের বিপক্ষে ছিলেন অপ্রতিরোধ্য। দারুণ গতি আর সুইংয়ে একাই গুঁড়িয়ে দেন ভারতের টপ অর্ডার। পারফরম্যান্স মন্দ না হলেও ২০১৮ সালে এহসান মানি বোর্ডপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পাবার পর জাতীয় দল থেকে বাদ পড়েন আমির। মানির বোর্ড চাইছিল না ফিক্সিংয়ের সাথে জড়িত ছিল এমন কাউকে জাতীয় দলে দেখতে।

এছাড়াও সেই সময়টাতে টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নেন আমির। জাতীয় দল থেকে বাদ পড়ার ক্ষেত্রে অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছিল সেই সিদ্ধান্তও। এরপর রমিজ রাজা আসলেও আমিরের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটেনি। তাছাড়া সেই সময়টাতে শাহীন শাহ আফ্রিদি, হারিস রউফ, নাসিম শাহদের আবির্ভাবে জাতীয় দলের দরজাটা এক প্রকার বন্ধই হয়ে যায় তাঁর জন্য। তাদের নিয়েই ২০১৯ বিশ্বকাপ কিংবা ২০২০ এবং ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দল সাজিয়েছে পাকিস্তান। এছাড়া ওয়াহাব রিয়াজ, হাসান আলিদের মত অভিজ্ঞরা তো ছিলেনই। 

কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে শাহীন, নাসিমদের ইনজুরিতে ভালই ভুগতে হয়েছে পাকিস্তানকে। তবে আমিরের প্রত্যাবর্তনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছেন নাজাম শেঠি। সদ্য নিয়োগ পাওয়া শেঠির সাথে তাঁর সুসম্পর্কের কথা কারোরই অজানা নয়।

শেঠির নিয়োগের পরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছেন আমির। তিনি লিখেন, ‘সঠিক কাজের জন্য উপযুক্ত লোক। অভিনন্দন নাজাম শেঠি স্যার।’

আমিরের জাতীয় দলে প্রত্যাবর্তন তাই সময়ের অপেক্ষা কেবল। তবে শীঘ্রই জাতীয় দলের খেলা না থাকায় আমির উড়াল দেবেন বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে। এবারের বিপিএলে তাঁকে দলে ভিড়িয়েছে মাশরাফি বিন মর্তুজার নেতৃত্বাধীন সিলেট স্ট্রাইকার্স। এখন দেখার বিষয় বিপিএলে পারফর্ম করে জাতীয় দলে ফেরার দাবিটা আরো জোড়ালো করতে পারেন কিনা ৩০ বছর বয়সী এই পেসার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link