রংপুর রাইডার্স এক করেছে দুই অলরাউন্ডার শোয়েব মালিক ও সিকান্দার রাজাকে। দুজনই এবার বিপিএল খেলতে এসেছেন ফ্র্যাঞ্চাইজিটির হয়ে। শোয়েব মালিকের সাথে অনুশীলনের একটি ছবিও নিজের ইনস্টাগ্রামে দিয়েছেন সিকান্দার রাজা। সেখানে লিখেছেন, ‘একজন ভাই, বন্ধু এবং শিক্ষক।’
রাজার বলা শেষ শব্দটা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। একজন ভাই, বন্ধু, ক্রিকেটার, অলরাউন্ডার এসব পরিচয় ছাপিয়ে শোয়েব মালিক হয়ে উঠেছেন শিক্ষক। পাকিস্তানের এই ক্রিকেটার নিজেকে নিয়ে গিয়েছেন কিংবদন্তীদের কাতারে। তবে ৪০ বছর বয়স পেড়িয়ে যাওয়া শোয়েব মালিক এখন এক অনুপ্রেরণাও।
বয়সটা তাঁর চল্লিশ পেড়িয়ে গিয়েছে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছে ১৯৯৯ সালে। অথচ এখনো সর্বোচ্চ পর্যায়ের ক্রিকেটে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। এখনো তাঁর স্পোর্টসম্যানশিপ শিক্ষনীয় হয়ে থাকছে অন্য ক্রিকেটারদের জন্যও।
এই বয়সেও শুধু খেলার জন্য খেলছেন না। নিজের সর্বোচ্চটা দিয়েই ব্যাট-বল হাতে মাঠে নামেন। এই বয়সেও শরীরে মেদ জমেনি এতটুকুও। মালিকের ফিটনেসই বোধহয় তাঁর সবচেয়ে বড় শক্তি। শেখার আছে তাঁর পরিশ্রম করার মানসিকতা থেকেও।
এই যেমন দিন দুয়েক আগের কথা। দেশে শৈত প্রবাহ চলছে। সকাল গড়িয়ে দুপুর হয়ে গেলেও সূর্যের দেখা নেই। কুয়াশার জন্য কিছু দেখাই দায়। এরপর রংপুরের অনুশীলন আবার তাঁদের নিজস্ব গ্রাউন্ডে। যেটা আবার ঢাকার একেবারে শেষপ্রান্তে। চারিদিকে খালি জায়গা। ফলে শীত আরো বেশি জেঁকে বসে। কুয়াশা আরো বেশি ঘন।
তবুও সবার আগেই অনুশীলনে শোয়েব মালিক। এর আগে প্রথম ম্যাচেও ৩৩ রানের কার্যকরী ইনিংস খেলেছিলেন। দলও জিতেছিল। ফলে একটি বিশ্রাম তো তিনি নিতেই পারতেন। সেটা তিনি করলেন না। পরিশ্রমটাই তাঁর একমাত্র মন্ত্র। মাঠে নেমে পড়লেন। ব্যাটিং করলেন নেটে। তাইতো সিকান্দার রাজা তাঁকে শিক্ষক বলে সম্বোধন করলেন।
শোয়েব মালিকের এই পরিশ্রম তো আর বৃথা যেতে পারে না। নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচেও তাই রংপুরের ভরসার এই মালিকই। আজও সিকান্দার রাজা রানের দেখা পাননি। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে রংপুর। একজনকে প্রয়োজন যে এখান থেকে রংপুরকে টেনে তুলতে পারে। ভালো একটা জায়গায় নিয়ে যেতে পারে।
সেই দায়িত্বটাই কাঁধে তুলে নিলেন মালিক। প্রথমে শুরু করলেন একেবারে দেখেশুনে। পালন করলেন অ্যাংকরের ভূমিকা। এরপর ইনিংসের শেষে হাত খুললেন। শেষ ওভারে বলে কয়ে বাউন্ডারি মারলেন।
মিরপুরের কঠিন উইকেটে কী করে টিকে থাকতে হয় দেখালেন। সেই উইকেট আবার কী করে কাজে লাগাতে হয় সেটাও দেখালেন। শোয়েব মালিকের এই ইনিংসটাও তো একটা ক্লাসের মতই। যেখানে শিক্ষক শুধু তিনি। আর সবাই তাঁর ছাত্র।
আজ ফরচুন বরিশালের শক্তিশালী বোলিং লাইন আপের বিপক্ষে মান বাঁচালেন তিনি। খেললেন ৫৪ রানের ইনিংস। ব্যাটিং করেছেন ১৫০ স্ট্রাইক রেটে। তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে ৫ টি চার ও ২ টি ছয়। একেবারে শেষ বল অবধি খেলে দলকে লড়াকু সংগ্রহ এনে দিলেন। তাঁর এমন ইনিংসে আগে ব্যাট করে ১৫৮ রান করতে পেরেছে রংপুর।