ঢাকা টু করাচি, উসমানের বার্তা

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের মত একটা ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টে খেলতে এসেছেন। অথচ এর আগে নিজ দেশে স্বীকৃত টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছিলেন মোটে ছয়টা। করাচি থেকে এমনই এক ব্যাটারকে খুঁজে এনেছিল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। দলটা এই আসরে অনেক ভুল করলেও, এই একটা সিদ্ধান্তে ভুল ছিল না এক আনাও।

বাংলাদেশে এসেই নিজের জাতটা চিনিয়ে দিয়েছিলেন। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের হয়ে দ্বিতীয় ম্যাচে খেলতে নেমেই তুলে নিয়েছিলেন সেঞ্চুরি। টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে নিজের প্রথম সেঞ্চুরি। খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে খেলেছিলেন ১০৩ রানের অপরাজিত ইনিংস। এরপর দলটার হয়ে পুরো আসর জুড়েই টুকটাক রান করে গিয়েছেন।

মজার বিষয় হচ্ছে , এই ফরম্যাটে উসমান যতগুলো ম্যাচ খেলেছেন তাঁর অর্ধেকেরও বেশি খেলেছেন চট্টগ্রামের জার্সি গায়েই। চট্টগ্রামের হয়ে আজ উসমান খেলতে নেমেছেন তাঁর নবম ম্যাচ। আর তাঁর টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে এটা পনেরো তম ম্যাচ। ইতোমধ্যেই নামের পাশে যুক্ত হয়েছে একটা সেঞ্চুরি।

অবশ্য বাংলাদেশে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ খেলতে আসার আগেও নিজের পাওয়ার হিটিং স্কিলের প্রমাণ দিয়েছিলেন উসমান। খেলে এসেছেন টি-টেন লিগে। ব্যাট হাতে ঝড় তুলেছিলেন সেই আসরেও। সে কারণেই উসমানের উপর এত ভরসা চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের।

পুরো আসর জুড়ে দলটার হয়ে ওপেন করেছেন পাকিস্তানের এই ক্রিকেটার। আজ বিপদে আরেক বার দলের হাল ধরলেন তিনি। সাথে পেয়েছেন বাংলাদেশের আরেক ব্যাটার আফিফ হোসেন ধ্রুবকে। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে আজ শুরুতেই টালমাটাল দলটা।

ওপেনার মেহেদী মারুফ ফিরে গিয়েছেন রানের খাতা খোলার আগেই। এরপর আরেক বিদেশি খোয়াজা নাফে করতে পেরেছেন মাত্র দুই রান। ইনিংসের শুরুতেই কুমিল্লার স্পিনার তানভীর ইসলামের জোড়া আঘাত। মিরপুরের উইকেটে চট্টগ্রামকে ভালোই চেপে ধরেছিল কুমিল্লা।

 

তবে সেই আবহ বেশিক্ষণ ধরে রাখতে দিলেন না উসমান। আফিফকে সাথে নিয়ে গড়ে তুললেন প্রতিরোধ। পাওয়ার প্লের আঘাত সামলে ঘুড়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলেন। আফিফের সাথে সিঙ্গেলস, ডাবলস নিয়ে রানের চাকা সচল রাখলেন। ছয় রানে দুই উইকেট হারিয়ে ফেলা চট্টগ্রাম আবার ম্যাচে ফিরল এই দুজনের ব্যাটে চড়ে।

দুজনে মিলে তৃতীয় উইকেট জুটিতে যোগ করলেন ৮৮ রান। শুরুর ধাক্কা সামলে পরে ব্যাটও চালিয়েছেন পাকিস্তানের এই ক্রিকেটার। চড়াও হয়েছেন কুমিল্লার বোলারদের উপর। তুলে নিয়েছেন আরেকটা অর্ধশতক।

সবমিলিয়ে, এই ব্যাটার ৪১ বল থেকে করেছেন ৫২ রান। তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে ৪ টি চার ও ৩ টি ছয়। ব্যাটিং করেছেন ১২৬.৮২ স্ট্রাইকরেটে। মিরপুরের উইকেটে আর যে পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে উসমান এই ইনিংস খেলেছেন তা একেবারে সহজ ছিল না। আউট হয়ে ফিরে যাওয়ার আগে দলকে রেখে গিয়েছেন শক্ত অবস্থানে।

তাঁর এই ইনিংসের কারণের শক্ত ভীত পেয়েছে চট্টগ্রাম। পরে ব্যাট চালিয়ে খেলতে পেরেছেন আফিফ হোসেব ধ্রুবও। উসমান আউট হলেও ব্যাট হাতে লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন আফিফ। তিনিও তুলে নিয়েছেন নিজের অর্ধশতক।

এই দুজনের ব্যাটিং দৃঢ়তায় দারুণ ভাবে ম্যাচে ফিরে এসেছে চট্টগ্রাম। ছয় রানে দুই উইকেট হারিয়ে ফেলার পরেও বড় সংগ্রহ করতে পেরেছে। আর উসমান খান এই ইনিংসের মাধ্যমে আরেকবার বার্তা দিলেন নিজের দেশকে। যেখানে তিনি ম্যাচ খেলার সুযোগটাই ঠিকঠাক কখনো পাননি। এবার দেশে ফিরলে নিশ্চয়ই পাবেন তিনি।

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link