উমরান বিতর্কের তর্কে ভারত-পাকিস্তান

ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যকার রাজনৈতিক বৈরিতার প্রভাব আছে মাঠের খেলাতেও। সমর্থকেরা তো বটেই মাঝে মধ্যেই দুই দেশের ক্রিকেটাররা জড়িয়ে পড়েন বাক বিতণ্ডায়। এবারেই যেমন পাকিস্তানের সাবেক পেসার সোহেল খান ভারতের উদীয়মান তারকা উমরান মালিককে কটাক্ষ করেন। এবারে সেই আগুনে যেন নতুন করে ঘিঁ ঢাললেন ভারতের আরেক তারকা ইরফান পাঠান।

২০১৫ বিশ্বকাপের ম্যাচে বিরাট কোহলির সাথে তর্কে জড়িয়ে আলোচনায় এসেছিলেন পেসার সোহেল খান। সেবারে কোহলির সাথে তাঁর বাপ-বেটা স্লেজিং মাঠের বাইরে আলোচনার খোরাক জুগিয়েছিল। আট বছর বাদে এবারে সোহেল মন্তব্য করেন উমরান মালিককে নিয়ে। এক পডকাস্টে তিনি বলেন উমরানের মতো বোলার পাকিস্তানের ঘরোয়া ক্রিকেটে অহরহ দেখা যায়। 

তিনি বলেন, ‘কেবলমাত্র বোলিং মেশিনই শোয়েব আখতারের গতির রেকর্ড ভাঙতে পারবে। কোনো মানুষের পক্ষে সেটা ভাঙা সম্ভব না। মরান ভালো বোলার, আমি ২-১ ম্যাচে তাঁকে বল করতে দেখেছি। সে জোরে বল করতে পারে। তবে যদি নিয়মিতভাবে ১৫০-১৫৫ কিমি গতির বোলারদের কথা বলা হয়, তবে আমি এখনই পাকিস্তানের ঘরোয়া ক্রিকেটে টেপ টেনিসে খেলে এমন ১০-১৫ জনের নাম বলতে পারবো। লাহোর কালান্দার্সের ট্রায়ালে গেলেই আপনি প্রচুর বোলার দেখতে পাবেন।’

তিনি আরো বলেন, ‘উমরানের মত বোলারের অভাব নেই আমাদের ঘরোয়া ক্রিকেটে। আমাদের ঘরোয়া ক্রিকেট পার করে যখন কেউ জাতীয় দলে সুযোগ পায়, তখন সে নিজ যোগ্যতা দিয়েই আসে। শাহিন শাহ আফ্রিদি, হারিস রউফ, নাসিম শাহ – সবাই নিজেদের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েই এসেছে। আমি এরকম আরো বেশ কয়েকজনের নাম বলতে পারি।’

এরপরই মূলত নেটিজেনদের মাঝে সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। এক টুইটার ব্যবহারকারী লিখেন, ‘পাকিস্তানি ক্রিকেটাররা বলছে তাঁদের ঘরোয়া ক্রিকেটে উমরানের মত বহু বোলার আছে। এর আগে জাভেদ মিয়াদাদও ইরফান পাঠান সম্পর্কে এমনটা বলেছিল। এরপর সে পাকিস্তানে গিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছে সে কি করতে পারে। পাকিস্তানিদের উচিত কম কথা বলা।” সেই টুইটের জবাবে ইরফান পাঠান লিখেন, “তাঁরা এ ধরনের মন্তব্য করে মনোযোগ পেতে চায়। এদেরকে স্রেফ এড়িয়ে যান।’

মিয়াদাদের সেই মন্তব্যের ব্যাপারে জানতে হলে পিছিয়ে যেতে হবে প্রায় দুই যুগ। বড়ে মিয়া তখন পাকিস্তান জাতীয় দলের কোচ। সিরিজ শুরুর আগে ১৯ বছর বয়সী ইরফানের ব্যাপারে তিনি বলেন তাঁর মত বোলার পাকিস্তানের অলিতে গলিতে পাওয়া যায়। তরুণ ইরফান অবশ্য মুখে কিছু বলেননি, বল হাতেই জবাব দিয়েছেন। বাঁ-হাতি এই পেসার তিন ম্যাচে তুলে নেন ১২ উইকেট এবং ভারতও সিরিজ জেতে ২-১ ব্যবধানে।  

অন্যদিকে, তরুণ উমরান মালিক নজরে আসেন আইপিএলে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের হয়ে খেলার মাধ্যমে। এরপর ক্রমশই এগিয়ে চলা, অল্প সময়ের ব্যবধানেই সাদা বলের ক্রিকেটে জাতীয় দলের নিয়মিত মুখ হয়ে উঠেছেন তিনি। জোরে বল করতে জানেন বিধায় প্রায়শই শোয়েব আখতারের সাথে তুলনা করা হয় কাশ্মির থেকে উঠে আসা এই পেসারকে। ক্রিকেট বিশ্বের ধারণা শোয়েবের রেকর্ড কেউ ভাঙতে পারলে সেটা উমরানই পারবেন। 

যদিও এক সাক্ষাৎকারে উমরান জানিয়েছেন শোয়েবের রেকর্ড ভাঙার চাইতে বরং জাতীয় দলে নিজের জায়গা পাকাপোক্ত করতেই বেশি আগ্রহী তিনি। তিনি বলেন, “এই মূহুর্তে আমি কেবল জাতীয় দলের হয়ে ভালো খেলার কথাই ভাবছি। যদি আমি ভালো খেলি এবং ভাগ্যবান হই, তবে এমনিতেই রেকর্ড ভাঙতে পারবো। যদি না পারি তাতেও সমস্যা দেখছি না। আমি এ নিয়ে খুব বেশি ভাবছি না।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link