সজোরে স্ট্যাম্প বরাবর লাথি। দৃশ্যটা মনে আছে নিশ্চয়ই। হ্যাঁ, ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে সাকিব আল হাসান মঞ্চায়ন করেছিলেন তেমন এক দৃশ্য। সেটার পেছনে অবশ্য কারণ ছিল। আর তা বাজে আম্পায়ারিং। দেশের ক্রিকেটে আম্পায়ারিং ইস্যুটা বেশ প্রবল। মানসম্মত আম্পায়ারদের যেমন অভাব রয়েছে, ঠিক তেমনি রয়েছে সদিচ্ছার অভাব।
তাছাড়া দূর্নীতি পরায়ন হওয়ার বিষয়টিও একেবারে চোখের আড়াল করা যায় না। বরং সেটাই মুখ্য বিষয়। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে আম্পারদের প্রভাবশালী শক্তির সামনে মাথা নত করতেই হয়। তা যেন না করে, সেই টোটকাই দিচ্ছিলেন সাকিব তাঁর সাবেক সতীর্থকে। ফরচুন বরিশালের অনুশীলনে সাজিদুল ইসলামকে কাছে ডেকে নিয়ে সম্ভবত সার্বিক আম্পায়ারিং নিয়েই আলাপ করছিলেন সাকিব।
সাকিব খানিকটা দূর থেকেই বলে উঠলেন, ‘কিরে সাজিদ এবার বিপিএলে নাই তুই?’ অপরপ্রান্ত থেকে সাজিদ উত্তর দিলেন, ‘না’। এরপরই নিজের দীর্ঘদিনের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের অভিজ্ঞতা থেকে সাকিব উপদেশ দিলেন, ‘আম্পায়ার কিন্তু নরম-টরম হলে হবে না।’ এরপরই স্মৃতিচারণ করতে শুরু করেন দুই সাবেক সতীর্থ। খোশ গল্প আর হাসি-ঠাট্টায় খানিকটা সময় কাটালেন দুইজনে মিলে।
সাজিদুল ইসলাম, একটা সময় ছিলেন পেশাদার ক্রিকেটার। এমনকি বাংলাদেশের হয়ে তিনটি টেস্ট ম্যাচও খেলেছিলেন সাজিদুল। তবে সেটা দীর্ঘ একটা সময় ধরে। কখনো তিনি থিতু হতে পারেননি জাতীয় দলে। বামহাতি এই পেসার তাই সময়ের খানিক আগেই নিজের ভবিষ্যৎ পেশা বেছে নিয়েছেন। তিনি ২০২১ সাল থেকেই ঘরোয়া ক্রিকেটের একজন পেশাদার আম্পায়ার।
একটা সময় সাকিবের সাথে খেলার স্মৃতিও রয়েছে তাঁর। সাকিব বরাবরই বেশ প্রতিবাদীদের একজন। ২০১৮ সালে নিদাহাস ট্রফির সেমিফাইনালেও তিনি আম্পায়ারদের কিছু পক্ষপাতি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ মাঠে বসেই জানিয়েছিলেন। তাছাড়া বহুবার তিনি ঘরোয়া ক্রিকেটে আম্পায়ারদের দিকে তেড়ে গিয়েছিলেন। সে কারণগুলো নিশ্চয়ই কারওই অজানা নয়।
তাইতো এক সময়কার সতীর্থকে আম্পায়ার হতে হলে ঠিক কতটা সুদৃঢ় মানসিকতার হতে হবে সে দীক্ষাটুকু দিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেন সাকিব। তিনি জানেন ঘরোয়া ক্রিকেটে আম্পায়ারদের চিত্রনাট্য পরিবর্তন করতে হলে সৎসাহসী মানুষ প্রয়োজন। সেটুকু দাবিই তিনি রাখলেন সাজিদুলের কাছে। কতশত ম্যাচের গতিপথ বদলে যায় আম্পায়ারদের ভুল সিদ্ধান্তে। উদীয়মান খেলোয়াড়দের স্বপ্নেও আঘাত হানে বাজে আম্পায়ারিং।
তরুণ ক্রিকেটারদের মাঠের ভেতর দাঁড়িয়ে আর্তনাদটাও দেখেছে দেশের ক্রিকেট। এই দেশকে যিনি ক্রিকেট দুনিয়াতে পরিচিত করেছেন, সেই সাকিব তাইতো একটু চিন্তিত দেশের ক্রিকেটের কাঠামো নিয়ে। সেদিক বিবেচনায় সাজিদুল ইসলামদেরকে শক্ত হতে পরামর্শ দিচ্ছেন তিনি।