অধিনায়ক হিসেবে তিনবার বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) শিরোপা জিতে গেছেন তিনি। তাঁর নেতৃত্বে খেলেছেন ফাফ ডু প্লেসিস, মঈন আলী, সুনীল নারাইনদের মত তারকা ক্রিকেটাররা। তিনি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের অধিনায়ক ইমরুল কায়েস। টানা দুবার দলকে শিরোপা জিতিয়ে, ও মোট তিনবার শিরোপা জিতে তিনি নিজের সাথে দলকেও নিয়ে গেছেন বিপিএল ইতিহাসের চূড়ায়।
বিপিএলে অধিনায়ক হিসেবে অনেক কিছুই অর্জন করেছেন তিনি। এই ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টের অন্যতম সফল অধিনায়কও তিনি। এবারো তাঁর নেতৃত্বেই কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স চলে এসেছে ফাইনাল অবধি। আর ফাইনাল ম্যাচে মাঠে নামার আগে তাই অধিনায়কের সাথে পরিকল্পনাটা সেরে নিচ্ছিলেন কুমিল্লার কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন।
অধিনায়ক হিসেবে ইমরুলের বন্দনা তো অনেক হল। তবে ব্যাট হাতে বিপিএলটা যে একেবারেই বাজে কেটেছে তাঁর। এবার দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেয়া বদলে যেন দলের বোঝাই হয়ে উঠেছেন। প্রায় কোন ম্যাচেই দলের জয়ে ভূমিকা রাখতে পারেননি। কুমিল্লার শক্তিশালী দলে অবশ্য সেটার বড় কোন প্রভাব পড়েনি।
কুমিল্লার হয়ে ব্যাট হাতে বড় দায়িত্ব পালন করছেন লিটন দাস। প্রায় প্রতি ম্যাচেই দলকে দারুণ শুরু এনে দিচ্ছেন। এছাড়া মোহাম্মদ রিজওয়ানও দলটার হয়ে খেলে গিয়েছেন। এছাড়া নাসিম শাহ, খুশদিল শাহরাও খেলেছেন কুমিল্লার হয়ে। টুর্নামেন্টের শেষ সময়ে আবার তাঁরা উড়িয়ে এনেছে মঈন আলী, আন্দ্রে রাসেল, সুনীল নারাইনদের।
এত এত তারকার ভিড়ে ইমরুল কায়েসের অফ ফর্ম হয়তো খুব একটা নজরে পড়েনি কারো। তবে ফাইনাল ম্যাচের আগে অধিনায়কের ফর্ম নিয়ে নিশ্চয়ই চিন্তায় থাকবে দলটা। তাইতো কোচ সালাউদ্দিন আলাদা করে কাজ করেছেন এই ব্যাটারকে নিয়ে। ইমরুল কায়েস নিজেও হয়তো তাঁর ফর্ম নিয়ে চিন্তিতই।
ফাইনালের আগে কুমিল্লার হয়ে ১৩ টি ম্যাচ খেলে ফেলেছেন ইমরুল কায়েস। তবে এখন পর্যন্ত একটা অর্ধশতকের দেখাও পাননি এই ব্যাটার। এই বিপিএলে সর্বোচ্চ ৩৫ রানের একটি ইনিংস খেলেছেন। এছাড়া ফাইনালের আগ পর্যন্ত পুরো টুর্নামেন্টে ব্যাটিং করেছেন মাত্র ১৮ গড়ে। ফলে মিডল অর্ডারে কুমিল্লার হয়ে নিজের কাজটা করতে পারেননি তিনি। ফাইনালেও তিনি ছিলেন ব্যাট হাতে একেবারেই ব্যর্থ।
তবে সিলেট স্ট্রাইকার্সের বিপক্ষে ফাইনাল জিততে হলে নিজেদের সেরাটাই দিতে হবে কুমিল্লাকে। নিজের সেরাটা খেলতে হবে অধিনায়ক ইমরুল কায়েসকেও। প্রথম তিন ম্যাচ হেরে টুর্নামেন্ট শুরু করা কুমিল্লা এরপর জিতেছে ফাইনাল সহ টানা ১১ টি ম্যাচ।
তবে ফাইনাল ম্যাচে কাজটা সহজ ছিল না দলটার জন্য। দারুণ ফর্মে ছিল দলটা। সিলেটের ঘরোয়া ক্রিকেটাররা ছিলেন ছন্দে। এছাড়া সিলেটের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজাও বিপিএলের সফলতম অধিনায়ক।
তিনিও, কখনো হারেননি বিপিএলের ফাইনাল ম্যাচ। এছাড়া মাশরাফির ছোঁয়ায় বদলে গিয়েছে সিলেটের চেহারা। অবশ্য মাশরাফির কুমিল্লাকে হারাতে বেগ পেতে হয়নি ইমরুলদের।
কোচ সালাউদ্দিন এই বিপিএলেই একবার বলেছিলেন, ‘এতগুলো শিরোপা যে জিতেছে, তার মধ্যে কিছু হলেও ব্যাপার আছে।’ হ্যাঁ, আপাতত সেই এক্স ফ্যাক্টরেই মজে আছে কুমিল্লা। ব্যাটার হিসেবে তিনি যতটাই সাদামাটা হন না কেন, অধিনায়ক হিসেবে তিনি অনন্য। অন্তত, কুমিল্লার ক্ষেত্রে সেটা প্রমাণিত ধ্রুব সত্য।