র্যাংকিংয়ে দুই দলের বিস্তর ব্যবধান। ইংল্যান্ড ২, আর বাংলাদেশ ৭। তার উপর লড়াইটা গত বারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন আর গ্রুপ পর্ব থেকেই বাদ পড়া একটি দলের মধ্যে। শক্তিমত্তায় যোজন যোজন ব্যবধান। তাই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আন্ডারডগ হয়েই মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ।
তবে মাঠে নামতেই যেন সব চিত্র পাল্টে গেল। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের উপর আধিপত্য বিস্তার করে আসলো জয়। ক্রিকেটীয় পরিভাষায় ক্লিনিক্যাল পারফরম্যান্স বলতে যেটি বুঝায়, ঠিক তেমন কিছুরই প্রতিফলন মিলল ম্যাচে। ব্যাটে, বলে- সব জায়গাতেই পূর্ণ আধিপত্য বিস্তার করে ম্যাচ জিতলো বাংলাদেশ।
এমন পূর্ণ আধিপত্য বিস্তার করে ম্যাচ জেতার পরে স্বাভাবিক ভাবেই খুশি টাইগার কাপ্তান সাকিব আল হাসান। ম্যাচ শেষে জানিয়েছেন নিজের প্রতিক্রিয়া। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বলেন, ‘যেভাবে আমরা খেলেছি তা দুর্দান্ত। ব্যাটিং কিংবা বোলিং, কোনো ইউনিটেই কেউ প্যানিক করেনি। সবাই শেষ পর্যন্ত নার্ভ ধরে রাখতে পেরেছে। ফিল্ডিংয়ে আমার ক্যাচ মিসটা বাদ দিলে আমরা বেশ ভালই করেছি। ব্যাটিং, বোলিংয়ে আমরা এমন সাহসী এপ্রোচই ধরে রাখতে চাই। আসলে টি-টোয়েন্টি ম্যাচে যত কম ভাবা যায়, ততই ভাল।’
আগামী ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজে। বাংলাদেশ দলটা যে সেই লক্ষ্যেই তৈরি হচ্ছে তা জানিয়ে সাকিব আরো বলেন, ‘আমরা ড্রেসিং রুমে দারুণ একটা পরিবেশ সৃষ্টি করার চেষ্টা করছি। এটা কেবল শুরু। আমরা আশা করছি, ধারাবাহিকতা রাখতে পারব। আগামী ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের চিন্তা করলে, আমরা এখান থেকেই শুরু করছি। এই শুরুটা এখন ধরে রাখতে হবে। আশা করছি, সামনের বিশ্বকাপ শুরুর মধ্যে আমরা টি-টোয়েন্টি একটা ভাল দল তৈরি করে ফেলতে সক্ষম হবো’।
ইংল্যান্ডের দেওয়া ১৫৭ রানের লক্ষ্য বাংলাদেশের জন্য তাড়া করতে সহজ হয়েছে মূলত নাজমুল হোসেন শান্ত’র আক্রমণাত্বক ব্যাটিংয়ে। এ ম্যাচে শুরু থেকেই আগ্রাসী ভূমিকায় ব্যাট করতে দেখা যায় তাঁকে। মার্ক উডের এক ওভারে টানা চারটি চার মারেন তিনি। এরপর আক্রমণাত্বক ব্যাটিং এপ্রোচেই তুলে নেন নিজের ব্যক্তিগত অর্ধশতক। তাঁর ৩০ বলে ৫১ রানের ঝড়ো ইনিংসই ম্যাচের গতিপথ বদলে দেয়। তাই বাংলাদেশের এমন জয়ে ম্যাচসেরার পুরস্কারও উঠেছে এ বাঁ-হাতি ব্যাটারের হাতে।
তবে শান্ত ম্যাচ জয়ের কৃতিত্ব দিয়েছেন পেসারদের। ম্যাচ শেষে ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার নিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘তৌহিদ ঐ সময় দারুণ খেলছিল। আর ঐটাই সব সহজ করে দিয়েছে। আর শুরু থেকেই আমি শুধু ক্রিকেটিং শটের দিকে নজর দিয়েছি। আমি উইকেটের কথা চিন্তাই করিনি। আমি সাধারণভাবে ব্যাট করেছি শুধু। কাজটা সহজ করে দিয়েছে মূলত আমাদের বোলাররা। তাসকিন, হাসান, মুস্তাফিজ- সবাই দুর্দান্ত বল করেছে। তাছাড়া রনি, লিটন- এরা শুরুটা ভাল এনে দিয়েছে। যেটা আমার ব্যাটিংয়ে খুব সাহায্য করেছে।’