কলকাতার নাইট রাইডার্স যারা

২০১২ এবং ২০১৪ মৌসুমে গৌতম গম্ভীরের নেতৃত্বে আইপিএলের শিরোপা জিতেছিল কলকাতা নাইট রাইডার্স। গত মৌসুমে অবশ্য নতুন অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ারের অধীনে অম্লমধুর এক টুর্নামেন্ট কাটিয়েছে নাইট রাইডার্সরা। ১৪ ম্যাচে ছয় জয় আর আট হারে বিদায় নিয়েছিল শেষ চারের আগেই। এবারের মৌসুমে তাই নয় বছর বাদে শিরোপা জিততে মরিয়া দলটি। 

২০২৩ আইপিএল শুরুর আগেই অবশ্য দুঃসংবাদ পেয়েছে দলটি, ইনজুরির কারণে অধিনায়ক আইয়ার ছিটকে গেছেন টুর্নামেন্টের শুরুর ম্যাচগুলোর জন্য। আসুন দেখে নেয়া যাক, এবারের মৌসুমে কারা হতে পারেন কলকাতার তুরুপের তাস।  

  • শার্দুল ঠাকুর

প্রথমবারের মতো কলকাতা নাইট রাইডার্সের জার্সিতে দেখা যাবে অলরাউন্ডার শার্দুল ঠাকুরকে। বিগত দলবদলের সময়ে দিল্লি ক্যাপিটালস থেকে তাঁকে দলে টেনেছে কলকাতা। ৩১ বছর বয়সী এই অলরাউন্ডার বোলিংয়ের পাশাপাশি শেষদিকে নেমে ব্যাট হাতে ঝড় তুলতেও সমান পটু। সর্বশেষ, আইপিএলে দিল্লির হয়ে ১৪ ম্যাচ ১৫ উইকেট শিকার করেন শার্দুল।

এবারের মৌসুমে নতুন দলে তাই শাদুর্লের কাঁধে বিশাল দায়িত্ব। টিম সাউদি, আন্দ্রে রাসেল, লকি ফার্গুসন, উমেশ যাদবদের পাশাপাশি তাঁর অন্তর্ভুক্তি কলকাতার পেস বোলিং লাইন আপকে আরো শক্তিশালী করে তুলবে।

এছাড়া শেষদিকে, নেমে ম্যাচ শেষ করে আসার ক্ষমতার জানান দিয়েছেন অতীতেও এই তারকা। সফল এক মৌসুম কাটাতে তাই কলকাতার জন্য শার্দুলের জ্বলে ওঠার বিকল্প নেই। 

  • রিঙ্কু সিং

২০২২ সালের আইপিএল মৌসুমে কলকাতার সবচেয়ে বড় আবিস্কার ছিল রিঙ্কু সিং। মিডল অর্ডারে নেমে বিধ্বংসী সব ইনিংস খেলে সমর্থকদের মন জিতে নিয়েছিলেন এই ব্যাটসম্যান। বিশেষ করে লক্ষনৌ সুপার জায়ান্টসের বিপক্ষে তাঁর ১৫ বলে ৪০ রানের ইনিংস প্রশংসা কুড়িয়েছিল গোটা বিশ্বের। এবারের মৌসুমেও রিংকু চাইবেন গত বারের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে। 

২০২২-২৩ মৌসুমে ঘরোয়া ক্রিকেটে উত্তরপ্রদেশের হয়ে দারুণ ফর্মে ছিলেন এই তারকা। বিজয় হাজারে ট্রফিতে নয় ম্যাচে ১০৩ স্ট্রাইকরেটে চার ফিফটিতে সংগ্রহ করেন ৩৩৫ রান। এছাড়া রঞ্জি ট্রফিতেও এই ব্যাটার ছিলেন স্ব-মহিমায় উজ্জ্বল। সাত ম্যাচে দুটো করে শতক এবং অর্ধ-শতকে ৪৪২ রান করে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন রিংকু।  

  • নিতিশ রানা 

২০১৮ সালে কলকাতা নাইট রাইডার্সের শিবিরে নাম লেখানোর পর থেকেই দলের অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়েছেন নিতিশ রানা। ২০২১ আইপিএল নিলামের আগে ছেড়ে দিলেও নিলামে ঠিকই আট কোটি রুপির বিনিময়ে দলে ভেড়ায় তাঁকে। কলকাতার হয়ে পাঁচ মৌসুমে মাঠে নেমে বেশ কয়েকটি ম্যাচ একা হাতে জিতিয়েছেন এই তারকা। 

গত মৌসুমে ১৪ ম্যাচে ৩৬১ রান করে দলের পক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন তিনি। এছাড়া সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ এবং দিল্লি ক্যাপিটালসের নিকট ম্যাচ হারলেও রানার ফিফটি নজর কেড়েছিল ক্রিকেটবোদ্ধাদের। তাঁর সামর্থ্য এবং রেকর্ড বিবেচনায় এবারের মৌসুমেও তাঁর দিকে তাকিয়ে থাকবে কলকাতা ম্যানেজমেন্ট। 

ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট মুশতাক আলী ট্রফিতেও দিল্লীর হয়ে ব্যাট হাতে দারুণ ফর্মে ছিলেন রানা। আট ম্যাচে প্রায় ১৪০ স্ট্রাইকরেটে এক সেঞ্চুরির পাশাপাশি ৩১৭ রান করে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন তিনি। সেই ফর্মটা আইপিএলেও টেনে আনতে চাইবেন এই তারকা। 

  • লিটন দাস

এবারের আসরে সাকিব আল হাসানের পাশাপাশি দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে কলকাতা নাইট রাইডার্সের জার্সি গায়ে জড়াবেন লিটন দাস। বিগত বছর থেকেই ব্যাট হাতে দারুণ ফর্মে আছেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান। 

বিশেষ করে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে ২৭ বলে ৬০ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেন এই তারকা। বাংলাদেশ সেদিন ম্যাচ হারলেও প্রশংসা কুড়িয়েছিল লিটনের ব্যাটিং।

কলকাতা তাই ভিত্তিমূল্য ৫০ লক্ষ রুপিতে লিটনকে দলে ভেড়াতে দুবার ভাবেননি। নিজের প্রথম আইপিএল আসরটা স্মরণীয় করে রাখতে নিশ্চিতভাবেই মুখিয়ে থাকবেন এই ব্যাটসম্যান। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link