টেস্টের তামিমও ঝুঁকিতে!

কিছুদিন ধরেই তাঁর ব্যাট যেন হাসতে ভুলে গেছে। অনেকটা অভিমানেই ছেড়েছেন টি-টোয়েন্টি। সংক্ষিপ্ত এই ফরম্যাটে মানাতেও পারছেন না। ওয়ানডেতে অধিনায়কত্বের পাশাপাশি টেস্ট দলের নিয়মিত সদস্য তিনি। যদিও, তাঁর ওয়ানডে ব্যাটিং স্ট্রাইক রেট বলছে ভিন্ন কথা। টেস্ট ক্রিকেটে তার ওপর এখনও ভরসা রাখছেন কোচ চান্দিকা হাতুরুসিংহে। বলছি বাংলাদেশের ওপেনার ব্যাটার তামিম ইকবালের কথা ।

ওয়ানডেতে শেষ দশ ইনিংশে তার ব্যাট থেকে আসেনি বলার মত কোন ইনিংস। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিনি ব্যর্থ হয়েছেন । এ সিরিজে তার ব্যাট থেকে সর্বোচ্চ এসেছে ৪১ রান। সর্বশেষ সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন ২০২১ সালে হারারেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে।

এই মুহূর্তে তার ওয়ানডে ব্যাটিং স্ট্র্রাইক রেট ৭৮.৫৭ যেটা কোনভাবেই একজন আদর্শ ওপেনারের সাথে যায় না। নিজেদের কন্ডিশনেও সুবিধা করতে না পারায় তিনি হয়েছেন সমালোচিত । প্রায় বছর দুই হল দলের ওপেনারের কোনো সেঞ্চুরি নেই, ভাবা যায় ?

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ঘরের মাঠ তিনি রান পাচ্ছিলেন না। ইনজুরিতে খেলতে পারেনি ভারতের বিপক্ষেও। বলার মতো কেবল আগস্টে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই ম্যাচে দু’টো ফিফটি করলেও দল হেরেছে বাজেভাবে। এর আগে অবশ্য ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে একটা হাফ সেঞ্চুরি করেন এই ব্যাটার।

অন্যদিকে, টেস্টে তামিমের গত ছয় ইনিংসের ব্যাটিং দেখলেও মোটেই সন্তুষ্ট হওয়া যায় না। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে একটি সেঞ্চুরি করলেও পরের দুই ম্যাচে কোন রানই যোগ করতে পারেননি স্কোরবোর্ডে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজেও হয়েছেন ব্যার্থ।

বড় দলগুলোর বিপক্ষে সিরিজের আগে তামিম ইকবালের ইনজুরি এখন যেন নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা। এবারে ইংল্যান্ড সিরিজের আগেও বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) পিঠের চোটের কারণে খুলনা টাইগার্সের হয়ে শেষ দু’ম্যাচ খেলতে পারেননি এ ওপেনার। এর আগে বা-হাতের আঙুলের চোটে মিস করেন পাকিস্তানের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ টেস্ট সিরিজ।

বয়স এখন ৩৪ এর কোটায়। ব্যাটও আর আগের মতো হাসছে না। তামিম কি তাহলে ফুরিয়ে গেলেন?

আর ছয় মাস পরেই ওয়ানডে বিশ্বকাপ। একে তো বাংলাদেশ দলের সবচেয়ে পছন্দের ফরম্যাট হচ্ছে ওয়ানডে তার উপর এবার বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হবে ভারতে, তাই অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে বাংলাদেশ দলের সুযোগটা এবারে একটু বেশি।

কাগজে কলমে আপাতত তামিম ইকবালই ওয়ানডে অধিনায়ক। বিসিবি তাঁকে ঘিরেই বিশ্বকাপের সব পরিকল্পনা সাজিয়েছে। যদিও, আয়ারল্যান্ড সিরিজে মোটেও ছন্দে ফিরতে পারেননি তামিম। মাঠে তার পারফর্মেন্স নিয়ে চিন্তিত টিম ম্যানজমেন্ট। তামিম নিজেও জানেন পারফর্ম করতে না পারলে তার সেরা সেরা বিকল্প কিন্তু প্রস্তুতে আছে। আর কোচ হাতুরুসিংহে তো বলেই দিয়েছেন পারফর্ম করতে না পারলে দলে কেউই থাকতে পারবে না।

হাতুরুসিংহের এই কথাটা টেস্টের ক্ষেত্রে সত্য। গেল চার বছরে তামিমের সাদা পোশাকে সেঞ্চুরি মাত্র দু’টি। আর এর মধ্যে ইনজুরিজনিত কারণে অনেক সিরিজেই মাঠের বাইরে থাকতে হয় তাঁকে। আর এখন দলে ওপেনারদের যোগানও বেশ ভাল। এই মুহূর্তে তমিম তাই টেস্টেও আছেন ঝুঁকির মুখে। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষেও তাই বড় পরীক্ষাই দিতে হবে তাঁকে। একটা বড় ইনিংসই হয়তো এই যাত্রায় পরিস্থিতিটা সামলে নিতে পারবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link