চ্যাট জিপিটির চোখে বাংলাদেশের সেরা পাঁচ

চ্যাটজিপিটি এই তালিকায় কেবল পাঁচ জনের জায়গা হয়েছে। তথাকথিত পঞ্চপাণ্ডবের তিন জনকে চ্যাটজিপিটি মনে করে সর্বকালের সেরাদের তালিকায় থাকার উপযুক্ত। তবে এই তালিকায় নির্দ্বিধায় এসে যেতে পারতেন মোহাম্মদ রফিক কিংবা আবদুর রাজ্জাক।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নাকি একদিন পুরো বিশ্বকে গ্রাস করে নেবে! এই একটা সংশয় নিয়ে এগিয়ে চলছে প্রযুক্তিগত বিপ্লব। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে নানান রকমের কাজ করে। তার মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয়তা লাভ করেছে চ্যাটজিপিটি। প্রায় সকল প্রশ্নের উত্তর যেন এক লহমায় চোখের সামনে হাজির করে দিতে পারে।

সেই চ্যাটজিপিটিকে প্রশ্ন করা হয়, বাংলাদেশ ক্রিকেটের সর্বকালের সেরা ৫ ক্রিকেটার কারা? সেই প্রশ্নের উত্তরটাও বেশ গোছালোভাবেই দিয়েছে। চ্যাটজিপিটি মনে করে বাংলাদেশের সর্বকালের সেরা ক্রিকেটার তালিকায় সবার উপরে স্থান পাবেন সাকিব আল হাসান।

সাধারণ মানুষও নিশ্চয়ই তেমনটা বিশ্বাস করে। চ্যাটজিপিটির ভাষ্যমতে, তিনি শুধু বাংলাদেশের সর্বকালের সেরা ক্রিকেটার নন, তিনি ক্রিকেটার ইতিহাসের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার। বাংলাদেশের জার্সিতে নিজের ক্যারিয়ারের শুরু থেকে পারফর্ম করে যাচ্ছেন সাকিব। ফরম্যাট বদলায়, তবুও যেন পারফর্ম করার ধার কমেনি এক ছটাক।

সাকিবের পরের অবস্থানে চ্যাটজিপিটি রেখেছেন মাশরাফি বিন মর্তুজাকে। বাংলাদেশের ক্রিকেটে অন্যতম সেরা পেসার হওয়ার যাত্রাই তো শুরু করেছিলেন মাশরাফি। তবে সে যাত্রায় ব্যাঘাত ঘটিয়েছে ইনজুরি। তিনি হতে পারেননি সেরাদের সেরা। তবে অদম্য মাশরাফি বাংলাদেশের অন্যতম সফলতম অধিনায়ক। তেমনটাই মনে করে চ্যাটজিপিটি।

২০১৫ থেকে বাংলাদেশ ক্রিকেট ওয়ানডে ফরম্যাটে সফলতার উর্ধ্বগামী পথ ধরেছে। সে পথটা তো মাশরাফিই দেখিয়েছেন। তরুণ ক্রিকেটাররা সেই পথটা কেবল অনুসরণ করে সাফল্য বয়ে নিয়ে আসছে। তামিম ইকবালকে কিন্তু ভুলে যায়নি চ্যাটজিপিটি। তাকেও রেখেছে সর্বকালের সেরাদের তালিকায়।

বাংলাদেশের ড্যাশিং ওপেনার হিসেবেই তো তিনি ছিলেন বহু বছর ধরেই। সাম্প্রতিক সময়ে হয়ত বয়সের ভারে পারফরমেন্সের ধার কমেছে তার। একটু খাবি খাচ্ছেন তিনি। তবে তাই বলে নিশ্চয়ই তার অবদান মুছে যাওয়ার নয়। একটা সময় তিনিই ছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় আস্থার নাম। তবে ওই যে কারো সময়ই একই রকম থাকে না সবসময়।

যেমনটি নেই মোহাম্মদ আশরাফুলের। বাংলাদেশ ক্রিকেটের প্রথম ‘পোস্টার বয়’ বিবেচনা করা হত তাকে। বাংলাদেশের হয়ে টেস্ট ক্রিকেটে সর্বকনিষ্ঠ টেস্ট সেঞ্চুরিয়ন এখনও তিনি। সেই আশরাফুলও রয়েছেন চ্যাটজিপিটির সর্বকালের সেরাদের তালিকায়। কিন্তু আশরাফুল নেই আজ কোন আলোচনায়।

ফিক্সিং কাণ্ডে নিজেকে জড়িয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে দূরে সরে গেছেন বহুদিন হয়। এবার তো স্পষ্ট জানিয়েছেন বিদায় নেবেন ঘরোয়া ক্রিকেট থেকেও। তুলে রাখবেন নিজের বহু স্বাদের ব্যাট আর প্যাড। অথচ এইতো কিছুদিন আগেও অন্তত একটি ম্যাচ তিনি খেলতে চেয়েছিলেন জাতীয় দলের জার্সিতে। সেই ইচ্ছেটা তার আর পূরণ হচ্ছে না।

আশরাফুলের একটি ইচ্ছে অপূর্ণ থেকে গেলেও হাবিবুল বাশার সুমন একটি স্বপ্ন পূরণ করেছিলেন। ২০০৫ সালে বাংলাদেশ প্রথম টেস্ট জয়ের দেখা পায়। সেই ম্যাচে সামনে থেকেই নেতৃত্ব দিয়েছিলেন হাবিবুল বাশার সুমন। তাছাড়া দেশের ক্রিকেটের একেবারে ছোটবেলায় ব্যাটিং অর্ডারকে আগলে রাখতেন বাশার। তিনি ছিলেন বলেই হয়ত বেশকিছু আনন্দের মুহূর্তের সাক্ষী হতে পেরেছিল তখনকার ক্রিকেট প্রেমীরা।

চ্যাটজিপিটি এই তালিকায় কেবল পাঁচ জনের জায়গা হয়েছে। তথাকথিত পঞ্চপাণ্ডবের তিনজনকে চ্যাটজিপিটি মনে করে সর্বকালের সেরাদের তালিকায় থাকার উপযুক্ত। তবে এই তালিকায় নির্দ্বিধায় এসে যেতে পারতেন মোহাম্মদ রফিক কিংবা আবদুর রাজ্জাক।

বাংলাদেশ ক্রিকেটের শুরুর দিককার সময়ে প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলতে রফিক আর রাজ্জাকরা রেখেছিলেন সাহসী ভূমিকা। হয়ত এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার স্মৃতিতে সেসবকিছু ততটা বর্ণিল নয়। আখেরে আবেগটা তো নেই। অনুভূতিহীন একটা প্রযুক্তি তো আর পরিস্থিতি বিবেচনায় পারফরমেন্স মূল্যায়ন করতে পারবে না কিংবা বুঝবে না।

ছোট্ট একটা অবদান নিয়ে মাতামাতি করবে না। যদিও রফিক কিংবা রাজ্জাক এদের কারও অবদানই ছোট নয়। সে যাক গে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা তো আর অনুভূতি কেড়ে নেবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link