পেস বোলিং অলরাউন্ডারই হতে চান, মৃত্যুঞ্জয় নিজেই কথাটা বলেছেন বারবার। নিজেও বোলিংয়ের সাথে ব্যাটিংয়েও দিচ্ছেন বাড়তি জোর। এবার কি পাওয়া যাবে একজন আন্তর্জাতিক মানের পেস বোলিং অলরাউন্ডার?
অবশ্য, এখন পর্যন্ত অমিত সম্ভাবনা নিয়ে পেস বোলিং অলরাউন্ডারের হারিয়ে যাওয়াই যেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের রীতিতে পরিণত হয়েছে। বেন স্টোকস, হার্দিক পান্ডিয়াদের মত একজন অলরাউন্ডারের অভাব দলও হারে হারেই টের পাচ্ছিল।
বিশ্বকাপের বছরে দলে সেই ঘাটতি পূরণ করতেই আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে অ্যাওয়ে সিরিজে মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরীকে দলে ডাকা হয়েছে এমনটাই মনে করা হচ্ছিলো। তবে সিলেটে অনুশীলন ক্যাম্পে শেষ দিনে কোচ চান্দিকা হাতুরুসিংহে জানালেন বিশ্বকাপের জন্য পেস বোলিং অলরাউন্ডারের প্রয়োজন নেই। অবশ্য, এর মধ্যেও মৃত্যুঞ্জয়কে ঠিকই বাজিয়ে দেখলেন এই কোচ।
মাশরাফি বিন মুর্তজা, জিয়াউর রহমান, মুক্তার আলী, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনদের পর পেস বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবে মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরির ওপর ভরসার হাত রেখেছে বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্ট। ২০২০ সালের অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ জয়ী দলের যে কয়জন ক্রিকেটারকে বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভবিষ্যতের তারকা মনে করা হতো মৃত্যুঞ্জয় ছিলেন তাদের মধ্যেও সবার ওপরে। যদিও ইনজুরির কারণে শেষপর্যন্ত বিশ্বকাপে খেলা হয় নি।
তবে, শরীফুল, মাহমুদুল জয়দের মত দ্রুতই জাতীয় দলে ঢোকেননি তিনি। বিপিএল সহ ঘরোয়া ক্রিকেটে পারফর্ম করে তবেই জাতীয় দলে জায়গাটা করে নিয়েছেন এই বাঁহাতি পেস বোলিং অলরাউন্ডার।
দরজায় কড়া নাড়ছে ইংল্যান্ডের মাটিতে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ। সেই সিরিজকে সামনে রেখে সিলেটের মাটিতে ক্যাম্প করছে বাংলাদেশ। মূলত ইংল্যান্ডের কন্ডিশনের কথা মাথায় রেখেই মিরপুর ছেড়ে সিলেটে ক্যাম্প করার পরিকল্পনা করেন কোচ হাতুরুসিংহে। সিলেটের ক্যাম্প যে বেশ কার্যকরী হতে যাচ্ছে সেটা অনুশীলন ক্যাম্পের প্রথম দিনই জানিয়ে ছিলেন মৃত্যুঞ্জয়।
জাতীয় দলের সদস্য হিসেবে নিজের প্রথম অনুশীলন সেশন সম্পন্ন করার পর এই অলরাউন্ডার জানিয়েছিলেন নিজের স্বপ্নের কথা। শুধু পেস বোলিং দিয়ে নয়, ব্যাটিং দিয়েও দলে অবদান রাখার কথা জানিয়েছিলেন মৃত্যুঞ্জয়। কোচ চান্দিকা হাথুরুসিংহের কাছে মৃত্যুঞ্জয় সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘মৃত্যুঞ্জয়কে নজরে রাখা হচ্ছে। ওর বোলিংটা ভালো। তবে ব্যাটিং নিয়ে খুব একটা জানা নেই।’
মৃত্যুঞ্জয়ের ব্যাটিং সম্পর্কে জানতেই কিনা সংবাদ সম্মেলন থেকে বেরিয়েই হাতুরু নেটে ব্যাটিং করতে পাঠালেন এই অলরাউন্ডাকে। বাঁহাতি পেসার হিসেবে মৃত্যুঞ্জয়ের সুখ্যাতি আছে বেশ। এবার ব্যাটিংটা দিয়ে হাতুরুর গুডবুকে ঢুকতে পারলে দ্রুতই দলে নিজের জায়গা হয়তো পাকা করেন নেবেন মৃত্যুঞ্জয়।
বিশ্বকাপের বছরে বিশ্বকাপ পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই মৃত্যুঞ্জয়কে দলে ডাকা হয়েছে, এমনটাই মনে করা হচ্ছিলো। বাংলাদেশ ক্রিকেটে দীর্ঘদিনে আক্ষেপ মেটাবেন এই অলরাউন্ডার এমন আশাই করছিলেন সবাই। তবে জাতীয় দলের রাডারে থাকলেও বিশ্বকাপের জন্য বিশেষ ভাবে মৃত্যুঞ্জয়কে ডাকা হয়েছে এমন কথাকে উড়িয়ে দিলেন হাতুরু। সিলেটে সংবাদ সম্মেলনে হাতুরু বলেন, ‘আমাদের বিশ্বকাপের জন্য পেস বোলিং অলরাউন্ডারের প্রয়োজন নেই।’
মুস্তাফিজ, শরীফুলদের সাথে তৃতীয় বাঁহাতি পেসার হিসেবে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দলে আছেন মৃত্যুঞ্জয়। তাই একাদশে ঢোকাটাও বেশ কঠিনই বলতে হবে।
তবে, হাতুরুর ট্র্যাক রেকর্ড যা বলে, তাতে এই সিরিজে মৃত্যুঞ্জয় সুযোগ পাবেন তা বলাই যায়। আর সুযোগ পেয়ে কোচের মন জয় করতে পারলে যে তিনি বিশ্বকাপের পরিকল্পনায় ঢুকে যাবেন তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।