পাকিস্তানের ‘হাইব্রিড’ এশিয়া কাপ নিয়ে আপত্তি বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার!

ভারত আর পাকিস্তান মধ্যকার রাজনৈতিক সম্পর্কের বৈরীতায় বহুদিন ধরেই অনিশ্চয়তায় আটকে আছে আসন্ন এশিয়া কাপ। টুর্নামেন্টের জন্য ৬ টি দল এরই মধ্যে নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে। কিন্তু টুর্নামেন্টটি শেষ পর্যন্ত কোথায় হবে, সেটিই এখন পর্যন্ত নিশ্চিত হচ্ছে না।

আগের মতোই এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের সর্বশেষ সভায় আবারও ‘হাইব্রিড’ পদ্ধতিতে টুর্নামেন্টটি আয়োজনের রূপরেখা উত্থাপন করেছে আয়োজক দেশ পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। তবে ক্রিকেটভিত্তিক গণমাধ্যম ইএসপিএনক্রিকইনফো বলছে, পাকিস্তানের দেওয়া এ প্রস্তাবের ব্যাপারে আপত্তি জানিয়েছে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা।

যদিও পিসিবির এক কর্মকর্তার দাবি, পাকিস্তানে খেলার ব্যাপারে বিসিবি বা এসএলসির কোনো আপত্তি নেই। অবশ্য আগে থেকেই নির্ধারিত আয়োজক দেশ পাকিস্তানে খেলার ব্যাপারে এ দুটি দেশের আপত্তি থাকারও কথা নয়।

তবে. শুরু থেকেই আপত্তি জানিয়েছিল ভারতীয় ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বোর্ড অব কনট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়া (বিসিসিআই)। আর বিসিসিআইয়ের আপত্তির কারণেই নতুন সমস্যায় মোড় নিয়েছিল এশিয়া কাপ।

এরপর পাকিস্তানে এশিয়া কাপ হওয়া, না হওয়া নিয়ে দফায় দফায় আলোচনা হয়েছে। অবশেষে সে সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য ‘হাইব্রিড’ টুর্নামেন্ট আয়োজনের প্রস্তাব দেয় পিসিবি। যেখানে অন্যান্য দেশগুলোর ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে পাকিস্তানে। আর ভারত খেলবে ভিন্ন কোনো দেশে। আর সেই দেশটি হতে পারে সংযুক্ত আরব আমিরাত।

মূলত এই সংযুক্ত আরব আমিরাতেই এশিয়া কাপের একটি অংশ হওয়ার ব্যাপারেই আপত্তি জানিয়েছে শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশের ক্রিকেট বোর্ড। কারণ যে সময়ে এশিয়া কাপ অনুষ্ঠিত হবে সে সময়ে এমনিতেই আবহাওয়া প্রচুর গরম থাকবে।

আর এই গরমের মধ্যে দুটি দেশে ভ্রমণে আপত্তি জানিয়েছে এসলসি আর বিসিবি। একই সাথে, এটাও জানিয়েছে যে, ভারতে আসন্ন বিশ্বকাপের আগে খেলোয়াড়দের নিয়ে এমন আবহাওয়ায় ভ্রমণজনিত ঝুঁকি নিতে চায় না তাঁরা।

ক্রিকেট বিষয়ক গণমাধ্যম ইএসপিএন ক্রিকইনফোকে এ ব্যাপারে এসএলসির সচিব মোহন ডি সিলভা জানিয়েছেন, ‘আমরা এসিসিকে এই হাইব্রিড মডেলের বিপক্ষে আমাদের অবস্থান লিখিত আকারে জানিয়েছি। এর বাইরে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আর ঐ সময়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রচুর গরম পড়ে।’

অবশ্য পিসিবি’র এক কর্মকর্তা আবার আগের বারের এশিয়া কাপের সময় উল্লেখ করে পাল্টা যুক্তি দিয়ে বলেন, ‘পাকিস্তানে খেলতে কোনো আপত্তি না থাকার কথা আমাদের ই-মেইলে জানিয়েছে বিসিবি ও এসএলসি। আর গরমের কথা তুললে, গত বারের এশিয়া কাপও তো ঐ সময়েই হয়েছিল। সংযুক্ত আর আমিরাতে শেষ দুই বার এশিয়া কাপ সেপ্টেম্বরে হয়েছিল। আমরাও ঐ সময়ে টুর্নামেন্ট আয়োজন করার ব্যাপারে আশাবাদী।’

পাকিস্তানে এশিয়া কাপ হওয়ার ব্যাপারে অনিশ্চয়তা নিয়ে অবশ্য বন্ধুত্বের হাতই বাড়িয়ে দিয়েছেন এসএলসি’র ডি সিলভা। নিরপেক্ষ ভেন্যু হিসেবে শ্রীলঙ্কায় এশিয়া কাপ আয়োজনের কথা টেনে তিনি বলেন, ‘পাকিস্তান অফিশিয়াল আয়োজকই থাকুক। তবে আমাদের যদি নিরপেক্ষ ভেন্যু হিসেবে এশিয়া কাপ আয়োজনের প্রস্তাব দেওয়া হয়, আমরা রাজি।’

তবে পিসিবি’র এক কর্মকর্তার সূত্রে এক প্রকার সতর্কবাণী দিয়েই বলা হয়েছে, তাদের হাইব্রিড মডেল শেষ পর্যন্ত গ্রহণ করা না হলে এশিয়া কাপেই খেলবে না পাকিস্তান। তাদের দাবি, পাকিস্তান ও আরেকটি দেশে এশিয়া কাপ আয়োজন করা হলেই সব রকমের সমস্যার সমাধান হয়ে যায়।

প্রসঙ্গত, আগের বারের মতোই ৬ টি দল নিয়ে দুই গ্রুপে ভাগ হয়ে এবারের এশিয়া কাপ হওয়ার কথা। তাতে পাকিস্তা, ভারতের সাথে একই গ্রুপে আছে প্রথমবারের মতো এশিয়া কাপে সুযোগ পাওয়া নেপাল।

আর অপর গ্রুপে আছে, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তান। এ দুই গ্রুপ থেকে দুটি করে দল যাবে সুপার ফোরে। আর সেখান থেকে শীর্ষ দুটি দল খেলবে ফাইনাল।

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link