দেশের ঘরোয়া ক্রিকেট নিয়ে কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা, অপেশাদারিত্বের নমুনা প্রায়শই দেখা যায়। দেশের ক্রিকেট নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিসিবি’ও এ কারণে নেতিবাচক শিরোনামে আসে মাঝেমধ্যেই। তবে এবার আর বিসিবি নয়, অপেশাদারিত্বের অভিযোগ উঠেছে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহানের উপরে।
ফতুল্লায় মঙ্গলবার লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের বিপক্ষে মুখোমুখি হয়েছিল শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। আর এ ম্যাচ চলাকালীনই চরম উদাসীনতা দেখিয়েছেন নুরুল হাসান সোহান। শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের ইনিংসের তখন ২৬ তম ওভারের খেলা চলছে। ঐ ওভারের তৃতীয় বলে আউট হয়ে ড্রেসিংরুমে ফিরে যান সৈকত আলি।
ব্যাটিং অর্ডার অনুযায়ী, এরপরেই ব্যাটিং করার কথা ছিল সোহানের। প্যাড পরে ড্রেসিংরুমে অপেক্ষাও করছিলেন তিনি। অথচ সৈকত আউট হওয়ার এক মিনিট পেরিয়ে যাওয়ার পরও সোহান তখনও মাঠে নামেননি। এমতাবস্থায় তৃতীয় আম্পায়ার রিয়াজুল ইসলাম ড্রেসিংরুমে গিয়ে তাড়া দেওয়ার পর অবশেষে মাঠে নামেন সোহান।
ব্যাটারদের ক্ষেত্রে টাইমড আউটের নিয়ম হলো, একজন ব্যাটারের আউটের দুই মিনিটের ভিতরে পরের ব্যাটারকে মাঠে ঢুকতে হবে। কিন্তু সোহান সময় নিয়েছিলেন প্রায় তিন মিনিট। সে হিসেবে সোহানকে আউট দেওয়াটাই যুক্তিসঙ্গত ছিল। তবে প্রতিপক্ষ দল এ ব্যাপারে কোনো অভিযোগ না করায় শেষ পর্যন্ত সোহানকে আর আউট দেওয়া হয়নি।
সোহানের উপর এমন অপেশাদারিত্বের অভিযোগ অবশ্য একেবারেই নতুন নয় । টসে যেতে দেরি করা, ব্যাটিংয়ে নামতে দেরি করা— এমন অসংখ্য পুরনো অভিযোগে অভিযুক্ত তিনি। এ নিয়ে নাকি তাঁকে বহুবার সতর্কও করা হয়েছে। কিন্তু তাতেও নিজেকে বদলাতে পারেননি নুরুল হাসান সোহান।
বিসিবির ম্যাচ অফিশিয়ালদের সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘আম্পায়াররা অনেকবার সোহানকে এ ব্যাপারে সতর্ক করলেও তাঁর মাঝে তেমন কোনো পরিবর্তন আসেনি। সময়ের ব্যাপারে সে অনেক অসচেতন থাকে। যা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা একজন ক্রিকেটারের কাছ থেকে কাম্য নয়।’
চলতি ডিপিএলে ব্যাট হাতে দারুণ ছন্দে রয়েছেন নুরুল হাসান সোহান। সেই সাথে তাঁর দল শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবও রয়েছে শিরোপা দৌড়ে। তবে ব্যক্তিগত, দলগত সাফল্যে ভাসলেও নিজের স্পোর্টসম্যানশীপকে প্রশ্নবিদ্ধ জায়গায় নিয়ে গিয়েছেন তিনি। বলা যেতে পারে, একটা বাজে দৃষ্টান্ত স্থাপন করছেন তিনি।
তবে এখানেও একই ভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে বিসিবির ভূমিকা। একজন ক্রিকেটারের ক্রমাগত অপেশাদারিত্বের ব্যাপার নজরে আসার পরও কেন দায়সারা ভূমিকায় থাকে দেশের সর্বোচ্চ ক্রিকেট নিয়ন্ত্রক সংস্থা? ঘরোয়া ক্রিকেটে আদৌ কি কোড অব কনডাক্টের নিয়মবিধি অনুসরণ করা হয়?