আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্টে অধিনায়ক সংকট

ইনজুরির কারণে আফগানিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টে দলে থাকবেন না সাকিব আল হাসান— এমন খবর শোনা গিয়েছিল আগেই। তবে তাঁর অনুপস্থিতিতে টেস্ট দলকে নেতৃত্ব দিবেন কে, তা ছিল অজানা। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডও (বিসিবি) অবশ্য আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো নাম ঘোষণা করেনি।

লাল বলের ক্রিকেটে সাকিবের ডেপুটি হওয়ায় লিটন দাসেরই আফগানিস্তানের বিপক্ষে এ টেস্ট ম্যাচে অধিনায়কত্ব করার কথা। সেটাই চলমান সংস্কৃতি। তবে লিটন দাস নিজেই নাকি অন্তর্বর্তীকালীন অধিনায়ক হিসেবে দলকে নেতৃত্ব দিতে চান না।

বিসিবি’র এক সূত্র জানাচ্ছে, নিজের ব্যাটিংয়ে মনযোগ দিতে দলকে নেতৃত্ব দিতে চান না সহ-অধিনায়ক লিটন। এমতাবস্থায় বিসিবিকেও বাধ্য হয়ে খুঁজে নিতে হচ্ছে বিকল্প কাউকে। সেই বিকল্প অধিনায়ক হওয়ার দৌড়ে রয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ আর নাজমুল হোসেন শান্ত।

যদিও নির্বাচক কমিটির এক নির্বাচক জানিয়েছেন, লিটনের অধিনায়কত্ব না করার ব্যাপারটা এখনো তাদের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে আসেনি। অবশ্য তিনি এটাও জানান যে, ‘লিটন যদি অধিনায়কত্ব না করতে চায়, তাহলে আমরা মিরাজ কিংবা শান্তর মধ্যে একজনকে বেছে নিব।’

তবে এখনই সেটির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিতে নারাজ এ নির্বাচক। এ নিয়ে তিনি বলেন, ‘লিটন ক্যাপ্টেন্সি করতে চায় না, এটা শুনেছি। তবে আগে আমাদের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে এ ঘোষণাটা আসুক। এর আগে এ ব্যাপারে বলাটা আসলে কঠিন।’

গত বছরের জুনে মমিনুল হক টেস্ট অধিনায়কত্ব থেকে অব্যাহতি নিলে সাকিবের কাছে যায় নেতৃত্বের ভার। যদিও মমিনুলের আগে তিনিই ছিলেন এই ফরম্যাটের অধিনায়ক। কিন্তু ২০১৯ সালে আইসিসি’র নিষেধাজ্ঞার কারণে এক বছর মাঠের বাইরে কাটাতে হয় সাকিবকে। আর ঐ সময়ই লাল বলের ক্রিকেটে বাংলাদেশের নেতৃত্ব পান মমিনুল হক।

বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে একসাথেই খেলেছেন মিরাজ আর শান্ত। আর সে সময়ের নির্বাচক হওয়ার সুবাদে এ দুই ক্রিকেটারকে খুব কাছ থেকেই দেখেছেন সাজ্জাদ আহমেদ। তাঁর মতে, অধিনায়ক হিসেবে মিরাজ বেশ আক্রমণাত্বক আর শান্ত বেশ ক্যালকুলেটিভ ক্যাপ্টেন্সি করে।

মিরাজ আর শান্তর গেমসেন্সের প্রশংসা করে তিনি আরো বলেন, ‘ওদের দুজনেরই গেমসেন্স প্রখর। আমি যতটুকু দেখেছি, মিরাজ অধিনায়কত্বের সময় আক্রমণাত্বক থাকতে পছন্দ করে। আর শান্ত সব সময় ক্যালকুলেটিভ থাকে। মিরাজ যতটা ম্যাচে ঝুঁকি নেয়, শান্ত ঠিক ততটা নেয় না। অবশ্য দুই অধিনায়কের নেতৃত্বের ধরনে কিছুটা তো ভিন্নতা থাকবেই।’

বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাহমুদ সুজন অবশ্য আক্রমণাত্বক অধিনায়কত্বের চেয়ে ক্যালকুলেটিভ ক্যাপ্টেন্সিই বেশি পছন্দ করেন। এ নিয়ে নিজের ভাবনা জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আগে আমাদের দলের শক্তিমত্তা, পরিকল্পনা সম্পর্কে অবগত থাকতে হবে। আক্রমণাত্বক নেতৃত্ব অবশ্যই ভাল, তবে ব্যাকআপ প্ল্যান থাকতে হবে তাতে। কারণ অনেক সময় অতি আক্রমণাত্বক অধিনায়কত্ব দলের ক্ষতিও বয়ে আনতে পারে। এজন্য আমাদের এমন একজন অধিনায়ক দরকার যে ঠাণ্ডা মাথায় চিন্তা করবে, যে কোনো পরিস্থিতিতে মাথা ঠিক রেখে পরিকল্পনা করতে পারে।’

লিটন দাসের অধিনায়কত্ব না করা নিয়ে খালেদ মাহমুদ এরপর যুক্ত করে বলেন, ‘ও যদি নিজের ব্যাটিংয়ে মনযোগ দিতে চায়, সেটা আমাদের মেনে নেওয়া উচিৎ। কারণ অনেক সময় নেতৃত্বের চাপে সহজাত ব্যাটিংয়ে প্রভাব ফেলতে পারে। আর তাঁর ব্যাটিং যে কোনো কিছুর চেয়ে আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।’

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link