ধোনির ‘দল আগে’ দর্শন

মাঠে দলকে পরিচালনা করেছেন ধোনি। আর মাঠের বাইরে ছিল টিম ম্যানেজমেন্ট। সেই সাথে একটি মাত্র পরিকল্পনা।

চার বারের চ্যাম্পিয়ন দল। তার থেকেও বড় বিষয় ১৪ বারের অংশগ্রহণে ১২ বার প্লে-অফের টিকিট কেটেছে চেন্নাই সুপার কিংস। নিশ্চয়ই চাট্টিখানি কথা নয়। নিঃসন্দেহে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাসের অন্যতম সফল দল চেন্নাই। তবে মাঝে মধ্যেই তো চেন্নাইকে ঘিরে সমালোচনার উদ্রেক হয়।

বিশেষ করে নিলামঘরে। অধিকাংশ সময়েই চেন্নাই সুপার কিংস কর্তাদের দেখা যায় একটু বয়সে ভারি খেলোয়াড়দের দিকে ঝুকতে। বাকি ফ্রাঞ্চাইজিগুলো যখন তরুণ খেলোয়াড়দের পেছনে কাড়িকাড়ি অর্থ ঢালতে প্রস্তুত, সে সময় চেন্নাই বেশ হিসেব করে অর্থ খরচ করে।

অবশ্য এর পেছনে, অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনির যুক্তি রয়েছে। দলটা তো আর এমনি এমনি সাফল্য পায়নি। মাঠে দলকে পরিচালনা করেছেন ধোনি। আর মাঠের বাইরে ছিল টিম ম্যানেজমেন্ট। সেই সাথে একটি মাত্র পরিকল্পনা, খেলোয়াড় বাছাইয়ে- খেলোয়াড়কে নিজের থেকেও বেশি প্রাধান্য দিতে হবে দলকে। তবেই মিলবে চেন্নাই শিবিরে স্থান।

১২ তম বারের মত প্লে-অফ নিশ্চিত করেছে চেন্নাই সুপার কিংস। দিল্লী ক্যাপিটালসকে হারিয়েছে তারা ৭৭ রানে। যার সুবাদে গেল আসরের চ্যাম্পিয়ন দল গুজরাট টাইটান্সের পর দ্বিতীয় দল হিসেবে আইপিএলের ১৬ তম আসরের প্রথম কোয়ালিফার নিশ্চিত করে মহেন্দ্র সিং ধোনির দল। এরপরই ধোনি দলের সাফল্যের বিষয় খোলাসা করেন।

তিনি বলেন, ‘আপনার দল-আগে এমন খেলোয়াড় প্রয়োজন। সেটাই আসল গুণ যা খোঁজা উচিত। দূর থেকে সে বিষয়টি বোঝা কঠিন। আমরা চাই খেলোয়ড়রা সেই আবহাওয়ার সাথে মিশে যাক। এমনকি তারা যদি তাদের ১০% দেয়, আমরা আমাদের ৫০% দিয়ে তাদের সাথে মাঝপথে মিলতে চাই।’

তাছাড়া মহেন্দ্র সিং ধোনি তার দলের ম্যানেজমেন্টেরও প্রশংসা করতে ভোলেননি। তিনি বলেন, ‘ম্যানেজমেন্ট ছিল দূর্দান্ত, এমনকি সাপোর্ট স্টাফরাও। তারা সবসময় আমাদের বলেছে চিন্তা করবেন না, এবং আপনারা যা করছেন করতে থাকুন। তবে, হ্যা খেলোয়াড়রা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ।’

ভারতের ক্রিকেট পাড়ায় এই খবর চাওড় হয়ে গেছে যে- এটাই মহেন্দ্র সিং ধোনির শেষ আইপিএল আসর। এই আসরে ধোনি দলের বাকি খেলোয়াড়দের পর্যাপ্ত সুযোগ দিয়ে গেছেন। দলের স্বার্থে, খেলোয়াড়দের স্বার্থে তিনি আট নম্বর পজিশনেও ব্যাট করতে নেমেছেন। তাইতো শিভাম দুবের মত খেলোয়াড়রা নিজেদেরকে মেলে ধরার সুযোগ পেয়েছে।

হয়ত ধোনি মাঠ ছেড়ে চলে যাবেন। হয়ত মাঠের ক্রিকেটে তার সরব উপস্থিতি আর টের পাওয়া যাবে না। ম্যাচের সবচেয়ে কঠিন মুহূর্তে একেবারে নিশ্চিন্ত বদনে উইকেটকিপিং করতে দেখা যাবে ন। কোন ধরণের প্রতিক্রিয়া ছাড়াই বিশাল বিশাল সব ছক্কা হাকানো হবে না।

তবে ধোনির দর্শন থেকে যাবে। তিনি ভারতের গোটা একটা প্রজন্মের কাছে অদ্ভুত এক ক্রিকেট দর্শন রেখে গেলেন। চারিদিকে হোক সোরগোল। বদলে যাক পরিস্থিতি। প্রতিকূলে চলতে থাকুক স্রোত। তবুও শান্ত থাকতে হবে। ঠায় দাঁড়িয়ে থাকা বটগাছের মতই শান্ত থাকতে হবে। হতে হবে আশ্রয়স্থল। খেলতে হবে দলের জন্যে। ধোনি তো ঠিক সেটাই ছিলেন, তেমনটাই করেছেন।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...