তীব্র তাপদাহে মানুষের দৈনন্দিন কাজ চালিয়ে নেয়াটাই কঠিন হয়ে পড়েছে। সেখানে পাঁচ দিনের টেস্ট ম্যাচ খেলাটাই বিরাট এক চ্যালেঞ্জ ক্রিকেটারদের জন্য। বছরের সবচেয়ে উষ্ণতম মাস জুনে ঘরের মাটিতে মাত্র দ্বিতীয়বারের মত টেস্ট খেলতে নামবে বাংলাদেশ।
এর আগে ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে ২০১৫ সালের জুন মাসে একমাত্র টেস্ট খেলেছিলো টাইগাররা। তাই ক্রিকেটারদের ক্লান্তির কথা মাথায় রেখে টেস্টের মাঝখানে নির্ধারিত বিরতির বাইরেও বিরতি বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
১৪ই জুন মিরপুরের শের এ বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ-আফগানিস্তান একমাত্র টেস্ট। টেস্ট শুরুর এক সপ্তাহ আগেও ঢাকায় তাপমাত্রা প্রায় ৪০ ছু্ঁই ছুঁই।
এই তীব্র গরমে অনুশীলন করতেই বেগ পোহাতে হচ্ছে ক্রিকেটারদের। অতিরিক্ত গরমে ক্রিকেটারদের কিছুটা স্বস্তি দিতে অনুশীলন ক্যাম্পে সবরকম সুবিধা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছে বিসিবি।
বিসিবির চিকিৎসক ডাক্তার দেবাশিষ চৌধুরি বলেন, ‘দেখুন, টেস্ট ম্যাচে বিরতির সংখ্যা বাড়ানো যায় কিনা আমরা সেই চেষ্টা করছি। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ‘এ’ দলের বিপক্ষে সিরিজে আমরা দুই পক্ষের সম্মতিতে সিদ্ধান্ত নেই বিরতির সংখ্যা বাড়াব। টেস্ট ম্যাচেও এটি করা সম্ভব কিনা সেই সিদ্ধান্ত নেবেন ম্যাচ রেফারি ও দুও দলের খেলোয়াড়রা। খেলোয়াড়দের স্বাস্থের কথা চিন্তা করলে আমরা চাই ম্যাচের মধ্যবর্তী বিরতির সংখ্যা বাড়ুক।’
দেবাশিষ আরো বলেন, ‘টেস্ট ম্যাচে তিনটি সেশন থাকে। লাঞ্চ এবং চা বিরতির পাশাপাশিও প্রতি সেশনের মাঝে পানি পানের বিরতি থাকে। কিন্তু আমরা যদি একটির জায়গায় দুটি পানি পানের বিরতি রাখতে পারি সেটি ভালো হবে। এছাড়াও খেলোয়াড়রা যখনই পানি পানের প্রয়োজন মনে করবে তখনই তারা যেন মাঠের বাইরে যাবার অনুমতি পায় সেই ব্যবস্থাও যেন রাখা হয়।’
বিসিবির ক্রিকেট অপারেশন্স ম্যানেজার শাহরিয়ার নাফিস জানান, দুই দলই এই প্রস্তাবে একমত হলে এক টেস্টেই বিরতি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
নাফিস বলেন, ‘ম্যাচ শুরুর আগে ম্যাচ রেফারির সাথে দুই দলের অধিনায়ক ও ম্যানেজারদের একটি বৈঠক হবে। যদি তখন মনে হয় বাড়তি বিরতির দরকার আছে তাহলে এখানে কোনো সমস্যা থাকার কথা না।’
তবে বাড়তি বিরতির কারণে ম্যাচের দীর্ঘায়িত হবার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিসিবির এক আম্পায়ার বলেন, ‘দেখুন, আমি নিশ্চিত নই এটি করা সম্ভব কিনা। এমনিতেই খেলা প্রায় ছয় ঘন্টা ধরে চলবে, সেখানে মাঝে যদি অতিরিক্ত বিরতির কারণে যথা সময়ে খেলা পরিচালনা করতে সমস্যা হতে পারে।’
বিসিবির প্রধান চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরি জানান, খেলোয়াড়দের পানি শূন্যতা দূর করতে বিভিন্ন ধরণের পদক্ষেপ নিচ্ছেন তারা। সেই কারণে শুধু পিপাসা পেলে পানি পান করতে হবে এমনটা নয়, পিপাসা পাবার আগেই প্রয়োজনমত পানি পানের দিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন তারা।
তিনি বলেন, ‘যখনই আমাদের পিপাসা পায় তখন আমাদের শরীরে প্রায় দুই লিটার পানি শূন্যতা দেখা দেয়। তাই খেলোয়াড়দের বারবার নির্দিষ্ট সময় পরপরই পানি পানের কথা মনে করিয়ে দেয়া হচ্ছে। এছাড়াও আমরা অতিরিক্ত গরমের কারণে তাদের বিভিন্ন সাসপেনশন, পানীয় ও বরফ দিচ্ছি।’