ইনজুরিতে এবাদত, খেলতে পারবেন শেষ ম্যাচে?

সাদামাটা অভিষেক, বাজে ফর্ম, সামাজিক মাধ্যম জুড়ে ব্যঙ্গ- এরপরই দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন, সমর্থকদের হৃদয় জিতে নেয়া। লিটন দাস, নাজমুল শান্তদের কল্যাণে এমন চিত্র দেখা হয়ে গিয়েছে বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের। তবে আরো একজনের ক্যারিয়ারের গ্রাফটাও ঠিক এমন, যদিও তাঁর নামটা একটু কমই উচ্চারিত হয়। তিনি এবাদত হোসেন, সিলেট রকেট।

উড়তে থাকা এবাদত হোসেন আফগানিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে সুযোগ পেয়েছেন তাসকিন আহমেদের পরিবর্তে। এ ম্যাচেও লাইম লাইট দখল করেছেন তিনি; তবে সেটা পারফরম্যান্স দিয়ে নয়, বরং ওভারের মাঝখানে মাঠ থেকে উঠে যাওয়ায় ইবাদতকে ঘিরে কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে ভক্তদের। মূলত পায়ে ক্র্যাম্প হওয়ায় নিজের স্পেল অসম্পূর্ণ রেখেই ফিরতে হয়েছে তাঁকে।

আফগান ব্যাটিং ইনিংসের তখন ৪২তম ওভার চলছিল; বোলিং প্রান্তে ছিলেন এবাদত হোসেন। প্রথম দুই বল করার পর তৃতীয় বলটা করার জন্য দৌড় শুরু করেছিলেন তিনি, এরপর হঠাৎ-ই থেমে যান। তখনো আসলে আঁচ করা যায়নি কি ঘটেছে সেখানে, এরপর হাঁটু ধরে মাঠে বসে পড়েন এই পেসার। তখনই কারণটা স্পষ্ট হয়।

ফিজিও মাঠে প্রবেশ করে প্রাথমিক শুশ্রূষা দেয়ার পর উঠে দাড়ান এবাদত। যদিও চোখে মুখে ফুটে উঠছিল অস্বস্তি, এসময় গুরু অ্যালান ডোলান্ডও হাজির হন ইবাদত হোসেনের কাছে। শেষমেশ আর বোলিং করা সম্ভব হয়নি, ড্রেসিংরুমের উদ্দেশ্যে মাঠ থেকে বেরিয়ে যান তিনি। পরে জানা গিয়েছে মাংসপেশিতে ক্র্যাম্প হওয়ায় খেলা ছাড়তে হয়েছিল তাঁকে।

ব্যাটিংয়ের সময়ও নামতে পারেননি স্যালুটম্যান এবাদত হোসেন। তাই তো দুশ্চিন্তা আরো ঘনীভূত হয়েছে সমর্থকদের মনে; তবে এখন পর্যন্ত জানা যায়নি চোটের আসল অবস্থা। ম্যাচ শেষে হয়তো টেস্ট করা হবে হাঁটুতে, এরপরই চোটের অবস্থা জানা যাবে; কবে নাগাদ ফিরবেন এই এক্সপ্রেস বোলার সেটাও হয়তো আন্দাজ করা যাবে।

বাংলাদেশ দলের অন্যতম ফিট খেলোয়াড় ভাবা হয় এবাদত হোসেনকে। বিমানবাহিনী থেকে আসা এই ক্রিকেটারের শরীর তাই বেশ শক্তপোক্ত। এখন পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য কোন চোটেও পড়তে হয়নি এই ডানহাতিকে। তবে এবার কিছুটা হলেও চিন্তায় পড়েছে টিম ম্যানেজম্যান্ট। ইন ফর্ম এই পেসারকে বিশ্বকাপের আগে ইনজুরিতে দেখতে চাইবে না কেউই।

বর্তমান বাংলাদেশে পেস বোলারদের একটি ইউনিট গড়ে উঠেছে; পিচ কন্ডিশন নিজেদের অনুকূলে ফেলে এরা কাঁপিয়ে দিতে পারে যে কোন দলের ব্যাটিং লাইনআপকে। আর এই ইউনিটের গুরুত্বপূর্ণ নামের একটি এবাদত হোসেন; ইচ্ছেশক্তি, পরিশ্রম আর একাগ্র চিত্তে অনুশীলন আজ ইবাদতকে দিয়েছে দেশসেরা পেসার হওয়ার সুযোগ। অথচ বছর কয়েক আগেও তাঁকে ভাবা হতো বল থ্রোয়ার।

বোলিং মেশিন থেকে ‘সিলেট রকেট’, প্রত্যাবর্তনের এক রোমাঞ্চকর গল্প বুনেছেন ইবাদত হোসেন। সেই গল্প পরিপূর্ণতা পাবে বিশ্বকাপ আর এশিয়া কাপে ভাল কিছু উপহার দিতে পারলে, আর সেজন্য শতভাগ ফিট থাকাটা একটু বেশিই জরুরি। তাই তো ইবাদতের চোট যেন গুরুতর কিছু না হয় সেই প্রার্থনা-ই করছে গোটা বাংলাদেশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link