আরও ক্ষুধার্ত, আরও হিংস্র

ক্ষুধার্ত বাঘিনী যখন রক্তের গন্ধ পায়, তখন কি হয়? জানেন নিশ্চয়ই, সে হয়ে ওঠে আরো আক্রমণাত্মক, আরো হিংস্র। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের বাঘিনীরাও ব্যতিক্রমী নয়। জেতার জন্য উন্মুখ হয়ে থাকা দলটা একটা জয় পেতেই আরো আগ্রাসী হয়ে উঠেছে। আর সেই আগ্রাসী টাইগ্রেস এবার আরো একবার বধ করেছে ভারতকে।

ভারতের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ভারতকে চাপে ফেলে দারুণ এক জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় নারী ক্রিকেট দল। মারুফা আক্তার, রাবেয়া খানদের বিপক্ষে দাঁড়াতেই পারেননি সফরকারী ব্যাটাররা। মাত্র ১১৩ রানে তাদের গুটিয়ে দিয়ে ৪০ রানের বিশাল জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ। আর তাতেই ইতিহাসে প্রথমবারের মত ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডে ফরম্যাটে জয়ের স্বাদ পেলো নিগার সুলতানা জ্যোতিরা।

এর আগে টসে হেরে আগে ব্যাটিং করতে নেমেছিল বাংলাদেশ। বৃষ্টি-বিঘ্নিত ম্যাচে শুরুটা ভাল হয়নি, দলীয় ১৪ রানের মাথায় আউট হন ওপেনার শারমিন আক্তার। দ্রুতই বিদায় নেন মুর্শিদা খাতুনও। এরপর ফারজানা হককে সাথে নিয়ে বিপর্যয় সামাল দেন অধিনায়ক জ্যোতি; যদিও মিডল অর্ডার পুনরায় পথ হারায় আমানজাত কৌরের পেসে। ৪৪ ওভারের ম্যাচে শেষ পর্যন্ত ৪৩ ওভার খেলে ১৫২ রানে থামে বাংলাদেশের ইনিংস।

জবাবে বারবার হোঁচট খেয়েছে ভারত; ইয়াস্তিকা ভাটিয়া, দিপ্তি শর্মারা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করলেও সফল হতে পারেননি। বাংলাদেশের বোলিং আক্রমণের মুখে হতাশা নিয়েই ফিরেছেন দলটির ব্যাটাররা। ৩৫.৫ ওভারে দশ উইকেট হারিয়ে ১১৩ রানেই শেষ হয় ভারতের ইনিংসের, আর জয়ের আনন্দে মেতে ওঠে পুরো মিরপুর।

দুর্দান্ত এই জয়ে মূল অবদান পেসার মারুফা আক্তারের। অনূর্ধ্ব-১৯ দলে থাকার সময় নজরে আসা এই পেসার এদিন একাই তুলে নিয়েছেন ভারতের চার উইকেট। ওপেনার প্রিয়া পুনিয়া, বিশ্বের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান স্মৃতি মান্ধানাকে ফিরিয়ে জেতার স্বপ্ন দেখাতে শুরু করেছিলেন তিনি।

আবার শেষ দিকে আমানজত কৌরকে আউট করে ৩০ রানের জুটি ভেঙে জয়ের পথে এগিয়ে দিয়েছেন মারুফা। পরের বলে স্নেহ রানাকে প্যাভিলিয়নে ফিরিয়ে নিশ্চিত করেছেন দলের সাফল্য। সতীর্থ লেগি রাবেয়া খানও কম যাননি; ৩০ রানের বিনিময়ে তিন উইকেট ঝুলিতে নিয়েছেন তিনি।

টি-টোয়েন্টি সিরিজের দুই ম্যাচেই ভারতকে চেপে ধরতে পেরেছিল বাংলাদেশ। ব্যাটারদের ব্যর্থতায় দ্বিতীয় ম্যাচ জেতা হয়নি, কিন্তু তৃতীয় ম্যাচে ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে ঠিকই জয়ের বন্দরে পৌঁছে গিয়েছিল বাংলাদেশ। সেই ম্যাচ থেকে অনুপ্রেরণা নিয়েই এবার ওয়ানডে ফরম্যাটে প্রতিবেশীদের হারালো লাল-সবুজের প্রতিনিধি।

সিরিজ জেতার দিকেই হয়তো এখন নজর দিবে বাংলাদেশ। এর আগে কখনো ভারতকে ওয়ানডেতে না হারানো জ্যোতিরা এবার সেই সুযোগ পেয়েছে ঘরের মাঠে। সুযোগ কাজে লাগাতে শক্তিশালী প্রতিপক্ষকে সিরিজ পরাজয়ের লজ্জা দিতে পারবে টাইগ্রিসরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link