নয় দিনে দুবার মুখোমুখি ভারত-পাকিস্তান

ভারত পাকিস্তানের লড়াই মানেই উত্তেজনার পারদ যেন আকাশ ছোঁয়া। বাইশ গজের লড়াই ছাপিয়ে যে লড়াই হয়ে ওঠে নিজেদের আত্মমর্যাদার লড়াই, নিজেদের অস্তিত্বের লড়াই। ভারত-পাকিস্তান মধ্যকার কুলীন এ লড়াইয়ের দিনে কাঁটাতারের দুইপাশের মানুষই শুধু বিভক্ত হয় না, পুরো পৃথিবীই যেন দুইভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। 

দুই দেশের রাজনৈতিক বৈরিতায় অবশ্য ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেটীয় যুদ্ধের দেখা এখন কমই মেলে। ২০১৬ সালের পর আর কোনো দ্বিপক্ষীয় সিরিজই হয়নি দুইটি দেশের মধ্যে। তাই চাতক পাখির মতো সমর্থকদের তাকিয়ে থাকতে হয় আইসিসির বৈশ্বিক আসর কিংবা এশিয়া কাপের দিকে। 

২০২৩ সালে অবশ্য সমর্থকদের সেই আক্ষেপ মিটছে। সামনের মাস চারেকের মাঝে এশিয়া কাপ, বিশ্বকাপ—দুটোই হচ্ছে। অর্থাৎ বহুল প্রতীক্ষিত ভারত-পাকিস্তান লড়াই এবার দেখা যাবে বেশ ক’বার। আগামী ৩১ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া এবারের এশিয়া কাপেই ন্যূনতম ২ বার মুখোমুখি হতে পারে দুটি দেশ। 

এশিয়া কাপের দিনক্ষণ এখনও চূড়ান্ত না হলেও এ দুটি দেশ কবে মুখোমুখি হতে পারে তার একটা আগাম বার্তা ইতোমধ্যেই প্রকাশিত হয়েছে। জানা গেছে, গ্রুপ পর্বের খেলায় আগামী ২ সেপ্টেম্বর মুখোমুখি হতে পারে পাকিস্তান-ভারত। এর ঠিক এক সপ্তাহ বাদে কোনো অঘটন না ঘটলে সুপার ফোরে ১০ সেপ্টেম্বরে আবারো মুখোমুখি হতে পারে দুটি দেশ। আর শেষ খবর বলছে, দুটি ম্যাচই অনুষ্ঠিত হতে পারে ক্যান্ডি অথবা কলম্বোতে। 

অবশ্য কলম্বোতে বৃষ্টি শঙ্কা থাকায় ম্যাচ দুটি ক্যান্ডিতেই হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এ নিয়ে আগামী বুধবারে এসিসি থেকে চূড়ান্ত সূচি প্রকাশ করার কথা রয়েছে।

তবে এ সূচিতে পাকিস্তানকে কিছুটা ঝক্কি ঝামেলা পোহাতে হবে। কারণ গ্রুপ পর্বে তাঁরা প্রথম ম্যাচ খেলবে নেপালের বিপক্ষে, যেটি হবে তাদের নিজেদের মাটিতে। সম্ভাব্য ৩১ আগস্টে তারা সেই ম্যাচ খেললে, ম্যাচের পর তাদেরই শ্রীলঙ্কাগামী বিমান ধরতে হবে। কারণ একদিন বাদেই যে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের সাথে ম্যাচ। 

এবারের এশিয়া কাপ নিয়ে জলঘোলা কম হয়নি। মূলত আয়োজক দেশ হিসেবে পাকিস্তানই পূর্ব নির্ধারিত ছিল। কিন্তু নিরাপত্তা ইস্যু দেখিয়ে ভারত পাকিস্তানের মাটিতে এশিয়া কাপ অংশগ্রহণে আপত্তি জানায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে হাইব্রিড মডেলে এশিয়া কাপ আয়োজনের প্রস্তাব দেয় পাকিস্তান।

কিন্তু, তাতেও প্রথমে মন গলেনি ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের। বিসিসিআই স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, পাকিস্তানের এমন প্রস্তাবিত মডেলে এশিয়া কাপে অংশ নিবে না ভারত। এর মাঝে আবার ভারত একক ভেন্যু হিসেবে শ্রীলঙ্কায় এশিয়া আয়োজনের প্রস্তাব দেয়। যদিও শেষ পর্যন্ত সমঝোতায় এসে পাকিস্তানের প্রস্তাবিত মডেলেই এশিয়া কাপে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ভারত।

তবে মূল আয়োজক পাকিস্তান হলেও বেশি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে শ্রীলঙ্কার মাটিতে। পাকিস্তান যেখানে টুর্নামেন্টের মাত্র ৪ টি ম্যাচ আয়োজনের সুযোগ পাচ্ছে, সেখানে শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত হবে বাকি ৯ টি ম্যাচ।

পাকিস্তান, ভারত, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও নেপাল— এই ৬ টি দেশের মধ্যে দুটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে আয়োজিত হচ্ছে এবারের এশিয়া কাপ। যেখানে গ্রুপ এ তে থাকছে ভারত, পাকিস্তান আর নেপাল। আর গ্রুপ বি তে থাকছে বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও শ্রীলঙ্কা। এই দুই গ্রুপ থেকে দুটি করে দল নিয়ে এরপর হবে সুপার ফোর পর্ব। এরপর সেখান থেকে শীর্ষ দুই দল মুখোমুখি হবে ফাইনালে।

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link