বৃষ্টিতে ভেসে গিয়েছে অ্যাশেজ টেস্টের পঞ্চমদিন, ফলে বাজবল ক্রিকেট উপভোগে ভাটা পড়েছে খানিকটা। তবে বিশ্বের আরেক প্রান্তে ঠিকই বোলারদের সাথে বাজবল খেলেছে ব্যাটাররা; বলছি ভারত-উইন্ডিজ টেস্ট ম্যাচের কথা। দ্বিতীয় ইনিংসে ওভারপ্রতি সাড়ে সাতের বেশি রেটে রান তুলেছে ভারত, আর তাতেই রেকর্ড বইয়ে ঝড় নেমেছে।
দ্বিতীয় ইনিংসের শুরু থেকেই ওপেনার রোহিত শর্মা এবং যশস্বী জয়সওয়াল ছিলেন আগ্রাসী। ওয়ানডে নয়, বরং টি-টোয়েন্টি মেজাজেই ব্যাট করতে থাকেন এই দুইজন। মাত্র ১১.৫ ওভারে ব্যক্তিগত ৫৭ রান করা রোহিত আউট হলে থামে দুজনের ৯৮ রানের জুটি – এই জুটির উপর ভর করেই ১২.২ ওভারে দলীয় শতক ছুঁয়ে ফেলে টিম ইন্ডিয়া।
আর তাতেই ভেঙে যায় বাইশ বছর আগের রেকর্ড, ২০০১ সালে শ্রীলঙ্কা দলীয় শতরান করেছিল ১৩.২ ওভার বা ৮০ বলে। পোর্ট অব স্পেনে মাত্র ৭৪ বলেই তিন অংকের ঘরে পৌঁছে যায় ভারতের সংগ্রহ।
শুধু তাই নয়, অন্তত পঞ্চাশ রান করেছে এমন উদ্বোধনী জুটির মাঝে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান রেটে ব্যাটিং করেছে রোহিত-জসওয়াল। এই দুজন ওভারপ্রতি ৮.২৮ রান করেছেন; এবং তাদের সামনে আছে কেবল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২০০২ সালে ওভারপ্রতি দশ রান তোলা মাইকেল ভগান এবং মার্কাস ট্রেস্কোথিক।
শুধু দ্রুত রান তোলার ক্ষেত্রেই নয়, বড় জুটি গড়ে রেকর্ড করতেও ভোলেননি ভারতীয় ওপেনাররা। দুই ম্যাচের অ্যাওয়ে সিরিজে এর আগে কোন ওপেনিং জুটিই রোহিত জয়সওয়ালদের সমান রান করতে পারেনি। এই দুজনে পুরো সিরিজে ৪৬৬ রান করেছেন।
টেস্ট ইতিহাসে অবশ্য বিদেশের মাটিতে এক সিরিজে সর্বোচ্চ রান করার রেকর্ড রয়েছে দুই প্রোটিয়া কিংবদন্তি গ্রায়েম স্মিথ এবং নিল ম্যাকেঞ্জির। এই দুজন বাংলাদেশের বিপক্ষে ২০০৮ সালে দুই ম্যাচে সবমিলিয়ে ৪৭৯ রান করেছেন।
রেকর্ড গড়ার এই ম্যাচে বাদ যাননি ঈশান কিষাণও; দ্রুত রান তুলতে এই উইকেট রক্ষককে আগেভাগে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছিল টিম ইন্ডিয়া। আর সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে মাত্র ৩৪ বলে ৫২ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলেন তিনি। তাতেই উইকেটরক্ষক হিসেবে তৃতীয় সর্বোচ্চ স্ট্রাইকরেটে অন্তত হাফ সেঞ্চুরি করার কীর্তি গড়েন এই উদীয়মান ব্যাটসম্যান।
শেষপর্যন্ত অবশ্য ১৮১ রান তোলার পরেই ইনিংস ঘোষণা করেছিলেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা। ৩৬৫ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ইতোমধ্যে ৭৬ রানে দুই উইকেট হারিয়ে চতুর্থ দিন শেষ করেছিল। এই ম্যাচ জিতে সিরিজ বাঁচাতে ক্যারিবীয়দের আরো দরকার ২৮৯ রান, হাতে আছে আট উইকেট।
কন্ডিশন আর ম্যাচ পরিস্থিতি বিবেচনায় ভারত এই মুহুর্তে এগিয়ে আছে। তবে ক্রিকেট বড্ড বেশি অনিশ্চয়তায় মোড়ানো, একটা বড় জুটি বদলে দিতে পারে ম্যাচের ফলাফল। শেষদিনের খেলার দিকে তাই নজর রাখতেই হবে ভক্ত-সমর্থকদের।