রাজি থাকলে সাকিবই অধিনায়ক

ভোটটা সাকিব আল হাসানের পক্ষেই যাচ্ছে তাহলে। বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন কিংবা বোর্ড পরিচালক খালেদ মাহমুদ সুজন – সবাই অধিনায়ক হিসেবে চান সাকিবকেই। ফলে, যদি সাকিব রাজি থাকেন তাহলে তাঁর হাতেই উঠতে যাচ্ছে অধিনায়কত্বের আর্মব্যান্ড।

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সাকিবকেই অধিনায়ক করার ইচ্ছা থাকলেও একটা সমস্যা আছে। সাকিব চান দীর্ঘমেয়াদে দায়িত্ব নিতে। বোর্ডও অধিনায়কত্বের দায়িত্বটা এমন কাউকে দিতে চায় যে দুই বছর দলের নেতৃত্ব দিতে পারবে।

তবে, আরও দু’টো বছর সাকিব অধিনায়ক হিসেবে দলকে সার্ভিস দিতে পারবেন কি না, সেটা বুুঝে নিতে চায় বিসিবি। সাকিবের বয়সটা একটা ফ্যাক্টর এখানে। অন্যদিকে, তিনি বিশ্বের নানা প্রান্তে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট খেলেন। ফলে, তাঁকে কতটা পাওয়া যাবে সেটা নিয়ে সন্দিহান বিসিবি।

এসব ইস্যু নিয়ে সাকিবের সাথে আলাপ করবে বোর্ড। বোর্ড সভাপতি বলেন, ‘আপনি কি বলতে পারেন দুই বছর খেলবে সাকিব? জানি না তো? ওর পরিকল্পনা জানতে হবে। ওর সাথেও তো বসতে হবে। আমরা একটু জেনে নিই। এটা নিয়ে কথাবার্তা বলতে হবে। বোর্ডের সবার সঙ্গে কথা বলতে হবে। ক্রিকেটারদের সঙ্গে কথা বলতে হবে। তবে এটা ঠিক, সবচেয়ে সহজ হচ্ছে সাকিবকে করে দেওয়া।’

সবচেয়ে সহজ, কারণ সাকিব বাংলাদেশের ইতিহাসেরই সেরা অধিনায়কদের একজন। ৫০ টি ম্যাচে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তাতে দল জিতেছে ২৩ টি ম্যাচে। ২০১১ সালের বিশ্বকাপেও অধিনায়কত্ব করেন। ২০১৫ ও ২০১৯ বিশ্বকাপে মাশরাফি বিন মুর্তজার পাশে সহ-অধিনায়ক ছিলেন।

ফলে, সাকিব ছাড়া ‘বেটার’ কোনো বিকল্প এই মুহূর্তে হাতে নেই। সাবেক অধিনায়ক ও বোর্ড পরিচালক খালেদ মাহমুদ সুজন বলেন, ‘আমি মনে করি, যে দলে সাকিব আছে, আমি হলে হয়তো সাকিবের কথাই চিন্তা করতাম অধিনায়ক হিসেবে।’

আবার প্রটোকল অনুযায়ী, তামিম ইকবালের জায়গায় লিটন দাসেরই তো অধিনায়কত্ব পাওয়ার কথা। অভিজ্ঞতা কম থাকলেও অধিনায়ক হিসেবে বেশ সফল লিটনও। দেশের মাটিতে ভারতের বিপক্ষে সিরিজ জিতেছেন। আফগানিস্তানকে টেস্টে রেকর্ড ব্যবধানে হারিয়েছেন।

এই ব্যাপারে ‍সুজন বলেন, ‘লিটনকে নেতৃত্ব দিলে যে খুব বড় সমস্যা হবে, তা নয়। সাকিবকে আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি। আমার মনে হয় না সাকিবের কাছে এসব কোনো বিষয় হবে। আমি জানি, লিটনকে অনেক বেশি সাহায্য করবে সাকিব। যদি বোর্ড মনে করে লিটন, তাহলে কোনো সমস্যা নেই।

কিন্তু, বিশ্বকাপ তো আরও বড় মঞ্চ। আর এই মুহূর্তে লিটনের পারফরম্যান্সটাও একটা ইস্যু। বোর্ড সভাপতি মনে করেন, অধিনায়কত্বের চাপ লিটনের ব্যাটিংয়ে প্রভাব ফেলতে পারে। তিনি বলেন, ‘আপনি যদি লিটনের কথা চিন্তা করেন, তাহলে এটাও খুব সহজ। তবে, দ্বিপক্ষীয় সিরিজ এক জিনিস, বিশ্বকাপ এক জিনিস। ওইটা আবার ওর ব্যাটিংয়ে না প্রভাব ফেলে ফেলে দেয় বিশ্বকাপের মতো জায়গায়। এত বড় দায়িত্ব। আমরা সব দিক বিবেচনা করেই সিদ্ধান্তটা নিতে চাই।’

অল্প করে হলেও, মেহেদী হাসান মিরাজের নামও থাকছে আলোচনায়। এই মুহূর্তে সতীর্থদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় মিরাজ। দলের সবার কাছে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা আছে। আর নেতৃত্ব যে তাঁর পারফরম্যান্সের ওপর প্রভাব ফেলে না তাঁর প্রমাণ ২০১৬ সালের অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ।

২০১৬ বিশ্বকাপে তাঁর অধীনেই বাংলাদেশ দল খেলে সেমিফাইনালে। সেই বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড়ও ছিলেন মিরাজ। তবে, জাতীয় দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার অভিজ্ঞতা নেই বলেই ‍পিছিয়ে আছেন মিরাজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link