আইসিসির ইভেন্টের বাইরে ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট এশিয়া কাপ। গুরুত্ব আর দলগুলোর শক্তিমত্তার বিবেচনায় বেশ জমজমাটও বটে।
এশিয়া কাপের যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯৮৪ সালে। সেবার এ টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েছিল ৩ টি দল। ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার অংশগ্রহণে রাউন্ড রবিন লিগ পদ্ধতির সেই টুর্নামেন্ট চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ভারত। আর রানার্স আপ হয়েছিল শ্রীলঙ্কা।
তবে প্রথম আসরের চ্যাম্পিয়ন ভারত পরের আসরে অংশই নেয়নি। আর এতেই খুলে যায় বাংলাদেশের ভাগ্য। গাজী আশরাফ হোসেন লিপুর নেতৃত্বে ১৯৮৬ সালে প্রথম বারের মতো এশিয়া কাপের মঞ্চে পা রাখে বাংলাদেশ। যদিও শ্রীলঙ্কার মাটিতে হওয়া ঐ আসরে বাংলাদেশ জয়শূন্যই ছিল। আর আগের বারে রানার্সআপ শ্রীলঙ্কা পেয়েছিল শিরোপা জয়ের স্বাদ।
এশিয়া কাপে প্রথম বারের মতো চার দল অংশ নিয়েছিল ১৯৮৮ সালে। আর এই প্রথমের সাথে জড়িয়ে আছে বাংলাদেশ। কারণ সেবারের আসরের আয়োজক ছিল বাংলাদেশ। যদিও এবারও বাংলাদেশ থাকে জয়হীন।
ভারত প্রথমবারের মতো এশিয়া কাপের আয়োজন করে ১৯৯০-৯১ সালে। তবে রাজনৈতিক বৈরিতার কারণে সেবারের আসরে অংশ নেয়নি পাকিস্তান। এ দুই দেশের মধ্যকার রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে অবশ্য ১৯৯৩ সালের এশিয়া কাপই মাঠে গড়ায়নি।
৪ বছর বাদে সংযুক্ত আরব আমিরাতে ফেরে এশিয়া কাপের আসর। আর এই আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েই টানা তৃতীয় বারের মতো এশিয়া কাপের শিরোপা ঘরে তোলে ভারত।
১৪ বছর বাদে, ২০০০ সালে আবারো এশিয়া কাপ আয়োজনের প্রস্তাব পায় বাংলাদেশ। আর এই আসরেই প্রথম বারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয় পাকিস্তান।
এর পরের আসর অর্থাৎ ২০০৪ এশিয়া কাপ ছিল আগের আসরগুলোর চেয়ে বেশ ভিন্ন। কারণ সেবারই প্রথম ৬ টি দল নিয়ে মাঠে গড়িয়েছিল মহাদেশীয় এ টুর্নামেন্ট। যেখানে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, ভারত, পাকিস্তান ছাড়া অংশ নিয়েছিল হংকং ও সংযুক্ত আরব আমিরাত।
আর সেবারই তিনটি ধাপে এশিয়া কাপের নিষ্পত্তি। প্রথমে ৬ টি দল দুই গ্রুপে বিভক্ত হয়ে, এরপর দুই গ্রুপ থেকে সেরা ৪ দল নিয়ে সুপার ফোর এবং সবশেষ ফাইনাল। ৬ দলের সেবারের এশিয়া কাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা।
ঐ আসরের পর ২০০৮ এশিয়া কাপও হয়েছিল ৬ দল নিয়ে। তবে পরবর্তী দুই আসর আবার হয়েছিল ৪ দল নিয়ে। এখন অবশ্য ৬ দল নিয়েই এশিয়া কাপ হয়। মাঝে ২০১৪ ও ২০১৬ এশিয়া কাপ হয়েছিল ৫ দল নিয়ে।
সাধারণত ৫০ ওভারের টুর্নামেন্ট হিসেবেই বিবেচিত হয় এশিয়া কাপ। তবে ২০১৬ ও ২০২২, এই দুই আসর হয়েছিল টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে। ২০১৬ সালের এশিয়া কাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ভারত। আর সর্বশেষ ২০২২ এ শিরোপা গিয়েছিল শ্রীলঙ্কার ঘরে।
তবে আগের বার ২০ ওভারের সংস্করণে হলেও এবারের এশিয়া কাপ হবে ওয়ানডে ফরম্যাটেই। ৬ দলের এবারের এশিয়া কাপে প্রথম বারের মতো অংশ নিবে নেপাল। সে হিসেবে নেপাল হবে এশিয়া কাপ খেলা ৮ম দেশ। অবশ্য নেপালকে বাছাইপর্বের গণ্ডি পেরিয়েই এশিয়া কাপের মূল মঞ্চে অংশ নিতে হয়েছে।
গত মে মাসে এশিয়া কাপ বাছাই টুর্নামেন্টের ফাইনালে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে ৭ উইকেটে হারিয়ে প্রথমবারের মতো মূল পর্বে জায়গা করে নেয় তারা। এশিয়া কাপের মূল পর্বে ভারত এবং পাকিস্তানের সঙ্গে গ্রুপ ‘এ’-তে খেলবে নেপাল। অন্য গ্রুপে বাংলাদেশের সঙ্গী আফগানিস্তান ও শ্রীলঙ্কা।