ভারতের বিশাল জয়ে কৃতীত্ব মাঠকর্মীদেরও

সুবিশাল ব্যবধানে ভারত পেয়েছে জয়। পাকিস্তানের বিপক্ষে নিজেদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংগ্রহটাই গড়েছিল ভারতীয় ব্যাটাররা। বিরাট ও রাহুলের সেঞ্চুরির পাশাপাশি শুভমান ও রোহিতের হাফ সেঞ্চুরির উপর ভর করে ৩৫৬ রান সংগ্রহ করে ভারত। এরপরের কাজটুকু ছিল ভারতীয় বোলারদের।

সেই কাজটা বেশ দারুণভাবেই করেছে ভারতীয় বোলাররা। বিশেষ করে কুলদ্বীপ যাদব। পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইনআপকে একাই গুড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। নিয়েছেন ৫টি উইকেট। এটি তার ক্যারিয়ারের তৃতীয় ফাইফার। বেশ প্রফুল্লিত যাদব। নিজের ছন্দটা বেশ উপভোগই করছেন তিনি।

ম্যাচ শেষ তিনি বলেন, ‘আগের থেকে ভাল ছন্দে রয়েছি। এই ধারাবাহিকতা বেশ উপভোগ করছি।’ দূর্দান্ত বোলিং করেছেন কুলদ্বীপ। পাকিস্তানের মিডল অর্ডার থেকে শুরু করে শেষ অবধি সব ক’টি উইকেটই বাগিয়েছেন কুলদ্বীপ। একটানা তিনিই উইকেট শিকার করে গেছেন। ইনজুরির কারণে পাকিস্তানের লেজের দিকের ব্যাটার হারিস রউফ ও নাসিম শাহ ব্যাট করতে নামেননি।

তবে নিজের ফাইফার নিয়ে খুব একটা ভাবছিলেন না কুলদ্বীপ। বরং তিনি নিজের লাইন আর লেন্থটা ঠিক রাখার চেষ্টা করে গেছেন। তিনি বলেন, ‘যখনই আমি চার উইকেট পাই, আমি পাঁচ নম্বর উইকেট তুলে নেওয়ার বিষয়ে ভাবি না। কারণ তখন আমি ভাল লেন্থে বল ফেলার কথা চিন্তা করি। যখনই আপনি পাঁচ উইকেট পান সেটা দারুণ বিষয়।’

নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসে ভারতের বিপক্ষে সবচেয়ে বড় ব্যবধানেই হেরেছে পাকিস্তান। বাবর আজম অবশ্য নিজেদের হারের পেছনে আবহাওয়ার কথাই উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, ‘আবহাওয়া আমাদের হাতে নয়। তবে ব্যাটিং ও বোলিং উভয়ক্ষেত্রেই খারাপ করেছি।’

ভারতের টপ অর্ডার পাকিস্তানের বোলারদের তুলোধুনো করেছেন। শুরুর চারজনই বড় রান করেছেন। এ নিয়ে বাবর বলেন, ‘তাদের (ওপেনারদের) আমাদের বোলারদের জন্যে পরিকল্পনা ছিল। এরপর রাহুল ও বিরাট সেটাই ফলো করেছে এবং দারুণভাবে নিজেদের ইনিংস শেষ করেছে।’

ভারতীয় ব্যাটারদের তাণ্ডবেই মূলত ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় পাকিস্তান। শাহীন শাহ আফ্রিদি, নাসিম শাহদের পাত্তাই দেয়নি ভারতীয় ব্যাটাররা। বিরাট, রাহুল ঝড়ে উড়ে যেতে হয়েছে পাকিস্তানকে। সেখান থেকে ম্যাচে আর ফেরত আসা হয়ে ওঠেনি বাবর আজমদের।

অন্যদিকে বিজয়ী অধিনায়ক রোহিত শর্মার কণ্ঠে ঝড়েছে কৃতজ্ঞতার সুর। তিনি ধন্যবাদ জানিয়েছেন কলম্বোর মাঠকর্মীদের। তিনি বলেন, ‘আমরা মাঠে নামতে চেয়েছি এবং খেলতে চেয়েছি। আমাদের মধ্যে অনেকেই গেম টাইম পায়নি। মাঠকর্মীদের ছাড়া এটা সম্ভবই হতো না। মাঠকর্মীদের অনেক ধন্যবাদ।’

সত্যিকার অর্থেই ভারত-পাকিস্তানের এই মাঠের লড়াইয়ের পেছন থেকে লড়াই চালিয়েছেন প্রেমাদাসার মাঠকর্মীরা। বারেবারে বৃষ্টি বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে এই ম্যাচের। রিজার্ভ ডে-তেও বৃষ্টি দিয়েছিল বাগড়া। মাঠকর্মীরা অক্লান্ত পরিশ্রম আর প্রবল চেষ্টায় মাঠ খেলার উপযুক্ত করেছেন।

ঠিক সে কারণেই বিরাট কোহলি উপহার দিয়েছেন আরও একটি দৃষ্টিনন্দন সেঞ্চুরির। এটি তার ক্যারিয়ারের সব ফরম্যাটে ৭৭ তম সেঞ্চুরি। তার আগ্রাসী ব্যাটিংই ভারতকে জয়ের পথটা দেখিয়েছিল। স্বাভাবিকভাবে তাই ম্যাচ সেরা পুরষ্কার পেয়েছেন বিরাট।

ম্যাচ সেরার পুরষ্কার হাতে নিয়ে বিরাট বলেন, ‘আমি সবসময় নিজেকে এমনভাবে প্রস্তুত করি যাতে দলকে সহয়তা করতে পারি। আমি আমার ফিটনেস নিয়ে গর্ব করি। দুই রানের জন্য নিজেকে পুশ করা বড় শট খেলার থেকে সহজ। আমি সেটার ফল পেয়েছি আগেও, আশা করি একইরকমভাবে এমনটা চলতে থাকবে।’

১২২ রানের ইনিংসে বিরাট বাউন্ডারির উপর খুব কমই ভরসা করেছেন। তিনি বরং এক-দুই রানের দিকেই জোর দিয়েছেন বেশি। যা নিঃসন্দেহে তার গোটা দলকেই অনুপ্রাণিত করে নিজেদের সেরাটা উজাড় করে দিতে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link