তানজিদ নিশ্চয়ই ‘বিশ্বকাপের তামিম’ হতে চাইবেন না…

বিশ্বজয়ের স্বাদ আগেই পেয়েছেন তিনি। এবার খেলবেন বড়দের বিশ্বকাপে। ২০২০ যুব বিশ্বকাপজয়ী বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তানজিদ হাসান তামিম। দেশকে বয়সভিত্তিক ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সাফল্য এনে দেওয়া এ তরুণ ক্রিকেটারের চোখ থাকছে এবার বড়দের বিশ্বকাপেও।

বাংলাদেশ ক্রিকেটে তামিম নামটার পরিচিতি সুবিস্তৃত। তর্কযোগ্যভাবে দেশসেরা ব্যাটার কিংবা ওপেনার- দুটোই জড়িয়ে আছে তামিম ইকবালের সাথে। তামিম ইকবালের মতো ওপেনিং পজিশনের খেলেন তানজিদ হাসান তামিম।

নাম বিভ্রাটে তাই তানজিদ হাসান তামিম নামটার স্বীকৃতি হয়ে উঠেছে ‘জুনিয়র তামিম’ পরিচয়ে। তবে এবারের বিশ্বকাপে অবশ্য সেই নাম বিভ্রাটে পড়তে হচ্ছে না জুনিয়র তামিমকে। ভারত বিশ্বকাপে খেলছেন একজন তামিমই। তিনি তানজিদ হাসান তামিম।

এ বছরেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা পড়েছে তানজিদ হাসান তামিমের। অভিষেকটা অবশ্য রঙিন হয়নি। এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে অভিষেকে শূন্য রানে ফিরেছিলেন এ ব্যাটার। এর পরে আরো ৩ ম্যাচে সুযোগ পেয়েছিলেন। তবে তাতেও নিজেকে চেনাতে ব্যর্থ হন এ বাঁ-হাতি ব্যাটার। তারপরও তামিম ইকবালের অনুপস্থিতিতে তাঁর উপরেই বিশ্বকাপে ভরসা রেখেছে টিম ম্যানেজমেন্ট।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অভিষেকে শূন্য রানে ফিরলেও ঘরোয়া ক্রিকেটেই সব অভিষেককেই আবার দুর্দান্ত ছিলেন তানজিদ হাসান তামিম। ২০১৯ সালে হয়ে হয়েছিলে লিস্ট এ ক্রিকেট অভিষেক।  ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে সেবার উত্তরা স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে খেলছিলেন ৬৪ রানের দুর্দান্ত একটি ইনিংস।

একই বছর ঢাকা লিগে স্বীকৃত টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে অভিষেক হয় তামিম। খেলাঘরের বিপক্ষে সেদিন নিজের অভিষেকটা রাঙিয়েছিলেন ৫৭ বলে ৭২ রানের ইনিংস খেলে। এরপর  প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটেও অভিষেকে হাফ সেঞ্চুরি করার এই ধারা অব্যাহত রেখেছিলেন তানজিদ।

২০২০ সালের বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগে (বিসিএল) তাঁর প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দক্ষিণাঞ্চলের বিপক্ষে সেই ম্যাচে পূর্বাঞ্চলের হয়ে ছয়ে নেমে তানজিদ খেলেছিলেন ৮৭ বলে ৮২ রানের ইনিংস।

আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের জন্য বয়সভিত্তিক ক্রিকেট থেকেই পরিচিত তানজিদের। সর্বশেষ ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে ব্রাদার্স ইউনিয়নের হয়ে ১১ ম্যাচে ২ সেঞ্চুরি ও ১টি ফিফটিসহ ৪৭৪ রান করেছিলেন এ বাঁ-হাতি ব্যাটার। জাতীয় দলের রাডারে আসেন এরপর থেকেই। মাঝে ইমার্জিং এশিয়া কাপে তাঁর পারফরম্যান্স তাঁকে আরো নজরে নিয়ে আসে। শ্রীলঙ্কায় হয়ে যাওয়া সে টুর্নামেন্টে ৪ ম্যাচে ১৭৯ রান করেছিলেন তানজিদ। যেখানে ১১৬ স্ট্রাইকরেটের পাশাপাশি ৩ টিতেই ফিফটি হাঁকিয়েছিলেন এ ব্যাটার।

এই টুর্নামেন্টের পরই জাতীয় দলে ডাক পান তানজিদ। তবে সেই ছন্দটা আর টেনে আনতে পারেননি আন্তর্জাতিক মঞ্চে। অবশ্য ছন্দে ফেরার সুযোগটা পাচ্ছেন সামনে। আসন্ন বিশ্বকাপ তানজিদের জন্য নিশ্চিতভাবেই পরীক্ষার এক মঞ্চ। একই সাথে, নিজেকে চেনানোর মঞ্চটাও হতে পারে এই বিশ্বকাপ।

২০০৭ বিশ্বকাপ দিয়ে নিজেকে আলোচনায় নিয়ে এসেছিলেন তামিম ইকবাল। তারুণ্য ফেলে আসা সেই তামিম আর এবারের বিশ্বকাপ দলে নেই। তবে তাঁর জায়গায় এসেছেন আরেক ‘তামিম’। ২০০৭ এর তামিম ইকবালের পুনরাবৃত্তি কি ঘটবে এবারের তানজিদ তামিমকে দিয়ে? সেটা অবশ্য সময়ই বলে দিবে। তবে তানজিদ তামিম নিশ্চয়ই বিশ্বকাপের তামিম ইকবালের মতো হতে চাইবেন না।

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link