তামিম, নিজের কথাটা মানতেই পারতেন

বাংলাদেশ দল যখন বিশ্বকাপের পরিকল্পনা নিয়ে ব্যস্ত, গণমাধ্যমে তখন সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল আর ম্যানেজম্যান্টের ত্রি মুখী বিতর্ক নিয়ে সরব। নেতিবাচক আলোচনার শেষটা অবশ্য হয়েছে তামিম ইকবালের না থাকা দিয়ে।

বিশ্বকাপ দলে জায়গা পাননি তামিম; না তাঁকে বাদ দেয়া হয়নি। বরং নিজেই সরে গিয়েছিলেন পনেরো জনের দল থেকে। কিন্তু কেন, সেই কারণ বের করতে গিয়ে জানা যায় তাঁকে নাকি কেউ একজন প্রস্তাব দিয়েছিল আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে নিচের দিকে ব্যাট করতে। পুরো ক্যারিয়ারে কখনো তিন নম্বরেও ব্যাট করতে থাকা একজনকে মিডল অর্ডারে খেলতে বলাটা অপমানজনক মনে হয়েছিল তাঁর কাছে।

সেজন্যই সাবেক অধিনায়ক নিজেকে বিশ্বকাপ দলে না রাখতে বলেছিলেন নির্বাচকদের। কিন্তু বিপত্তি বেঁধেছে তামিমের অধিনায়কত্বের কথা ভাবতে গিয়ে; নিজে নেতৃত্ব দেয়ার সময় অকপটেই তিনি স্বীকার করেছিলেন সবার সব পজিশনে খেলতে প্রস্তুত থাকা উচিত।

এমনকি ওপেনারদের চাইলে পাঁচ নম্বরেও খেলানো যায় এমন মন্তব্য পুরনো এক সাক্ষাৎকারে করেছিলেন চট্টগ্রামের খান। যদি মনে হয় কোন নির্দিষ্ট ক্রিকেটার নিজের স্বাভাবিক গন্ডির বাইরে গিয়েও পারফর্ম করতে পারবে তবে তাঁকে সুযোগ দেয়ার পক্ষে ছিলেন তিনি।

তিনি বলেছিলেন যে, ‘আমার মাথায় এমন এমন জিনিস ঘুরে যেগুলো শুনলে বা দেখলে আপনারা হাসবেন। কথার কথা, নাম্বার ফাইভ পজিশনে যদি আমরা সন্তোষজনক পারফরম্যান্স না পেয়ে থাকি বা ঘরোয়াতে ব্যাকআপ কেউ না থাকে – সেক্ষেত্রে নাম্বার তিন বা ওপেনিংয়ে খেলা কাউকে আমরা সুযোগ দিতে পারি ওখানে।’

ক্রিকেট দর্শনের কথা চিন্তা করলে তামিম ইকবালের এমন ভাবনাকে অযৌক্তিক বলার সুযোগ নেই। কিন্তু যখন একই বাস্তবতার মুখোমুখি হলেন তিনি নিজেই তখন কেন উল্টে গেলেন, অভিমান করলেন।

হ্যাঁ হয়তো, সরাসরি বোর্ড থেকে না জানিয়ে কোচ বা ক্যাপ্টেন জানালে তিনি অন্য প্রতিক্রিয়া দেখাতেন কিন্তু খুব সম্ভবত মনোভাব একই থাকত। পনের বছর ওপেনিং করে কিভাবে মিডল অর্ডারে খেলব – এই পরিবর্তনটুকু মানার সাহস ছিল না তামিমের। একটা ম্যাচের জন্য এতটুকু ছাড় দিলে ক্যারিয়ারের শেষ বৈশ্বিক আসরটা খেলতে পারতেন তিনি।

পিঠের ইনজুরির কারণে তামিম ইকবাল পুরোপুরি ফিট না থাকায়, তাঁর বিশ্বকাপের সব ম্যাচ খেলা নিয়ে আগে থেকেই সংশয় ছিল। আর সেটা আরো নিশ্চিত হওয়া যায় যখন শোনা যায় এই বাঁ-হাতি নাকি শুধু পাঁচ ম্যাচ খেলবেন এই টুর্নামেন্টে। যদিও পরে জানা গিয়েছে এমন কোন কথা হয়নি ড্রেসিংরুমে।

শেষ পর্যন্ত যদিও বিশ্বকাপ স্কোয়াডে জায়গা পাননি তিনি – আর সেটার পিছনের কারণ খুঁজতে গেলে দায় পাওয়া যাবে সাকিব, তামিম, বোর্ড – তিন পক্ষেরই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link