ওমরজাই-শহিদীর জুটিতেই আফগানরা পেয়েছে লড়াইয়ের পুঁজি

কুলদ্বীপ যাদব কিছুটা অবিশ্বাস্য চোখেই তাকিয়ে রইলেন। বিগত বছর গুলোতে যার স্পিন রহস্য ভেদ করতে গিয়ে বাঘা বাঘা ব্যাটারদের নাভিশ্বাস উঠে গিয়েছে, সেখানে আজমতউল্লাহ ওমরজাই নামের তরুণ এক আফগান ছক্কা মারছেন আয়েশি ভঙ্গিতে। তাও আবার এ দৃশ্যপটের মঞ্চায়ন পুরোদস্তুর ব্যাটারের বিপরীতে নয়। পেস বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবে পরিচিতি আজমতউল্লাহ ওমরজাই-এর।

ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো পাঁচ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমেছিলেন এই ম্যাচ দিয়েই। আফগানিস্তান টিম ম্যানেজমেন্টের সে আস্থার প্রতিদান ঠিকঠাকভাবেই দিয়েছেন ওমরজাই। ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় বারের মতো ছুঁয়েছেন অর্ধশতক। তবে এ ইনিংস দিয়ে ছাপিয়ে গিয়েছেন আগের ক্যারিয়ার সেরা ৫৬ রানের ইনিংসকেও।

দিল্লীর অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে এ দিন চারের চেয়ে ছক্কা মারাতেই পারদর্শিতা দেখিয়েছেন ওমরজাই। ২ চারের পাশাপাশি খেলেছেন ৪ টি ছক্কা। আর তাতেই ৬৯ বলে ৬২ রানের ইনিংস খেলেছেন আফগান এ অলরাউন্ডার। তাতেই ৬৩ রানে ৩ উইকেট হারানো আফগানিস্তানকে লড়াকু এক সংগ্রহের ভিত্তি গড়ে দেন তিনি।

 

ওমরজাইয়ের এমন আগ্রাসী ইনিংসে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছিলেন আফগানিস্তানের হাশমতউল্লাহ শহিদী। শুরুতেই টপ অর্ডারদের হারিয়ে আফগানিস্তান যখন ব্যাকফুটে, তখন দলকে এগিয়ে দেয় ওমরজাই-শহিদী জুটি। তাদের ১২১ রানের জুটিতেই একটা সময় পর্যন্ত বড় সংগ্রহের পথে এগিয়ে যাচ্ছিল আফগানিস্তান।

ভারতের বিপক্ষে চতুর্থ উইকেটে ১২১ রানের জুটিতে একটা রেকর্ডেও নাম লিখিয়েছে ওমরজাই-শহিদী জুটি। এর আগে ২০১৫ বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে চতুর্থ উইকেটে ৯৩ রানের জুটি গড়েছিলেন ব্রেন্ডন টেইলর-শন উইলিয়ামস। এতদিন পর্যন্ত ভারতের বিপক্ষে চতুর্থ উইকেটে গড়া সর্বোচ্চ রানের জুটির রেকর্ড ছিল। ২০২৩ বিশ্বকাপে এসে এবার সেই রেকর্ডই ভেঙে দিল ওমরজাই-শহিদী জুটি।

দলীয় ১৮৪ রানে ওমরজাই আউট হয়ে ফিরে গেলে ভারতের বিপক্ষে ১২১ রানের রেকর্ড গড়া জুটি ভেঙে যায়। এরপর এক প্রান্ত ধরে রেখে হাশমতউল্লাহ শহিদী ঠিকই এগিয়ে যাচ্ছিলেন। ব্যক্তিগত অর্ধশতকের পর হেঁটেছিলেন সেঞ্চুরির পথেও। তবে ৮৮ বলে ব্যক্তিগত ৮০ রানে থামেন তিনি। অবশ্য ততক্ষণে আফগানিস্তান লড়াই করার মতো সংগ্রহের একটা ভিত্তি পেয়ে যায়।

 

নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে স্কোরবোর্ডে ২৭২ রান জমা করে আফগানিস্তান। যা বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহের রেকর্ড। আর আফগানিস্তানকে এমন সংগ্রহে পৌঁছে দেওয়ার নেপথ্যে ছিল হাশমতউল্লাহ শহিদী-আউমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের গড়া সেই জুটি।

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link