আরো একবার শক্তিশালী প্রতিপক্ষ, আরো একবার ব্যাটিং বিপর্যয়, সবশেষে একতরফা পরাজয় – ঘুরে ফিরে একই চিত্রনাট্য দেখতে হলো বাংলাদেশকে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হারের পর ঘুরে দাঁড়ানোর মিশনে নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হলেও তেমন কোন প্রতিদ্বন্দ্বিতাই করতে পারেনি টাইগাররা, হেরেছে আট উইকেটের বিশাল ব্যবধানে।
আগের দুই ম্যাচে পরে ব্যাট করার পর এবার আগো ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। এতে অবশ্য ভাগ্য বদলায়নি, বরাবরের মতই টপ অর্ডার ফিরে গিয়েছে শুরুতে – প্রথম বলেই অহেতুক ফ্লিক খেলতে গিয়েছে আউট হন লিটন দাস।
তিন নম্বরে নামা মেহেদি হাসান মিরাজ চেষ্টা করেছেন তানজিদ তামিমকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়তে, কিন্তু সেটাও স্থায়ী হয়নি বেশিক্ষণ। পাওয়ার প্লের মধ্যে দুই ওপেনারকে হারালেও সমর্থকদের ভরসা হয়ে ক্রিজে ছিলেন মিরাজ, শান্ত। কিন্তু দলীয় ৫৬ রানের মাথা দুজনে আউট হলে আবারো চাপে পড়ে যায় টিম টাইগার্স।
তবে ত্রাতা হিসেবে আবির্ভূত হন দুই অভিজ্ঞ সাকিব আল হাসান এবং মুশফিকুর রহিম। দুজনের সময়োপযোগী ব্যাটিংয়ে ট্র্যাকে ফেরে বাংলাদেশ। কিন্তু ৪০ রানে সাকিব আউট হলে ভাঙ্গে ৯৬ রানের জুটি, সেই সাথে বড় সংগ্রহের স্বপ্নও মুখ থুবড়ে পড়ে।
যদিও মুশফিক চেষ্টা করেছেন একাই, পূর্ণ করেছিলেন ব্যক্তিগত ফিফটি। তবে তাঁর ৬৬ রান যথেষ্ট ছিল না দলকে চ্যালেঞ্জিং পুজি এনে দিতে, শেষ দিকে মাহমুদউল্লাহর ৪১ রানে ভর করে বোর্ডে ২৪৫ রান জমা করে বাংলাদেশ।
মাঝারি মানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে শুরুতেই বাংলাদেশের পেসারদের তোপের মুখে পড়ে কিউই ওপেনাররা। দুর্দান্ত বোলিংয়ে রচীন রবীন্দ্রকে তুলে নেন মুস্তাফিজুর রহমান – আরেক ওপেনার কনওয়ে আর দীর্ঘ বিরতি কাটিয়ে ফেরা উইলিয়ামসনেরও অগ্নিপরীক্ষা নেন ফিজ এবং শরিফুল।
দুই ব্যাটারই রয়ে-সয়ে খেলেছেন প্রায় পুরো পাওয়ার প্লে, কিন্তু এরপরই বাংলাদেশের ওপর চেপে বসেছেন তাঁরা। দুজনের ৮০ রানের জুটিতে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণও নিয়ে নেয় নিউজিল্যান্ড; দলীয় ৯২ রানের মাথায় বাঁ-হাতি ব্ল্যাকক্যাপস তারকাকে আউট করে খানিকটা আশা দেখিয়েছিলেন সাকিব, যদিও সেটা ছিল না বেশিক্ষণ।
ড্যারি মিচেলকে সঙ্গে নিয়ে বাকি পথ বেশ স্বাচ্ছন্দ্যেই ফেরিয়ে যান কিউই অধিনায়ক। মাঝে ইনজুরি বাগড়া না দিলে হয়তো নিজেই জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারতেন। শেষমেশ অবশ্য আট উইকেটের জয়ই পেয়েছে নিউজিল্যান্ড, আর এই জয়ে বিশ্বকাপে টানা তিন ম্যাচে জিতে টেবিলের শীর্ষে উঠে এলো তাঁরা।