কি ঝড়টাই না হলো বেঙ্গালুরুতে; না প্রাকৃতিক কোন দুর্যোগ নয়, মানুষের সৃষ্টি এক ঝড়ো তান্ডব বয়ে গিয়েছে। আর সেই মানুষরা হলেন ডেভিড ওয়ার্নার এবং মিচেল মার্শ। তাঁদের অতিমানবীয় ব্যাটিংয়ে ঝড়ে উড়ে গিয়েছে পাকিস্তানের বোলিং লাইনআপ।
তবে এই ঝড়ের মধ্যেও একটা প্রতিরোধ গড়েছেন, ডালপালা মেলে ছড়িয়ে থাকা বটগাছের মত দলকে আশ্রয় দিয়েছেন খানিকটা। তিনি শাহীন শাহ আফ্রিদি, সতীর্থদের ব্যর্থতার মাঝেও উজ্জ্বল ছিলেন নিজে। পারফর্ম করেছেন সব প্রতিকূলতাকে ডিঙিয়ে।
এদিন ১০ ওভার হাত ঘুরিয়ে এই পেসার খরচ করেছেন মাত্র ৫৪ রান। সেই সাথে উইকেট শিকার করেছেন পাঁচটি। যেখানে অস্ট্রেলিয়া প্রতি ওভারে গড়ে রান তুলেছে ৭.৩৪ করে, সেখানে তিনি ওভারপ্রতি খরচ করেছেন মাত্র ৫.৪ রান। তাঁর কারণেই একটা সময় ৪৫০ করার দৌড়ে থাকা অজিরা থেমেছে ৩৬৭ রানেই।
৩৪তম ওভারে মিচেল মার্শকে আউট করে ওপেনারদের ম্যারাথন জুটি ভেঙেছিলেন এই তারকা। পরের বলেই আবার বিধ্বংসী গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে প্যাভিলিয়নে ফেরার পথ দেখান তিনি – এতেই রান তোলার গতি কমে আসে ব্যাটারদের।
এছাড়া ডেথ ওভারে মার্কাস স্টয়নিসকে এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলেন শাহীন। আর শেষ ওভারে এসে পরপর দুই বলে স্টার্ক এবং হ্যাজলউডকে আউট করে পূর্ণ করেন ফাইফার। অবশ্য ওয়ার্নারকে ম্যাচের পঞ্চম ওভারেই ক্যাচ দিতে বাধ্য করেছিলেন এই ফাস্ট বোলার; কিন্তু সহজ ক্যাচ লুফে নিতে ব্যর্থ হন উসামা মীর, যার খেসারত দিতে হয়েছে পুরো দলকে।
এসবের পাশাপাশি নতুন এক রেকর্ডও গড়েছেন এই তরুণ। দ্বিতীয়বারের মত বৈশ্বিক আসরে পেয়েছেন পাঁচ উইকেটের স্বাদ, এর আগে গত বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সাথে ৩৫ রানে ছয় উইকেট শিকার করেছিলেন তিনি।
এত দিন বিশ্বকাপে পাকিস্তানের একমাত্র বোলার হিসেবে দুইবার ৫ উইকেট ছিল শহীদ আফ্রিদির। এবার তাই নিজের শ্বশুরের সাথে একই আসনে বসতে যাচ্ছেন এই বাঁ-হাতি পেসার।
গত তিন ম্যাচ ধরেই কিছুটা ছন্দহীন মনে হচ্ছিলো তাঁকে। পারফরম্যান্সে ছিল না আগেই সেই ধার, ফলে সমালোচনাও শুনতে হয়েছে। কিন্তু সব সমালোচনাকে ভুল প্রমাণ করেই তিনি ঘুরে দাঁড়িয়েছেন – আর ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য এমন একটা দিন বেছে নিয়েছেন যেদিন এই তরুণকেই সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ছিল দলের।