ইনজুরিগ্রস্থ এশিয়া কাপ!

বেশ অলুক্ষণে এবারের এশিয়া কাপ। সাধারণ দর্শক হিসেবে নিশ্চয়ই এই কথা ভেবেছেন অনেকেই। না ভাববার তো কোন উপায় নেই। ইনজুরি, অসুস্থতা যেন ঘিরে ধরেছে এবারের এশিয়া কাপকে। প্রায় প্রতিটা দলেই রয়েছে এই সমস্যা। সবচেয়ে বেশি বিপাকে তো স্বাগতিক দেশ শ্রীলঙ্কা।

সবার শেষে তারা ঘোষণা করেছে এবারের এশিয়া কাপের স্কোয়াড। এত দেরি করার পেছনেও লঙ্কানদের রয়েছে যৌক্তিক কারণ। দলের গুরুত্বপূর্ণ তিন সদস্যকে পাচ্ছে না তারা। তাদেরকে ছাড়াই এশিয়া জয়ের মিশনে নামতে হচ্ছে ৬বারের চ্যাম্পিয়নদের।

দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গাকে থাকতে হচ্ছে মাঠের বাইরে। উরুতে চোট পেয়েছেন এই লেগ স্পিন অলরাউন্ডার। এছাড়াও দলের পেস আক্রমণের যেন একেবারে ভঙ্গুর অবস্থা। দুশমন্ত চামিরা, লাহিরু কুমারার মত বোলারদের স্কোয়াডে জায়গা হচ্ছে না। কারণ সেই ইনজুরি। এমনকি দিলশান মাদুশঙ্কাও ইনজুরি আক্রান্ত।

দারুণ বিপাকে তাই শ্রীলঙ্কা দল। একই দশা বাংলাদেশেরও। প্রথমত ইনজুরি থেকে ফিরতে পারেননি এবাদত হোসেন। তাকে ছাড়াই দল উড়াল দিয়েছে দ্বীপদেশে। এমনকি এশিয়া কাপ শেষ লিটন দাসের। তিনি আক্রান্ত হয়েছেন জ্বরে। অন্যদিকে তার বদলি হিসেবে সাইফ হাসানকে পাঠাতে চেয়েছিল বিসিবি। কিন্তু তিনিও ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত। শেষ অবধি বাধ্য হয়ে পাঠানো হয়েছে এনামুল হক বিজয়কে।

এছাড়া দলের অভিজ্ঞ ব্যাটার তামিম ইকবালকেও পাচ্ছে না টাইগাররা। তিনিও ইনজুরির কারণে খেলছেন না এবারের এশিয়া কাপ। এই ইনজুরির ভয়াল থাবা থেকে মুক্তি পায়নি শক্তিশালী ভারতও। সাতবারের চ্যাম্পিয়নদের হয়ে গ্রুপ পর্বে মাঠে নামা হচ্ছে না লোকেশ রাহুলের। ভারতের ন্যাশনাল ক্রিকেট একাডেমিতে ইনজুরিমুক্ত হওয়ার জন্যে পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে গেছেন রাহুল।

তবে পুরোপুরি সেরে উঠতে তার আরও কিছুদিন সময় লাগবে। তাছাড়া তাদের দলে শ্রেয়াস আইয়ারও পুরোপুরি ফিট নয় বলেই শোনা যাচ্ছে। মহাদেশীয় এই লড়াইয়ের আগে এমন ইনজুরি আর অসুস্থতা জেঁকে ধরেছে এশিয়ার খেলোয়াড়দের। খানিকটা অপয়া কি বলাই যায় এবারের এশিয়া কাপকে?

হয়ত। কেননা বেশ জলঘোলা আর কালক্ষেপণ হয়েছে এবারের এশিয়া কাপ নিয়ে। পাকিস্তান, ভারতের দ্বন্দ এক পর্যায়ে প্রচণ্ড তিক্ততার দিকে অগ্রসর হয়েছিল। তবে অবশেষে হাইব্রিড পদ্ধতিতেই মাঠে গড়াচ্ছে এশিয়া কাপের ১৬তম আসর।

তাছাড়া সামনেই বিশ্বকাপের মত বিশাল বড় ইভেন্ট। সেই আয়োজনের দিকে স্বাভাবিকভাবেই লক্ষ্য থাকছে সব দলের। এশিয়াতেই হচ্ছে এবারের বিশ্বকাপ। ঠিক সে কারণেই এশিয়ার কোন দলের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সম্ভবনা অত্যন্ত প্রবল। সেদিক থেকে দলের একটা জমাট কম্বিনেশন খুঁজে পাওয়া প্রয়োজন দলগুলোর। কিন্তু এমন ইনজুরি সে পথে দিচ্ছে বাঁধা।

তাছাড়া দলগুলো নিজেদের পূর্ণ শক্তি নিয়েও এশিয়া কাপের লড়াইয়ে নামতে পারছে না। সেদিক থেকেও পরিকল্পনায় ব্যঘাত ঘটছে। তবে এসবই ক্রিকেটের অংশ। এসবকে পেছনে ফেলেই আসলে দলগুলোকে এগিয়ে যেতে হবে। অর্জন করতে হবে নিজেদের লক্ষ্য। সেদিকই থাকছে সবার নজর। এখন মাঠের লড়াইয়ের অপেক্ষা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link